লোকসভা ভোটে বিজেপি বাংলায় ১১ টি আসন জিততে পারে বলে দাবি করল টাইমস নাও-ভিএমআর এর জনমত সমীক্ষা। তাঁদের এও দাবি, গোটা দেশে কমবেশি ২৮৩টি আসনে জিতে স্বস্তিজনক ব্যবধানে সরকার গড়তে পারেন নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এনডিএ জোট।
সারা দেশের মোট ১৬, ৯৩১ জনের মত নিয়ে ওই সমীক্ষা চালিয়েছে টাইমস নাও-ভিএমআর। তাদের বক্তব্য, জানুয়ারি মাসে যখন তারা সমীক্ষা করেছিল, তখন দেখা গিয়েছিল সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭২টি আসন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই এনডিএ-র। তার থেকে ২১ টি আসন তারা কম পেতে পারে।
কিন্তু তাদের মার্চ মাসের সমীক্ষা একেবারেই ভিন্ন ইঙ্গিত দিচ্ছে। সমীক্ষকদের মতে, এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয় এনডিএ-র অনুকূলে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এক, কেন্দ্রীয় বাজেট ঘোষণা। যার মাধ্যমে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের জন্য বেশ কিছু পপুলিস্ট দাওয়াইয়ের কথা ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। দ্বিতীয়ত, বালাকোটে বায়ুসেনার হামলা। যাতে জাতীয়তাবাদের হাওয়া বিজেপি-র পালে লেগেছে বলে আন্দাজ করা হচ্ছে। এই দুয়ের অভিঘাতেই এনডিএ-র ফল ভাল হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এনডিএ ২৮৩ টি আসনে জেতার অর্থ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭২ এর তুলনায় ভালমতোই এগিয়ে থাকা।
তাদের পূর্বানুমান, বিপরীতে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ পেতে পারে কমবেশি ১৩৫ টি আসন। এবং তৃণমূল কংগ্রেস, সপা, বসপা, বিজু জনতা দল, চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম মিলে পেতে পারে ১২৫ টি আসন।
তবে টাইমস নাও-ভিএমআর-এর সমীক্ষা বাংলার জন্য যে পূর্বানুমান এ দিন করেছে, তাও কম তাৎপর্যপূর্ণ নয়। তাদের সমীক্ষা বলছে, বাংলায় তৃণমূলের ভোট শতাংশ ২০১৬ সালের তুলনায় প্রায় ৬ শতাংশ কমে যেতে পারে। ষোলো সালের ভোটে তৃণমূল পেয়েছিল ৪৫ শতাংশ ভোট। এ বার তারা পেতে পারে ৩৯ শতাংশ ভোট। এমনকী গত লোকসভা ভোটের তুলনাতেও ০.৪ শতাংশ ভোট কমতে পারে তৃণমূলের। বিপরীতে বিজেপি-র ভোট শতাংশ বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৩২ শতাংশে। অর্থাৎ তাদের সমীক্ষার ইঙ্গিত গত পাঁচ বছরে বাংলায় দ্বিগুণ শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি।
ওই সমীক্ষার দাবি, এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে বাংলায় এ বার কংগ্রেস বা বামেরা একটি আসনও পাবে না। কংগ্রেসের তিন সাংসদ অধীর চৌধুরী, আবু হাসেম খান চৌধুরী ও অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় তিন জনেই পরাস্ত হবেন। একই ভাবে হারের মুখ দেখতে হতে পারে সিপিএমের দুই সাংসদ মহম্মদ সেলিম ও মুর্শিদাবাদের বদরুদ্দোজা খানকে। তা ছাড়া গত ভোটের তুলনায় তিনটি আসন কমে যেতে পারে তৃণমূলের। বাংলায় শাসক দল পেতে পারে ৩১ টি আসন।
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, জনমত সমীক্ষা থেকে সব সময়ই সঠিক ছবি পাওয়া যায় না। জনমতের ভিত্তিতে ভোট শতাংশের একটা হিসাব কষে সম্ভাব্য আসন সংখ্যায় পৌঁছনোর একটা চেষ্টা করা হয় ঠিকই। কিন্তু সেই পদ্ধতিও ত্রুটি মুক্ত নয়। তবে সেফোলজিস্টরা বলেন, ভোট শতাংশ থেকে নির্বাচনের গতিমুখ আন্দাজ করা যায়। টাইমস নাও-ভিএমআর –এর সমীক্ষা থেকে তেমনই একটা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।