১০ বছরের শিশুর শ্লীলতাহানির মামলায় যুবকের সাজা বহাল রাখল কলকাতা হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে ১৪ বছরের পুরনো ওই মামলায় আদালত জানাল, ওই ঘটনায় শিশুর শরীর, মন এবং আবেগে আঘাত করা হয়েছে। তাই দোষীর প্রতি ক্ষমা প্রদর্শনের প্রশ্নই ওঠে না।
২০১০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। ১০ বছরের এক নাবালিকাকে পিছন দিক থেকে জাপটে ধরে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, জাপটে ধরার সময়ে ওই যুবক বালিকার স্তন স্পর্শ করেছিলেন। তিনি ধর্ষণের মানসিকতা নিয়েই বালিকার শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ২০১৬ সালে এই ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে নিম্ন আদালত দোষী সাব্যস্ত করে এবং সাজা শোনায়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিযুক্ত।
মামলাকারী যুবকের তরফে যুক্তি, তিনি আদৌ ওই বালিকার শ্লীলতাহানি করতে চাননি। তেমন কোনও উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। বৃহস্পতিবার মামলাটি শোনে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের বেঞ্চ। আদালত যুবকের সাজাই বহাল রেখেছে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, শিশুর শ্লীলতাহানি আসলে শিশু অধিকারের চরম লঙ্ঘন। কারণ এটি নির্যাতিত শিশুর শরীর, মন এবং আবেগে দাগ কেটে যায়। ভবিষ্যতে যার প্রভাব হতে পারে সুদূরপ্রসারী। তাই এই ধরনের শ্লীলতাহানি এবং হেনস্থাকে যত দ্রুত সম্ভব চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় নিম্ন আদালত ওই যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু পকসো আইন এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়নি। কারণ যে সময়ে এই ঘটনাটি ঘটেছিল, সেই সময়ে পকসো আইনের অস্তিত্ব ছিল না। পকসো আইনটি তৈরি হয়েছে ২০১২ সালে। কলকাতা হাই কোর্ট বৃহস্পতিবার জানায়, এই মামলায় পকসো আইনের ধারা যুক্ত হতে পারে না। তবে অভিযুক্ত যা করেছেন, তার সপক্ষে যথেষ্ট তথ্য, প্রমাণ মিলেছে। তাই তাঁকে ক্ষমা প্রদর্শনেরও প্রশ্ন ওঠে না।
আদালতের নির্দেশ, অভিযুক্ত যুবককে দু’বছর সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। সেই সঙ্গে দিতে হবে নিম্ন আদালত নির্ধারিত জরিমানাও।