এ দায় তো তাদেরও!
“বন থেকে জানোয়ার তুলে আনা যায়,কিন্তু জানোয়ারের মন থেকে বন তুলে ফেলা যায় না।”
আজ শিশু সাহিত্যিক লীলা মজুমদারের জন্মবার্ষিকী (জন্ম: ২৬ শে ফেব্রুয়ারি,১৯০৮)।প্রাথমিক স্কুলে যখন পড়ি,তাঁর লেখা ‘বনের ধারে’ নামে একটি গল্প পাঠ্য ছিল।এক সরলগাছের বন — সূঁচের মতো সে পাতা,ধুনোর গন্ধ মাখা ডালপালা,তাতে বাতাস বইলে সোঁ সোঁ শব্দ।শুকনো সময়ে পাতার ঘর্ষণে মাঝেমাঝে আগুন জ্বলে ওঠে,ধেয়ে যায় লেলিহান শিখা,পুড়ে যায় সবুজ বনানী।এক দাবানলের সন্ধ্যায় আগুন নেভাতে ক্লান্ত ডোরাক দাঁড়িয়ে আছে ফাঁকা জায়গায়।সে দেখল নিদারুণ ভয় পেয়ে ভালুক-মা নিজের ছানা আনতে গিয়ে ভুল করে চিতার ছানা কোলে তুলে এনেছে।তৎক্ষণাৎ তা ফেলে আবার জ্বলন্ত বনে ফিরে যায় ভালুক।ছানাটি ডোরাকের কাছে ঘেঁষতে থাকে।অনাথ শিশুটিকে আদরে করে কোলে তুলে নেয় ডোরাক।তার বউ পালন করতে থাকে ছানাটি।ছানা বাড়তে থাকে,ডোরাকদের কম্বলে ঘুমোয়।চারিদিকে বাঘ বাঘ গন্ধ।রোজ বনের পানে তাকিয়ে তাকিয়ে ছানাটির শিরার ভেতরে একদিন ঘুমোনো আগুন জ্বলে ওঠে;রক্তের স্বাদ পায় ডোরাকের মানতকরা কালো মুরগিকে সকলের সামনে চিবিয়ে খেয়ে।সে রাতে আদরে নয়,শিকল বেঁধে বাইরে রাখা হয় তাকে।শিকল কেটে সে চলে যায় গভীর বনে।বউ কাঁদতে থাকে।বউয়ের বাবা বলেন,”বন থেকে জানোয়ার তুলে আনা যায়,কিন্তু জানোয়ারের মন থেকে বন তুলে ফেলা যায় না।”
এখন বুঝি মানুষের মধ্যেও এক আদিম হিংস্রতা,এক বন্য প্রকৃতি থেকে যায়।আমাদের চিরকালের প্রচেষ্টা হল পশুত্ব থেকে নরত্বে উত্তরণ,এবং নরত্ব থেকে দেবত্বে।এখানে ঢিলে হবার জো নেই।ঢিলে দিলেই তার মধ্যে বুনো স্বভাব মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।সুন্দরবন লাগোয়া অসংখ্য সন্দেশখালি তো এভাবেই তৈরি হয়েছে।সেইসব জানোয়ারদের মন থেকে কি বন তুলে ফেলা যাবে?হিন্দু নারীর যৌন লুঠপাট,গণি*মতের মাল দখলের স্বাদ যারা পেয়েছে তারা কী নরত্বে ফিরতে পারবে?বন থেকে জানোয়ার তুলে এনেছিল যারা,এ দায় কী তাদের নয়!
@কচ
https://www.facebook.com/share/p/F6Q39jaYLFjGatVh/?mibextid=oFDknk