রাজ্যের আরও দু’টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করল বিজেপি। ঝাড়গ্রাম আসনে প্রার্থী করা হয়েছে প্রণত টুডুকে। আর বীরভূমে তৃণমূলের শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে পদ্মশিবির প্রার্থী করল সদ্য প্রাক্তন পুলিশকর্তা দেবাশিস ধরকে। এই নিয়ে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৪০টিতে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করল বিজেপি। তবে রাজ্যের আরও দু’টি আসনে এখনও প্রার্থী দেয়নি তারা। এই আসনগুলি হল আসানসোল এবং ডায়মন্ড হারবার।
দেবাশিস এবং প্রণত ভোটের ময়দানে নামতে পারেন— বেশ কয়েক দিন ধরেই এমন জল্পনা চলছিল। কিছু দিন আগেই কর্মজীবন থেকে অবসর নেন সদ্য প্রাক্তন আইপিএস আধিকারিক দেবাশিস। রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকের কাছে নিজের ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন তিনি। তাঁর ইস্তফায় বাংলার রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তখনই শোনা গিয়েছিল বিজেপির টিকিটে লোকসভা ভোটে লড়তে পারেন দেবাশিস। বিজেপি সূত্রেও শোনা গিয়েছিল, তাঁর জন্য বীরভূম আসনটি ভেবে রেখেছে দল। অন্য দিকে, পেশায় চিকিৎসক প্রণত কিছু দিন আগেই ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। তাঁর ক্ষেত্রেও শোনা গিয়েছিল যে, লোকসভা ভোটে লড়তে চলেছেন তিনি। দু’টি জল্পনাই শনিবার সত্যি হল। বীরভূমে প্রাক্তন পুলিশকর্তা এবং ঝাড়গ্রামে চিকিৎসককে লড়তে পাঠাল বিজেপি।
ইস্তফাপত্রে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়েছিলেন দেবাশিস। জানিয়েছিলেন, নিজের কিছু সামাজিক এবং ব্যক্তিগত লক্ষ্য অনুসরণ করতে চান তিনি। তাই ইস্তফা দিচ্ছেন। এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকে আলোচনা শুরু করে দেন। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে ভোটের দিন কোচবিহারের শীতলখুচিতে যখন গুলি চলেছিল, দেবাশিস তখন ওই জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন। বর্তমানে তিনি ‘কম্পালসারি ওয়েটিং’ বা বাধ্যতামূলক প্রতীক্ষায় ছিলেন। দেবাশিসের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন সম্পত্তির মামলায় তদন্ত শুরু করেছিল রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। দীর্ঘ সময় ধরে তদন্তকারীদের স্ক্যানারে ছিলেন তিনি। শীতলখুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনার পরে দেবাশিসের সম্পত্তির বিভিন্ন নথি সংগ্রহের কাজ শুরু করেন তদন্তকারীরা। তা থেকেই জানা যায়, ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে কয়েকশো গুণ সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে ওই অফিসারের।
শনিবার পশ্চিমবঙ্গের দু’টি আসন ছাড়াও দেশের আরও ৯টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। অমৃতসর কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হচ্ছেন আমেরিকায় ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত তরণজিৎ সিংহ সান্ধু। কিছু দিন আগেই প্রাক্তন এই আমলা বিজেপিতে যোগ দেন। জালন্ধরে প্রার্থী করা হয়েছে সদ্য আপ থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া এই কেন্দ্রেরই বিদায়ী সাংসদ সুশীল কুমার রিঙ্কুকে। পটিয়ালায় প্রার্থী করা হয়েছে পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহের স্ত্রী প্রণীত কৌরকে। লুধিয়ানায় পদ্মপ্রার্থী হচ্ছেন তিন বারের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ রাভনীত সিংহ বিট্টু।