রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাস এবং তাঁর বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় সংস্থার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চার্জশিট ইডি জমা দিল। সেখানে ইডি দাবি করেছে, ২০১৪-১৫ সালে রেশন দুর্নীতির ৩৫০ কোটি টাকা দুবাইয়ে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ হয়ে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাচারের অভিযোগও করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাদের আরও দাবি, এই মামলায় ১০কোটি টাকা মূল্যের ১১ টি সম্পত্তি ‘অ্যাটাচড’ হয়েছে।
কলকাতায় বিশেষ ইডি আদালতে শুক্রবার তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। ব্যবসায়ী বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে সেখানে একের পর এক অভিযোগ এনেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশ হয়ে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাচার করেছেন বিশ্বজিৎ। এর আগে যদিও তাঁর আইনজীবী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী আমদানি-রফতানির ব্যবসায় বাংলাদেশের টাকা আরব আমিরশাহি হয়ে দেশে আসে। তিনি কোনও বেআইনি কাজ করেননি।
২০০০ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের কর্মচারী ছিলেন বিশ্বজিৎ। তার পর কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। সল্টলেক থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। তারা দাবি করেছিল, রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (বালু)-এর টাকা শঙ্করকে পৌঁছে দিতেন বিশ্বজিৎ। শঙ্করের কাছে বালুর যে টাকা পৌঁছত, তা হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রায় বদলে ফেলা হত। পাচার করে দেওয়া হত দুবাইয়ে। সেই কাজেও প্রত্যক্ষ ভাবে সহযোগিতা করতেন বিশ্বজিৎ। ইডি দাবি করেছে, বালুর যে ২০০০ কোটি টাকা শঙ্করের মাধ্যমে দুবাই পাঠানো হয়েছে, সেই টাকার একটা অংশ দুবাইয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ।
গত মার্চ মাসে রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে প্রথম চার্জশিট জমা দেয় ইডি। ইডি সূত্রে খবর ছিল, ওই চার্জশিটে নাম ছিল রেশন ‘দুর্নীতি’তে ধৃত বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর (ডাকু)-র। সেই সঙ্গে তাঁর সংস্থার কথাও উল্লেখ ছিল। রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী এই মামলায় ধৃত জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে শঙ্করের ‘ব্যবসায়িক’ সম্পর্কের প্রসঙ্গ। ইডি দাবি করে, বালুর বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশি মুদ্রায় রূপান্তরিত করে শঙ্কর ০.৫ শতাংশ করে কমিশন পেয়েছেন। সেই থেকেই কোটি টাকা ‘আয়’ করেন তিনি।