নন্দীগ্রামে গোপন করার মতো কী আছে, জানতে চান রাজ্যপাল

হেলিকপ্টার না মেলায় বাধ্য হয়েই সড়কপথে কলকাতা থেকে ৩০০ কিমি দূরে ফারাক্কা যাবার পথে বর্ধমান সার্কিট হাউসে সাময়িক বিশ্রাম নিয়ে গেলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।

বর্ধমান থেকে ফারাক্কা রওনা হওয়ার আগে বর্ধমানে সাংবাদিকদের সঙ্গে খোলামেলা কথায় রাজ্য সরকারের আচরণ নিয়ে যে তিনি খুবই অসন্তুষ্ট তাও অকপটে প্রকাশ করে গেলেন।

জানিয়ে গেলেন, তিনি সংবিধানের উর্ধে নন। সংবিধানকে হাতে নিয়েই তিনি কাজ করছেন। যেদিন সংবিধানের বাইরে কাজ করবেন সেইদিনই তিনি অনৈতিক কাজ করবেন। এখনও পর্যন্ত তিনি সংবিধানকে হাতের মুঠোয় নিয়েই কাজ করছেন।

রাজ্যপাল এদিন বলেন, আপনাদের রাজ্যপাল ট্যুরিস্ট নয়, আমি অধিকারের বাইরে গিয়ে কোনও কাজ করিনি। এমনকি এব্যাপারে রাজ্য সরকার এরকম কোনও চিঠি দেয়নি। দিলে তিনি উত্তর দেবেন।

এদিন রাজ্যপাল বলেন, সিঙ্গুরে তিনি হঠাৎ করে যাননি। আর পাঁচটা জায়গার মতো প্রশাসনকে জানিয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে যেতেই যেন বিশাল আলোড়ন তৈরি হয়ে গেল। সিঙ্গুর নন্দীগ্রামে গোপন করার মতো কী আছে তা তিনি জানতে চান।

শুক্রবার তাঁর ফারাক্কা কর্মসূচিতে যাবার আগে রাজ্য সরকারের কাছে হেলিকপ্টারের জন্য নিয়ম মেনেই আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকার হেলিকপ্টার দেননি। বাধ্য হয়েই তাই সড়কপথেই এদিন ফারাক্কা রওনা দেন।

হেলিকপ্টার না মেলায় ক্ষোভপ্রকাশ করে তিনি বলেন, তিনি নিয়ম মেনেই সরকারের কাছে হেলিকপ্টারের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাঁর আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। এরপরেই তিনি বলেন, তিনি তাঁর কথা রাখতে জানেন। তাই তিনি তাঁর কথা রাখতে প্রয়োজনে রাত্রি ৩টেতেও রওনা হতে জানেন। তাতে তাঁর কোনো অসুবিধা নেই।

গোটা রাজ্য জুড়ে বিশ্ববিদ্যায়গুলি নিয়ে চলতে থাকা ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এদিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালের কিছু অধিকার আছে। রাজ্য সরকারের অধিকার তার চেয়েও কম। এখানে শিক্ষার পরিবেশ আরও ভালো হওয়া উচিত। শিক্ষা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দু-আড়াই বছর নির্বাচন হয়নি। অধিকার আদায়ে অধ্যাপকদের রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের মার খেতে হচ্ছে এসব ঠিক নয়।

সম্প্রতি জেএনইউতে বিবেকানন্দের মূর্তিতে কিছু লেখা নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোথাও কোনও পরিস্থিতিতেই রাষ্ট্রের সম্মানীয় ব্যক্তিদের অপমান কাম্য নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.