নির্বাচনী বন্ড নিয়ে বিতর্কের আবহেই এই বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীদের উদ্দেশে তোপ দেগে বললেন, “যাঁরা এই বিষয়ে (নির্বাচনী বন্ড) নাচানাচি করছেন, তাঁদের আফসোস করতে হবে।” একই সঙ্গে তিনি জানান, কোনও ব্যবস্থাই পুরোপুরি ‘ত্রুটিহীন’ নয়। তবে সেই ব্যবস্থাকে উন্নত করার সুযোগ থাকে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার তামিল সংবাদমাধ্যম ‘থানথি টিভি’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদী জানান, নির্বাচনী বন্ড বিজেপির জন্য কোনও বিপদ তৈরি করবে না। তাঁকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মোদী বলেন, “তা হলে বলুন আমরা কী করেছি যে, এটাকে বিপদ হিসাবে দেখব?” এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকার নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থা চালু করেছিল বলেই রাজনৈতিক দলগুলিকে কারা অনুদান দিয়েছে এবং কারা সেই অনুদান বা চাঁদা পেয়েছে, তা জানা গিয়েছে। ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে কারা কাকে অনুদান দিত, তা জানা যেত না বলে কংগ্রেস এবং বিরোধীদের খোঁচা দিয়েছেন তিনি।
বিরোধী দলগুলির অবশ্য দাবি, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে দুর্নীতিকে আইনি রূপ দিয়েছে বিজেপি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) বন্ড-তথ্য প্রকাশ্যে আনার পরেই দেখা যায়, এই ব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি। কর্পোরেট সংস্থাগুলির অনুদান সবচেয়ে বেশি পকেটে ঢুকিয়েছে তাদেরই। এই বিষয়ে অনেকটা পিছিয়ে বিরোধী দলগুলি।
নরেন্দ্র মোদীর জমানায় পরিচয় এবং অর্থের অঙ্ক গোপন রেখে রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হয়েছিল নির্বাচনী বন্ডে। সেই ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিল এসবিআই। কথা ছিল, কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, স্টেট ব্যাঙ্কের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অর্থের অঙ্কের বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দেবেন। সেই অর্থ ভাঙিয়ে নেবে রাজনৈতিক দলগুলি। মূলত কালো টাকার লেনদেন রুখতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল মোদী সরকার।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘ক্ষতিকারক’ বলে আখ্যা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত এসবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিল, অবিলম্বে যেন ওই বন্ড দেওয়া বন্ধ করে তারা। এর পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, ২০১৯-এর ১২ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য ৬ মার্চের মধ্যে আদালতের কাছে তুলে দিতে হবে এসবিআইকে।