পূর্বাভাস ছিলই। রবিবার সকালে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক এলাকায় বৃষ্টির ঘনঘটা। কলকাতার আকাশে কালো মেঘে যেন রাতের অন্ধকার ঘনিয়েছে। শহরতলির কিছু কিছু এলাকায় ইতিমধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। চলছে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মুষলধারে বৃষ্টি। গত কয়েক দিনের তীব্র গরমে যা স্বস্তির বার্তা বয়ে এনেছে সাধারণ মানুষের কাছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, রবিবার দক্ষিণবঙ্গের সাতটি জেলায় ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। বিকেলের দিকে হতে পারে কালবৈশাখীও। তবে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়নি। রবিবার সকাল থেকেই দিকে দিকে আকাশের মুখভার। থেকে থেকে মেঘ ডাকছে। কালো মেঘের ঘনঘটায় দিনের বেলাতেও আলো জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে ঘরে। হুগলির একাধিক এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টি চলছে সকাল থেকেই।
সকালে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, হাওড়া, নদিয়া জেলার কিছু অঞ্চলে দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। বইতে পারে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া। এ ছাড়া, হুগলি, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনার ক্ষেত্রেও রয়েছে একই পূর্বাভাস। ঝড়বৃষ্টি হতে পারে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম, পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমানে।
পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমানকে শনিবারই কালবৈশাখীর জন্য সতর্ক করেছিল হাওয়া অফিস। ওই জেলাগুলিতে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন আবহবিদেরা। এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে রবিবার।
ঝড়বৃষ্টির পর কলকাতা-সহ দক্ষিণের জেলাগুলিতে তাপের দাপট কিছুটা হলেও কমতে পারে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, রবিবারের পর তিন থেকে চার ডিগ্রি তাপমাত্রা কমতে পারে দক্ষিণবঙ্গে। গত কয়েক দিনে একাধিক জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির গণ্ডি ছাড়িয়েছে। তাপপ্রবাহের পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে জেলায় জেলায়। তবে হাওয়া অফিস শনিবারই জানিয়েছিল, উত্তর বাংলাদেশ এবং সংলগ্ন এলাকায় একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। ফলে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু ঢুকছে বায়ুমণ্ডলে। এত দিন বাতাসে জলীয় বাষ্পের অভাবে এবং পশ্চিম দিক থেকে আসা শুষ্ক এবং গরম বায়ুর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে না বলে জানিয়েছিল হাওয়া অফিস। কিন্তু ঘূর্ণাবর্তের জেরে সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেই মত হাওয়া অফিসের।
কলকাতায় রবিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের চেয়ে তিন ডিগ্রি বেশি। শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়া। তা-ও স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ডিগ্রি বেশি। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি চলতে পারে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত।
উত্তরবঙ্গে সারা সপ্তাহ জুড়েই বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আলিপুর। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, মালদহ এবং দুই দিনাজপুরে।