ছাগলের অস্বাভাবিক মৃত্যুর সন্দেহ গিয়ে পড়েছিল ঠিকাদারের উপর। গালিগালাজ করায় গলা কেটে খুন করা হয় প্রৌঢ়াকে। পোলবার এই খুনে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল। এই ঘটনায় গ্রেফতার ঠিকাদার শঙ্কর সাদা (৫৪)। তার বাড়ি বিহারের খাগারিয়া জেলায়। গত ১২ ফেব্রুয়ারী রাতে পোলবার সুগন্ধার একটি ইট ভাটার পাশে সার কারখানার পিছনের একটি পরিত্যক্ত চৌবাচ্চা থেকে জ্যোৎস্না জানার (৫৫) গলা কাটা মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
মহিলা ও তার স্বামী ওই ইট ভাটায় থাকতেন। মহিলার অনেকগুলি ছাগল আছে। রোজই ছাগল চড়াতে যেতেন সার কারখানার পিছনদিকে। মাস খানেক আগে তার একটি ছাগলের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। সার কারখানার পিছনে শ্রমিকদের থাকার মেস আছে। মেসের উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে ছাগলটির মৃত্যু হয় বলে মনে করে শ্রমিকদের দেখলেই গালিগালাজ করতেন মহিলা।
পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার দিন শঙ্কর আকন্ঠ মদ্যপান করেছিল। মহিলা ছাগল নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দেখে গালিগালাজ শুরু করেন। মেস থেকে সবজি কাটার ছুরি নিয়ে এসে মহিলার গলা কেটে খুন করে পরিত্যক্ত চৌবাচ্চায় ফেলে দেয়। হাতমুখ ধুয়ে সন্ধার পর ব্যন্ডেল থেকে ট্রেন ধরে বিহার চলে যায়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস সূত্র খোঁজ শুরু করে। কি কারণে একজন প্রৌঢ়াকে এভাবে খুন করা হল ,খুনের মোটিভ কি, খুনি কি একজন না একাধিক? শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিস তথ্য সংগ্রহ শুরু করে।
খুনের ঘটনায় রাজনীতির রঙ লাগে। বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় পোলবা থানায় বিক্ষোভ করেন অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে। পুলিশ পূর্ব বর্ধমান থেকে স্নিফার ডগ নিয়ে এসে তথ্য সন্ধান করে। আজ পোলবা থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন হুগলি গ্রামীন পুলিশের ডিএসপি প্রিয়ব্রত বক্সি বলেন, ঘটনার ৭২ ঘন্টার মধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে ওসি পোলবা নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছিল।
সার কারখানার শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে জানা যায় ওই কারখানায় শ্রমিক সাপ্লাই করে শঙ্কর সাদা। ঘটনার পর থেকে সে বেপাত্তা ছিল। জানা যায় স্ত্রী অসুস্থ বলে সে বিহারে দেশের বাড়ি চলে যায়। তার পাঠানো শ্রমিকরা কাজ করছে না বলে কারখানার ম্যানেজার ফোন করে ডাকে। গতকাল ফিরে আসতেই তাকে ধরে ফেলে পুলিস। আজ তাকে চুঁচুড়া আদালতে পেশ করে সাত দিনের পুলিস হেফাজতে নেবার আবেদন জানাবে।