যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের অধ্যাপক ভাস্কর গুপ্তকে মনোনীত করলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। সোমবার সন্ধ্যায় ভাস্কর দায়িত্ব নিয়েছেন। রাজ্যের তালিকা মেনে ভাস্করকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য করায় রাজ্যপাল তথা আচার্যকে অভিনন্দন জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বিগত দিনে রাজ্য-রাজ্যপাল বিরোধকে তুঙ্গে উঠতে দেখেছে শিক্ষামহল। ব্রাত্যর সঙ্গে রাজভবনের যে তিক্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে তার সাক্ষী থেকেছে রাজ্য। এই আবহে সোমবার সেই বিরোধ কিছুটা প্রশমিত হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত বছর যাদবপুরের গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউকে একক সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী উপাচার্যের চেয়ারে বসিয়েও ডিসেম্বরে সমাবর্তনের আগের রাতে অপসারণ করেন রাজ্যপাল। সেই থেকে ওই পদটি ফাঁকা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শূন্য থাকা উপাচার্য পদগুলি পূরণের লক্ষ্যে গত শনিবার রাজ্য সরকারের তালিকায় থাকা শিক্ষাবিদদের রাজভবনে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে ভাস্কর ছিলেন। রাজভবন সূত্রের খবর, তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিতে ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। সোমবার বিকেলে ভাস্করকে রাজভবনে আবার ডাকা হয়। সেখানেই রাজ্যপাল যাদবপুরের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে তাঁর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। রাজ্যপালের নির্দেশে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভাস্কর ১৯৮১ সালের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তাঁর কাজ চালিয়ে যাবেন। প্রসঙ্গত, তৃণমূল সরকার আসার পরে ভাস্কর রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন।
রাজ্যের সুপারিশের তালিকা থেকে ভাস্করকে বেছে নেওয়ায় এ দিন ব্রাত্য এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘যাদবপুরের উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ভাস্কর গুপ্তের নাম মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে উচ্চশিক্ষা দফতরই সুপারিশ করেছিল। আশা করা যায়, আচার্য অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও রাজ্য সরকারের সুপারিশমাফিক উপাচার্যদের নিয়োগ করবেন। সুবুদ্ধির উদয়ের জন্য আমি মাননীয় আচার্যকে অভিনন্দন জানাই।’’ শিক্ষামন্ত্রী ভাস্করকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
উপাচার্য পদ খালি থাকা রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তবর্তী উপাচার্য নিয়োগের লক্ষ্যে রাজভবনের তরফ থেকে দ্বিতীয় দফায় এদিন পাঁচ জন শিক্ষাবিদকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সূত্রের খবর, তাঁদের মধ্যে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মানস স্যানাল, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পবিত্র চট্টোপাধ্যায়, যাদবপুরের অধ্যাপক রূপকুমার বর্মণ এ দিন রাজভবনে যান। শনিবারের মতো এ দিনও রাজ্যপাল নিজে শিক্ষাবিদদের সঙ্গে দেখা করেননি, কথাও বলেননি। রাজ্যপালের অধীনস্থ এক আধিকারিক তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির খালি থাকা অন্তবর্তী উপাচার্য পদে যোগ দিতে ওই শিক্ষাবিদেরা সায় দিয়েছেন বলে খবর।