দিদিমণির হাতেই বাগ্‌দেবীর আরাধনা! সংস্কার ছেড়ে বেরোনোর পাঠ দিল কলকাতার এক স্কুল

সরস্বতী পুজোর জন্য পুরোহিতকে ধরে আনতে সকাল থেকে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকতে হয়। ‘গেছোদাদা’র মতো কখন যে এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে পুরোহিতমশাই ‘ফুল ফেলতে’ চলে যান, তা বোঝা মুশকিল। গেরস্ত বাড়িতে তো বটেই, স্কুল-কলেজ, অফিস কিংবা পাড়ার কোচিং— সর্বত্রই সকালের চিত্রটা এক রকম। তবে এ বছর একটু অন্য ভাবে বাণীবন্দনা করল শহরেরই এক বিদ্যালয়। চিরাচরিত প্রথা ভেঙে, স্কুলের শিক্ষিকার হাতেই পূজিতা হলেন ভারতী। সৌজন্যে দক্ষিণ কলকাতার গরফা ধীরেন্দ্রনাথ মেমোরিয়াল উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়।

যদিও মহিলা পুরোহিতের হাতে মূর্তিপূজার চল নতুন নয়। শুধু পুজোর আয়োজন নয়, বিয়ে থেকে শুরু করে সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মতো বিভিন্ন মঙ্গলানুষ্ঠানে এখন পৌরোহিত্য করছেন মহিলারা। তা ছাড়া, নিজের স্কুলে নিজের দিদিমণিকে পৌরোহিত্য করতে দেখলে ছাত্রীরা আরও বেশি করে একাত্মবোধ করবে। সে ভাবনা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের পূর্ণ সম্মতিতে তাই সরস্বতী পুজোয় পৌরোহিত্য করার ভার নিজের কাঁধে তুলে নেন ওই স্কুলেরই সংস্কৃতের শিক্ষিকা অর্পিতা বৈদ্য।

কখনও মেয়েদের বাল্যবিবাহ রুখে দিয়ে, আবার কখনও স্কুলছুট পড়ুয়াদের শিক্ষার আলোয় নিয়ে এসে মানুষের মতো মানুষ গড়ে তোলার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অর্পিতাও পুঁথিগত শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি সংস্কার ছেড়ে ছাত্রীদের আলোর দিশারি হয়ে ওঠার পাঠ দিতেন। তাঁর হাত ধরেই গরফা ধীরেন্দ্রনাথ মেমোরিয়াল উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে এ ভাবে সরস্বতী পুজো হল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.