উচ্চ মাধ্যমিকে প্রশ্ন ফাঁস রুখতে নজিরবিহীন ব্যবস্থা, কী কী থাকছে? বিশেষ নজর সন্দেশখালিতে

রাজ্যে ১৬ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক। প্রশ্ন ফাঁস এবং টোকাটুকি রুখতে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। ১৭৬টি পরীক্ষাকেন্দ্রকে ‘সংবেদনশীল’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। উত্তপ্ত সন্দেশখালিতে কী ভাবে হবে পরীক্ষা, তা নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়ে দিল, পরীক্ষা নিতে কোনও সমস্যা হবে না পরীক্ষার্থীদের।

গত বুধবার থেকে আবারও উত্তপ্ত সন্দেশখালি। প্রশাসনের তরফে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট ১৪৪ ধারা জারির নির্দেশ বাতিল করে। এই পরিস্থিতিতে সন্দেশখালিতে কী ভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে পরীক্ষার্থীরা, তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। মঙ্গলবার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানাল, সন্দেশখালির রাধারানি হাই স্কুল পরীক্ষার মূল ‘ভেনু’। সেখানে এত দিন পুলিশের শিবির ছিল। সেই শিবির খালি করা হয়েছে। ওই স্কুলের অধীনে ৭০০ জন পরীক্ষা দেবেন। সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পরীক্ষা নিতে কোনও সমস্যা হবে না। আমরা প্রশাসনের কাছ থেকে সব রকম সহযোগিতা পাচ্ছি।’’

আগামী শুক্রবার থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সাত লক্ষ ৯০ হাজার। তার মধ্যে ৫৬.৬২ শতাংশ ছাত্রী। ৪৩.৪৮ শতাংশ ছাত্র। ছাত্রের থেকে ছাত্রীর সংখ্যা এক লক্ষ ৩৫৩ বেশি। প্রধান পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ৮৩৭। তার অধীনে রয়েছে ২,৩৪১টি কেন্দ্র। ১৭৬টি পরীক্ষাকেন্দ্রকে ‘সংবেদনশীল’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে মালদহের ৫৭টি কেন্দ্র। কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও কেন্দ্রকেই ‘সংবেদনশীল’ ঘোষণা করা হয়নি। ‘সংবেদনশীল’ কেন্দ্রগুলিতে মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে পরীক্ষা করিয়ে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশ করানো হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রত্যেক ঘরে দু’জন করে পর্যবেক্ষক থাকবেন।

সংসদ জানিয়েছে, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। মোবাইল নিয়ে ধরা পড়লে সেই দিনের পরীক্ষা বাতিল হবে। অপরাধের গুরুত্ব বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে, বাকি পরীক্ষাও বাতিল হবে কি না! পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের মূল গেট এবং ‘ভেনু সুপারভাইজার’-এর ঘরে বসানো থাকবে সিসি ক্যামেরা। উচ্চমাধ্যমিকের প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তায় সিরিয়াল নম্বরের ব্যবহার হবে। এই সিরিয়াল নম্বর ব্যবহার করা হবে ‘ইউনিক কিউআর কোড’-এর মাধ্যমে। এই বিশেষ পদ্ধতিতে সংসদ প্রশ্নপত্রের যাবতীয় তথ্য নিজেদের নজরদারির মধ্যে রাখতে পারবে। পরীক্ষা চলাকালীন বা তার আগে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা সংসদ সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারবে বলে জানানো হয়েছে। মঙ্গল এবং বুধবার সংসদের অফিস ছুটি থাকলেও অনলাইনে সমস্যার কথা জানানো যাবে। পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় আঞ্চলিক দফতরও খোলা। কারও অ্যাডমিট কার্ডে কিছু ‌সংশোধনের প্রয়োজন হলে করানো যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.