মহারাষ্ট্রে টানটান নাটকের শেষ অঙ্কটা লিখলেন রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারি।
এনসিপিকে সরকার গড়ার চূড়ান্ত সময়সীমা শেষের আগেই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি জারি হল। আর রাজ্যপালকে সমর্থন জানিয়ে স্বরাষ্ট্র দফতরের মুখপত্রের তরফ থেকে একটি টুইট করা হয়। এই টুইটে স্বস্বস্বরাষ্ট্র দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়, ‘১৫ দিন কেটে গেলেও মহারাষ্ট্রে কোনও দলই সরকার গঠন করতে পারেনি। এই রাজনৈতিক অচলাবস্থার থেকে রাষ্ট্রপতি শাসনই গ্রহণীয় এবং বিকল্প বলে মনে করেছেন।’
কিন্তু, রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন ২৪ অক্টোবরে ফলপ্রকাশের পর থেকে ১২ নভেম্বর হিসাব মত মোট ১৯দিন হয়। তবে স্বরাষ্ট্র দফতর এইরকম ভুল তথ্য তুলে ধরল কেন?
সকাল থেকেই মারাঠা রাজনীতিতে ছিল টানটান উত্তেজনা। সরকার গড়তে এনসিপিকে ২৪ ঘণ্টার চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দেন রাজ্যপাল ভগত সিংহ কোশিয়ারি। এরপর থেকেই প্রয়োজনীয় সমর্থন জোগাড় করতে কোমর বেঁধে ময়দানে নামে এনসিপি। মঙ্গলবার সকাল থেকেই কংগ্রেস এবং শিবসেনার সঙ্গে বৈঠকে বসেন শরদ পাওয়ার। মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেয় এনসিপি।
কিন্তু, এর মধ্যেই দুপুর থেকে গুঞ্জন বাড়তে শুরু করে রাষ্ট্রপতি শাসনে সায় দিতে পারে রাজ্যপাল। সরকার গড়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হতেই জয়পুর থেকে তড়িঘড়ি মুম্বইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেন কংগ্রেস বিধায়কেরা। কিন্তু এর মাঝেই কোনও দলই সরকার গঠন করতে না পারায় সাংবিধানিক ভাবে প্রথমে রাজ্যপাল কেন্দ্রকে রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশ করেন। এর পরেই ব্রাজিল সফর বিলম্বিত করে জরুরি পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তাতে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে সায় দিয়ে এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করার জন্য রাষ্ট্রপতি ভবনকে সুপারিশ করে মন্ত্রিসভা। সেই বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সই করার পরেই সাংবিধানিক ভাবে মহারাষ্ট্রে কার্যকরী হয়ে যায় ৩৫৬ ধারা অর্থাৎ গোটা মহারাষ্ট্র জুড়ে জারি হয়ে যায় রাষ্ট্রপতি শাসন।
রাষ্ট্রপতি অবশ্য মারাঠা রাজনীতিতে নতুন নয়। ১৯৮০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে শরদ পাওয়ারের দল থাকলেও সরকার ধরে রাখতে পারেনি তারা। ১১২ দিন ধরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি থাকে মহারাষ্ট্রে।
২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর কংগ্রেস সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় এনসিপি এবং অন্যান্য জোটসঙ্গীরা। ৩৩ দিন ধরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয় মহারাষ্ট্রে।
এই রাষ্ট্রপতি শাসন আদতে বিজেপির কারসাজি বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
মহারাষ্ট্রের রাজনীতি থেকে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া বিজেপিকে বাড়তি অক্সিজেন দিতেই এই রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হল বলে মত রাজনীতিবিদের। শুধু রাজনৈতিক ক্ষতিই নয় মহারাষ্ট্রের সরকারি যোজনার ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে রাষ্ট্রপতি শাসন এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।