কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়কে ফোন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাঁচ মিনিটের ওই কথোপকথনে প্রধানমন্ত্রী জানান, ইডির বাজেয়াপ্ত করা অর্থ গরিবদের মধ্যে বিতরণের চেষ্টা করবেন।
মঙ্গলবার রাতে কৃষ্ণনগরের রাজমাতা অমৃতাকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, বাংলায় ইডি যে অর্থ বাজেয়াপ্ত করেছে, সেটা যাতে গরিবদের কাছে যায়, তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি কাজ করছেন। এ জন্য আইনি বিকল্পগুলি কী কী রয়েছে, তা দেখছেন। বিজেপি প্রার্থীকে ফোনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এক দিকে বিজেপি দেশে দুর্নীতিকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্য দিকে, সমস্ত দুর্নীতিবাজ একে অপরকে বাঁচাতে এক হয়েছে।’’ প্রধানমন্ত্রী ‘আস্থা’ প্রকাশ করে বিজেপি প্রার্থীকে বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেবে।’’ তিনি অমৃতার ভোটপ্রচার কেমন চলছে জানতে চান। তার পর অমৃতাকে বলেন, ‘‘আপনি রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের এবং রাজপরিবারের ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’’ তখন অমৃতা অনুযোগ করে বলেন, ‘‘কৃষ্ণনগর রাজপরিবারকে নিয়েও অপপ্রচার করছে ওরা। আমাদের ‘গদ্দার’ ভাবা হচ্ছে। আমরা এত দানধ্যান করেছি। সনাতন হিন্দু ধর্ম রক্ষা করার চেষ্টা করেছি…।’’ তখন ফোনের অপর প্রান্ত থেকে মোদী বলেন, ‘‘আমি আইনি পরামর্শ নিচ্ছি। এই যে তিন হাজার কোটি টাকা যা বাজেয়াপ্ত হয়েছে, সেগুলো আমি গরিব এবং বঞ্চিতদের মধ্যেই বিতরণ করতে চাই।’’
কৃষ্ণনগর থেকে বিজেপি অমৃতাকে প্রার্থী করার পর কটাক্ষ করে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘‘পরাধীন ভারতে ইংরেজদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল কৃষ্ণনগরের রাজপরিবার। নবাব সিরাজের সঙ্গে ইংরেজদের লড়াইয়ের সময়ে ইংরেজদের সাহায্য করেছিল কৃষ্ণনগরের রাজপরিবার।’’ ওই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন অমৃতা। কৃষ্ণনগরের ‘রানিমা’ অভিযোগ করেন রাজপরিবারের ইতিহাস বিকৃত ভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। তাঁর দাবি, বিভিন্ন সময়ে ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল রাজপরিবারকে। রাজনীতি করার জন্য তা এখন বিকৃত করা হচ্ছে।
অমৃতার অনুযোগ শোনার পর মোদী বলেন, ‘‘আপনি মানুষকে অবশ্যই বলবেন যে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। উনি বলেছেন, যে তিন হাজার কোটি টাকা ইডি বাজেয়াপ্ত করেছিল, তা বাংলার গরিবদের টাকা। সেই টাকা আবার তাঁদের ফেরত দেওয়ার জন্য আইনি পরামর্শ করছেন। বাংলার মানুষ যেন সেটা বিশ্বাস করেন।’’ এর পর বিজেপি প্রার্থীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনি জিতে আসুন। দেখা হবে। জেতার পর প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে কৃষ্ণনগরে কী করতে হবে, সেটা তৈরি করে রাখুন। আমরা সাহায্য করব। যে কাজ ভারত সরকারকে করতে হবে, তা দ্রুত শেষ করার জন্য চেষ্টা করব।’’