খারিজ রাজ্যের আপত্তি, রামনবমীতে শ্রীরামপুরে মিছিল করা যাবে, শর্ত দিয়ে জানিয়ে দিল হাই কোর্ট

রামনবমীর দিন শর্তসাপেক্ষে হুগলির শ্রীরামপুরে মিছিলের অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। লোকসভা ভোটের আবহে অশান্তির আশঙ্কায় মিছিলে আপত্তি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু শুক্রবার রাজ্যের আপত্তি খারিজ করে মিছিল করার অনুমতি দেয় হাই কোর্ট। তবে, প্রস্তাবিত মিছিলে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা কমানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি, ১৪ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বাসন্তী পুজো উপলক্ষে শোভাযাত্রার অনুমতিও দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।

গত বছর রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল রাজ্যের কয়েকটি জায়গা। শ্রীরামপুরে জিটি রোড যার অন্যতম। সেই গোলমালের ঘটনার তদন্ত করছে এনআইএ। গোলমালের আশঙ্কায় এ বার একই জায়গায় মিছিলের অনুমতি দেয়নি রাজ্য। পুলিশের আশঙ্কা ছিল, ৩৫ হাজার মানুষ নিয়ে মিছিল করলে বড় গোলমাল হতে পারে। ওই মিছিলের যাত্রাপথের কিছুটা অংশ স্পর্শকাতর এলাকা। ফলে, মিছিল নিয়ে ঝুঁকি নিতে চায়নি প্রশাসন। রাজ্যের সেই আপত্তি খারিজ হয়ে গেল হাই কোর্টে। রুট বদলের প্রস্তাবও বাতিল হয়ে গেল। শুক্রবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, শ্রীরামপুরে জিটি রোডের উপর দিয়ে ৭০০ মিটার এলাকা দিয়ে রামনবমীতে মিছিল করা যাবে। তবে, সঙ্গেই রয়েছে একাধিক শর্তও। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, ১৩টি মিছিলে ২০০ জন করে সর্বাধিক থাকতে পারবেন। আদালতের বক্তব্য, মিছিলে লোকসংখ্যা কম করার নির্দেশ দিলে রুট বদলের প্রস্তাব মানা হবে না। আদালত মনে করে, হাজার পাঁচেক লোকের মিছিল সামাল দেওয়ার মতো দক্ষতা পুলিশের আছে। রাজ্য প্রয়োজন মনে করলে কেন্দ্রীয় বাহিনীরও সহায়তা নিতে পারবে বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি। প্রসঙ্গত, গত বছর মিছিলে ইট ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনা নিয়ে তিনটি এফআইআর রুজু করে পুলিশ। সেই মামলারই তদন্ত করছে এনআইএ।

অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাসন্তী পুজো উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল শোভাযাত্রা বার করার আবেদন করেছিল ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ। গোলমালের আশঙ্কায় সেই আবেদনও নাকচ করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ। সঙ্ঘের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চ তাদের মিছিল করার অনুমতি দিয়েছে। পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছে যে, কোনও ঘটনা ঘটার আশঙ্কা আছে, শুধু এই যুক্তিতে প্রতিদিনের কাজকর্ম কি আমরা বন্ধ করে বসে থাকব? বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘গত বিশ বছর ধরে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ বাসন্তী পুজো উপলক্ষে এই শোভাযাত্রা করে। সেখানে তাদেরই স্কুলের পড়ুয়ারা হাঁটবে। সেখানে মিছিলে আপত্তির কারণ কতটা যুক্তিযুক্ত?’’ বিচারপতি জানিয়েছেন, রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এ বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করুক। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সহায়তা নিয়ে এই শোভাযাত্রা করতে দিতে হবে। তবে, সে ক্ষেত্রে মিছিলে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা পাঁচ হাজার থেকে কমিয়ে তিন হাজার করতে হবে বলেও আদালত জানিয়ে দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.