বন বিভাগের আশ্বাস সত্বেও বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের বড়জোড়া- বেলিয়াতোড় রেঞ্জে হাতির তান্ডব সমানে চলেছে। গত দু’দিন ধরে বেলিয়াতোড় রেঞ্জের বড়কুড়া ও ভৈরবডাঙা এলাকায় ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে ২৫টি হাতির একটি দল। আলু খেত, বোরো ধানের বীজতলা মাড়িয়ে তছনছ করার পাশাপাশি বাড়ি ঘর, মিষ্টির দোকান ভেঙ্গে পথে বসিয়ে দিয়েছে বেশ কয়েকজন চাষি পরিবারকে। ফলে মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে বন কর্তাদের উপর। সেই ক্ষোভেই বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের অফিস ঘেরাও করার ডাক দিয়েছে হাতি সমস্যা সমাধানের জন্য গঠিত সংগঠন সংগ্রামী গণমঞ্চ।
হাতির হানায় অতিষ্ঠ গ্ৰামবাসীরা গতকাল বিকেলে বেলিয়াতোড়- সোনামুখী রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানোর পর বন কর্তারা আশ্বাস দিয়েছিলেন
হাতিগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু তার কয়েক ঘন্টা পর আজ খুব ভোরে ফের হাতির হানা।হাতির দল ভেঙ্গে দেয় একটি বাড়ি ও একটি মিষ্টির দোকান। বুনো হাতির থেকে রক্ষা পেতে এবার ডিএফও অফিস ঘেরাও করে অফিস অচল করতে বাঁকুড়া চলো ডাক দিয়ে প্রচারে নেমেছে সংগ্রামী গণমঞ্চ।
সংগঠনের জেলা সম্পাদক শুভ্রাংশু মুখার্জি বলেন, হাতির দল গত ৩- ৪ মাস ধরে তান্ডব চালাচ্ছে। জানুয়ারি মাসেই ২ জন গরিব পরিবারের সদস্যের প্রাণ কেড়েছে। ক্ষয়ক্ষতি যে কত হয়েছে তার হিসেব কেউ করতে পারবে না। এসব বিষয় নিয়ে রেঞ্জ অফিসার থেকে ডিএফও সবার কাছে ফাটা রেকর্ডের মতো এক কথা, ‘নিয়মানুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং শীঘ্রই হাতি সরানোর ব্যবস্থাও হবে।’ কিন্তু বন দফতরের কোনও হেলদোল নেই। তাই বাধ্য হয়ে ডিএফও অফিস অভিযানের ডাক দিয়েছি।
সংগঠনের সভাপতি পূর্ণেন্দু সরকার দাবি করেন, আমরা ক্ষতিপূরণ চাই না। বাড়ি ঘর ভাঙ্গলে নতুন করে বাড়ি তৈরি করে দিতে হবে। ফসল নষ্ট করলে সেই পরিমাণ ফসলের দাম ১৫ দিনের মধ্যে দিতে হবে। কিন্তু কোনোটাই সময় মত পাওয়া যায় না। ক্ষতিপূরণ আদায় করতে জুতোর সুখতলা ক্ষয়ে যায়। তারপর যা পাওয়া যায় সেটা ক্ষতির এক চতুর্থাংশও নয়।
ডিএফও উমর ইমাম জানান, এই মুহূর্তে ৬৮টি হাতি বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ছড়িয়ে রয়েছে। আমরাও কড়া নজরদারি রেখেছি। তারই ফাঁকে হাতিরা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়ছে। অন্যত্র সরানোর জন্য হাতিগুলিকে এক জায়গায় এনে ড্রাইভ শুরু হবে বলেও বন দফতর সুত্রে জানাগেছে।