আইপিএলের পরেই আবার মহারণ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল বাছতে কতটা সুবিধা হবে ভারতের?

আইপিএল ফাইনালের তারিখ এখনও ঘোষণা হয়নি। তবে সূত্রের খবর, ২৬ মে হতে পারে সেই ফাইনাল। গৌতম গম্ভীর তাঁর দলকেও এই তারিখ মাঠে দেখতে চেয়েছেন। অন্য দিকে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু ২ জুন থেকে। মাঝে সময় মাত্র ছ’দিন। অর্থাৎ, আইপিএলেই বোঝা যাবে কোন কোন ক্রিকেটার ফর্মে রয়েছেন। ভারতীয় দলের নির্বাচকদের কাছে এই আইপিএল দল বেছে নেওয়ার জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। ফলে ক্রিকেটারদের কাছেও এটা নিজেদের মেলে ধরার আইপিএল।

কিছু ক্রিকেটার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবেনই। যেমন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তিনি আইপিএলে নেতৃত্ব না দিলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দেবেন। সেটা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব ঘোষণা করে দিয়েছেন। ফলে রোহিতের কাছে এই আইপিএল অবশ্যই দলে থাকার লড়াই নয়। তবে তিনি চাইবেন আইপিএল খেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য নিজের প্রস্তুতিটা সেরে নিতে। যশপ্রীত বুমরা, হার্দিক পাণ্ড্যেরাও চাইবেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা এই কোটিপতি লিগে নিয়ে নিতে। তাঁরা সকলেই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলেন। ফলে একসঙ্গে খেলে বোঝাপড়াটাও আরও বাড়িয়ে নিতে পারবেন।

এ বারের আইপিএল খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে মুম্বইয়ের ঈশান কিশনের জন্য। তিনি ভারতের সব ধরনের দল থেকে বাদ পড়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলার অপরাধে বোর্ডের বার্ষিক চুক্তি থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। সেই ঈশানের কাছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে ঢোকার একমাত্র সুযোগ আইপিএল। মুম্বইয়ের হয়ে ওপেন করতে নেমে তিনি যদি বড় রান করেন তা হলে আবার জাতীয় দলের দরজা খুলতে পারে। যদিও অনেকের মতে তিনি যে ভাবে বোর্ডকে উপেক্ষা করেছেন, তাতে জাতীয় দলে আর সুযোগ না পাওয়াই উচিত।

আর এক উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্থের কাছেও এই আইপিএল বিরাট সুযোগ হতে চলেছে। ১৪ মাস পর ক্রিকেটে ফিরছেন তিনি। গাড়ি দুর্ঘটনার পর এই প্রথম বার খেলতে দেখা যাবে পন্থকে। বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে যে, তাঁর উইকেটরক্ষক হিসাবে খেলতেও কোনও বাধা নেই। ফলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বড় সুযোগ পন্থের সামনে। দিল্লি ক্যাপিটালসকে নেতৃত্ব দেবেন তিনি। পন্থ যদি সুস্থ হয়ে যান তা হলে ভারতীয় দলের উইকেটরক্ষক হিসাবেও ফিরতে পারেন। পুরোটাই নির্ভর করবে পন্থ কেমন খেলছেন তার উপর।

নজর থাকবে শ্রেয়স আয়ারের উপরও। কেকেআরের অধিনায়কও বোর্ডের চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন। শ্রেয়স এ বারের আইপিএলে কী ভাবে খেলেন সেটাই দেখার। কেকেআরের অধিনায়ককে শুধু দলের জন্য খেললে হবে না, নিজের জন্যেও খেলতে হবে। রান করতে হবে, না হলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দরজা খেলতে পারবেন না।

বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল মনে করেন আইপিএল দেখে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তটা খুবই কার্যকরী। তিনি বললেন, “কে ভাল খেলছেন, সেটা দেখে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তটা খুব ভাল। ক্রিকেটারদের মধ্যে খিদে দেখা যাবে। সকলে নিজেদের মেলে ধরার চেষ্টা করবেন। এটাই হওয়া উচিত। ওই নাম দেখে নিয়ে নিলাম দলে, অথচ সে রান পাচ্ছে না, উইকেট পাচ্ছে না, ওটা হওয়া উচিত নয়। বোর্ড খুব ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” ক্রিকেটারদের মধ্যে যে খিদে রয়েছে তা স্পষ্ট কেকেআরের নীতীশ রানার কথায়। তিনি বলেন, “প্রত্যেকে দেশের হয়ে খেলতে চায়। অনেকেরই মনে সেই ইচ্ছা রয়েছে। আমিও চাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে থাকতে। তাই এই মুহূর্তে আইপিএল নিয়েই ভাবছি।’’

অনেকের চিন্তা আইপিএলের পরেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়া নিয়ে। ক্রিকেটারদের ক্লান্তি নিয়ে ভাবছেন অনেকে। লক্ষ্মী বললেন, “ক্লান্তির কোনও ব্যাপার নেই। সকলে পেশাদার ক্রিকেটার। খেলার জন্যই তো টাকা পাচ্ছে। নিজেকে সেই ভাবে তৈরি করতে হবে। আমরা সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রাহুল দ্রাবিড়দের তো বিশ্রাম নিতে দেখিনি। এখনকার ক্রিকেটারদের দেখি বার বার বিশ্রাম নিতে। সেটা ঠিক নয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.