বরফ-ডিমে ছেয়ে গেছে ফিনল্যান্ডের সমুদ্রতট, বিরল ঘটনা বললেন আবহবিদরা

দ্য ওয়াল ব্যুরো: ছোট-বড় গোলাকার সাদা সাদা ডিম। সূর্যের আলোয় চকচক করছে। ডিমগুলোর মসৃণ গায়ে যেন আলো পিছলে যাচ্ছে। তার উপরেই আছড়ে পড়ছে সমুদ্রের ঢেউ। সারি সারি ছেয়ে আছে বোথনিয়া উপসাগরের তীরে ফিনল্যান্ডের হাইলুয়তো দ্বীপের উপকূল জুড়ে। বরফের ডিম। এমনও হয়? ফটাফট ছবি তুলে এই বরফ-ডিমের কথা সামনে এনেছেন এক চিত্রগ্রাহক। আর এই ছবি দেখেই বরফ-ডিম দেখতে কৌতুহলী মানুষরা ভিড় জমিয়েছেন হাইলুয়তোতে। আন্তর্জাতিক সংবাধ্যমজুড়ে ছড়িয়ে গেছে এই বরফ-ডিমের খবর।

হাইলুয়তোর মারজানিয়েমির সৈকতের ৩০ মিটার জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে হাজারে হাজারে এমন বরফ-ডিম। ফোটোগ্রাফার রিস্তো মাত্তিলা এই ডিমের ছবি তুলে তাঁর ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে আপলোড করেছেন। রিস্তো জানিয়েছেন, তিনি ও তাঁর স্ত্রী মারজানিয়েমির সৈকত ধরে হাঁটার সময় এই ডিমের দেখা পান। রিস্তোর কথায়, “প্রায় ২৫ বছর রয়েছি ফিনল্যান্ডে। এমন দৃশ্য কখনও চোখে পড়েনি। বড় ডিমগুলোর আকার আস্ত ফুটবলের মতো। প্রকৃতির খেয়াল কত বিচিত্র, সত্যিই আশ্চর্য হতে হয়।”

এই বরফ-ডিম আসলে কী?  ডিম নয়, আসলে এগুলো বরফের টুকরো। ফিনিশ আবহাওয়াবিদ জওনি ভাইনিও জানিয়েছেন, বরফ জমে শক্ত হয়ে সমুদ্রের নোনা হাওয়ার সংস্পর্শে এলে এমন ডিমের মতো আকার নেয়। তবে বরফ জমে কেন এমন আকার নেয় তার সঠিক কারণ বা সূত্র নেই। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা মনে করেন, তাপমাত্রা যদি হিমাঙ্কের নীচে থাকে এবং একই সঙ্গে জলের তাপমাত্রা ‘ফ্রিজিং পয়েন্ট’-এ পৌঁছলে এমন বরফ-ডিম তৈরি হতে পারে। তার সঙ্গে অবশ্য আরও কিছু উপসর্গ যোগ হয়। যেমন, সৈকতের লবণাক্ত ঢালু জমি, শান্ত ঢেউ এবং নোনা হাওয়া। এই সবকিছু মিলে গেলে বরফ জমে এমন চকচকে ডিমের আকার নেয়।

ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির জিওলজি এক্সপার্ট ড. জেমস কার্টার বলেছেন, শরৎকাল এই বরফ ডিমের জন্য আদর্শ সময়। তখন থেকেই একটু একটু করে বরফ জমতে জমতে এমন আকার নিতে থাকে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে সেগুলোই পরিপুষ্ট হয়ে ওঠে। যদিও এমন বরফ-ডিম খুবই বিরল ঘটনা। বহু বছর অন্তর এমন দৃশ্য দেখা যায়। এটা পুরোপুরি প্রকৃতির খেয়াল ছাড়া আর কিছুই নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.