পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের নিরাপত্তায় মোতায়েন হল কেন্দ্রীয়বাহিনী সিআরপিএফ। রাজ্যপালের দেহরক্ষী হিসেবে ১৮ জন সিআরপিএফ জওয়ান থাকছেন। এছাড়া রাজভবনে তৈরি হবে আধা সেনাবাহিনীর ছাউনি।
জানা গিয়েছে, এর আগে রাজ্যের কোনও রাজ্যপালকে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে রাজভবন থেকে বের হতে হয়নি৷ মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে দেখা গেল, সিআরপিএফ জওয়ানদের নিয়ে রাজভবন থেকে বের হতে। তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়ে সল্টলেকের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এবার থেকে রাজ্যপাল যেখানেই যাবেন, সেখানেই তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন সিআরপিএফ জওয়ানরা।
যদিও মাসখানেক আগে সিআরপিএফ নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। কিন্তু তারপরও মঙ্গলবার থেকে রাজ্যপালের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হল সিআরপিএফ। তবে কলকাতা পুলিশ রেগুলেশন, ১৯৬৮ আইন অনুযায়ী,পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন কলকাতা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সের ইনসপেক্টর৷ সেই মত এতদিন রাজ্যপালের নিরাপত্তা তাঁরাই সামলে আসছেন৷ এবারই তার ব্যতিক্রম হল।
সুপ্রিম কোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী জগদীপ ধনকড় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হয়ে আসার পর, বারবার রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত হয়েছে৷ কখনও যাদবপুর নিয়ে, কখনও কার্নিভাল নিয়ে৷ কখনও কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে।
যাদবপুর-কাণ্ডের পরেই রাজ্যপালের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে আসে। খোদ রাজভবন থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে চিঠি যায় যে, রাজ্যপাল নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। এরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে রাজ্যপালের নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলা হয়৷ সিআরপিএফকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়৷ রাজ ভবনে গিয়েছিলেন সিআরপিএফ এর আধিকারিকরা৷ তারপরেই রাজ্যপালের জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হল।
প্রায় দেড় মাস আগে যাদবপুর কাণ্ডে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আসরে নামতে হয় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে কার্যত বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করেন তিনি৷ নিজের গাড়িতে উঠিয়ে নেন বাবুলকে৷ যদিও প্রায় ঘণ্টা দেড়েক আটকে থাকার পর অবশেষে রাত আটটা নাগাদ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর গেট দিয়ে বেরিয়ে যায় রাজ্যপালের কনভয়৷ সঙ্গে ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়ও৷
বাবুলকে উদ্ধার করতে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল বিক্ষোভের হাত থেকে রেহাই পাননি৷ এদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারীরা রাজ্যপালের গাড়ি চাপড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন৷ আটকে রাখা হয় রাজ্যপালের গাড়ি৷ তা নিয়ে রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেন জগদীপ ধনকড়৷