বিধায়ক লাভলি মৈত্রের স্বামীকে সরানোর পরে কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ-পশ্চিম বিভাগের ডিসি রাহুল দে

কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ-পশ্চিম) করা হল রাহুল দে-কে। তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্রের স্বামী সৌম্য রায়ের জায়গায় তাঁকে নিয়োগ করল নির্বাচন কমিশন। রাহুল ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (এসটিএফ)।

গত মঙ্গলবার সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলির স্বামী সৌম্যকে সরানো হয় পদ থেকে। কমিশনের তরফে সৌম্যকে সরানোর কথা জানিয়ে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে চিঠি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, অবিলম্বে আইপিএস সৌম্যকে কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ-পশ্চিম বিভাগের (বেহালা) ডিসি পদ থেকে সরিয়ে কোনও অ-নির্বাচনী পদে রাখতে হবে। তাঁকে যে পদে বদলি করা হবে, তার সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়ার কোনও সম্পর্ক থাকবে না। কমিশন আরও জানায়, সৌম্যের বদলির ফলে যে পদ খালি হবে, তা পূরণের জন্য তিন জন যোগ্য আধিকারিকের নাম পাঠাতে হবে রাজ্যকে। ৩ এপ্রিল দুপুর ৩টের মধ্যে ওই নাম পাঠানোর কথা বলা হয়। এ বার ওই পদে রাহুলকে বসাল কমিশন।

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সোনারপুর দক্ষিণের প্রার্থী হিসাবে লাভলির নাম ঘোষণা হওয়ার পরেই বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সৌম্য। বিরোধীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেই সময় তাঁকে পুলিশের উচ্চ পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল কমিশন। এর পর ২০২২ সালে হাওড়ার আমতায় ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃ্ত্যুর সময় আবার বিতর্ক তৈরি হয় সৌম্যকে নিয়ে। তিনি তখন হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার পদে ছিলেন। একাংশের অভিযোগ ছিল, আনিসের মৃত্যুর ঘটনা ‘ধামাচাপা’ দিতে চাইছেন সৌম্য। কিন্তু ‘রাজনৈতিক’ কারণে তাঁকে পুলিশ সুপারের দায়িত্ব থেকে সরানো হচ্ছে না। যদিও প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক— কোনও স্তরেই ওই জল্পনা বা অভিযোগ স্বীকার করা হয়নি।

পরে ওই বছরের জুন মাসে হাওড়ায় টানা কয়েক দিন হিংসাত্মক ঘটনার পর বদলি করা হয় সৌম্যকে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল, এটা রুটিন বদলি। হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপারের পদ থেকে সরিয়ে সৌম্যকে আনা হয়েছিল কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ-পশ্চিম) পদে। লোকসভা নির্বাচনের আগে আবার বদলি করা হয় লাভলির স্বামীকে। সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কেউ বিধায়ক হলে তাঁর স্বামী অফিসার থাকতে পারবেন না কেন? এটা কোনও খাতায় লেখা আছে?’’ এ বার সৌম্যের জায়গায় বসানো হল রাহুলকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.