কৃষকরা উপকৃত হবেন, এমন প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তিন রাজ্যে শুরু হওয়া কৃষক বিক্ষোভের আবহে এমনটাই মন্তব্য করলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার এইমস হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে হরিয়ানার রেওয়ারিতে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর জনসাধারণের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় মোদী বলেন, ‘‘কৃষকদের উপকার হবে এমন প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনা করতে শুরু করেছে সরকার।’’
রেওয়ারির জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমরা কৃষকদের ঋণ দেওয়ার বিষয়ে ‘মোদি গ্যারান্টি’ দিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যাঙ্ক তাদের ঋণ দেয়নি। কিন্তু আমরা কৃষকদের ঋণ দেওয়ার গ্যারান্টি দিচ্ছি।’’
উল্লেখযোগ্য যে, কেন্দ্রের কাছে নিজেদের দাবিদাওয়ার কথা পৌঁছে দিতে মঙ্গলবার ‘দিল্লি চলো’ যাত্রা শুরু করেছেন কৃষকরা। উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব এবং হরিয়ানা— মূলত এই তিন রাজ্যের কৃষকেরাই এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। বিক্ষোভ যোগ দিয়েছে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিনশোটি কৃষক সংগঠন। কৃষকদের দাবি, ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা দিতে হবে সরকারকে। একই সঙ্গে সমস্ত কৃষিঋণ মকুব করতে হবে। স্বামীনাথন কমিশনের প্রস্তাব মেনে ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্য দেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে। ২০২০-২১ সালের প্রতিবাদে কৃষকদের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলা খারিজের দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
কৃষক আন্দোলনের জেরে বিগত চার দিন ধরে উত্তাল পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানা। দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে পঞ্জাব-হরিয়ানার শম্ভু সীমানা। শম্ভু সীমানার পর নিরাপত্তা আঁটসাঁট করতে হরিয়ানার দাতা সিংহওয়ালা-খানাউরি সীমানাও বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে দিল্লির সীমানাগুলিতেও। শম্ভু সীমানায় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে কৃষকদের বিরুদ্ধে। পাল্টা পুলিশও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। লাঠিচার্জও করা হয়। এর প্রতিবাদে শুক্রবার ‘ভারত বন্ধ’-এর ডাক দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। বৃহস্পতিবার পঞ্জাবে রেল অবরোধ করা হয়। কৃষকরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কাঁদানে গ্যাস ছোড়া বন্ধ না করলে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না তাঁরা। সেই আবহেই এ বার কৃষকদের উপকার হবে, এমন পরিকল্পনা নিয়ে মুখ খুললেন মোদী।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২০ সালে কৃষক বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে লাগাতার আন্দোলন চলে। সেই আন্দোলনের জেরে শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। ‘বিতর্কিত’ কৃষি বিল প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কৃষক সংগঠনগুলিও নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসে।