বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণকাণ্ডের দুই অভিযুক্ত ছিলেন খাস কলকাতার হোটেলেই! বলেছিলেন, চেন্নাই যাবেন

বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণকাণ্ডের দুই অভিযুক্তকে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে গ্রেফতার করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। এ বার তাঁদের কলকাতা-যোগও প্রকাশ্যে এল। জানা গিয়েছে, কলকাতার লেনিন সরণির একটি হোটেলে ছিলেন ওই দু’জন। তবে এক রাতের জন্যই। নিজেদের ভুয়ো নাম পরিচয় লিখেছিলেন হোটেলের রেজিস্টারে।

লেননি সরণির খানিক ভাঙাচোরা, পুরনো দিনের হোটেলটিতে সিসি ক্যামেরা থাকলেও তা দীর্ঘ দিন ধরেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে রয়েছে। তদন্তের সূত্রে পুলিশ কয়েক বার ওই হোটেলেও গিয়েছিল। খতিয়ে দেখা হয়েছিল রেজিস্টার খাতা। কিন্তু ওই দু’জনের হোটেলে রাত্রিবাস করার বিষয়টি সুনিশ্চিত করে হোটেলের ওয়েবক্যামে ওঠা দু’টি ছবি। সেই ছবিই এখন তাঁদের কলকাতা-যোগের অকাট্য প্রমাণ।

হোটেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, গত ১৩ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ সেখানে গিয়েছিলেন বিস্ফোরণকাণ্ডের দুই অভিযুক্ত। রেজিস্টার বলছে বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে নাম নথিভুক্ত করান তাঁরা। তাঁদের জন্য বরাদ্দ হয় ৮ নম্বর ঘরটি। হোটেলে নিজেদের পর্যটক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন দু’জন। জানিয়েছিলেন দার্জিলিং থেকে আসছেন তাঁরা। আরও জানিয়েছিলেন তাঁদের পরবর্তী গন্তব্য চেন্নাই। ওই দিন রাতটা হোটেলে থেকে ১৪ মার্চ সকালেই সেখান থেকে বেরিয়ে যান তাঁরা। এক দিনের ভাড়া হিসাবে ৭৫০ টাকা হোটেলের রিসেপশনে জমা দেন। হোটেলের কর্মীরা জানিয়েছেন, বিকেলে নিজেদের ঘরে ঢুকে আর তাঁরা বেরোননি। তবে রাতে এক বার খেতে বেরিয়েছিলেন দু’জনে।

এই দুই অভিযুক্তের নাম মুসাভির হুসেন শাজ়িব এবং আবদুল মাঠিন আহমেদ। বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁরা এই রাজ্যে আত্মগোপন করেছিলেন বলে এনআইএ সূ্ত্রে খবর। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে জানানো হয়, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই দুই চক্রীকে। এনআইএর সঙ্গে ছিল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের একটি দলও।

এই ঘটনায় জড়িত মূল অভিযুক্ত মুজ়াম্মিল শরিফকে ঘটনার ২৭ দিন পর পুলিশ গ্রেফতার করলেও আরও দুই অভিযুক্তের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। এনআইএ তাঁদের খোঁজ পেতে আর্থিক পুরস্কারের কথাও ঘোষণা করেছিল। বিজ্ঞপ্তি জারি করে তারা জানিয়েছিল, দুই সন্দেহভাজনের বিষয়ে পুলিশকে হদিস দিতে পারলেই মিলবে ২০ লক্ষ টাকার পুরস্কার। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের ঘটনার পরে দুই সন্দেহভাজন পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন। সেখানেই লুকিয়ে ছিলেন তাঁরা। এনআইএর একটি দল অবশেষে তাঁদের গোপন আস্তানার খবর পেয়ে সেখানে হানা দেয়। তার পর শুক্রবার সকালে গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.