তৃতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে গিয়েছেন কেএল রাহুল। বোর্ডের তরফে সোমবার সন্ধ্যায় সেই খবর সরকারি ভাবে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। রাহুল ছিটকে যাওয়ায় ভারতীয় দলে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল তা পূরণ করা হতে পারে সরফরাজ খানকে দিয়ে। রাজকোটে তৃতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক কার্যত নিশ্চিত। শুধু তাই নয়, উইকেটকিপার হিসাবে অভিষেক হতে পারে ধ্রুব জুরেলের।
ঘরোয়া ক্রিকেটে গত তিন মরসুমে ১০০-র উপর গড় ছিল সরফরাজের। ঝুরি ঝুরি রান করেও জাতীয় দলের দরজা খুলছিল না তাঁর সামনে। তাঁরপ্রতিবাদ করে ‘বিদ্রোহী’ ক্রিকেটার নামেও পরিচিত হয়েছেন তিনি। ইংল্যান্ড সিরিজ়ে প্রথম বার দলে তাঁকে সুযোগ দেওয়া হয়। এ বার জাতীয় দলে খেলার দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে তাঁর।
বোর্ডের এক কর্তা এক ওয়েবসাইটে বলেছেন, “সরফরাজ খানের অভিষেক হচ্ছে তৃতীয় টেস্টে। যে হেতু কেএল রাহুল এই ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছে, তাই সরফরাজকে প্রথম বার খেলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।” বিরাট কোহলির জায়গায় ইতিমধ্যেই ভারতীয় দলের হয়ে খেলে ফেলেছেন রজত পাটীদার। তাঁকে রাখা হবে দলে।
এ দিকে, উইকেটের পিছনে কেএস ভরতের ভূমিকা সন্তুষ্ট করতে পারছে না দল পরিচালন সমিতিকে। না পারছেন নিখুঁত উইকেটকিপিং করতে, না পারছেন ব্যাট হাতে রান করতে। ফলে জুরেলকে সুযোগ দিতে এক বার দেখে নেওয়া হতে পারে। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনিও প্রচুর রান করেছেন।
গত সপ্তাহে বোর্ডের তরফে একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা হয়। সেখানে সরফরাজ জাতীয় দলে নিজের ডাক পাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “রঞ্জি খেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ব্যাগ গোছানোই ছিল। এমন সময় হঠাৎ করে ফোন পেলাম। প্রথম বিশ্বাস করতে পারিনি। আমার বাবা এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিল। বাবাকে ফোন করে বলতেই কেঁদে ফেলে। বাড়ির সকলে খুব খুশি হয় খবরটা পেয়ে।”
সরফরাজ়ের বাবা নওশাদ খানই তাঁর কোচ। ছেলেকে ভারতীয় দলের খেলতে দেখাই ছিল নওশাদের প্রধান লক্ষ্য। সেই পথে এগিয়ে চলেছেন সরফরাজ়। শুক্রবার তাঁকে দলে রাখা না হলেও আগামী দিনের রাস্তাটা কিছুটা পরিষ্কার হল তাঁর জন্য। সরফরাজ় বলেছিলেন, “আমার বাবার স্বপ্ন সত্যি করাটাই আমার লক্ষ্য। বাবা চায় আমি দেশের হয়ে খেলি। ফোন পেয়ে মনে হল আমার এত দিনের কষ্ট সার্থক। আমি খুব খুশি।”
রঞ্জিতে ধারাবাহিক ভাবে রান করেছেন সরফরাজ়। কিন্তু এর আগে কখনও ভারতীয় দলে ডাক আসেনি। বোর্ডের ডাক না পেয়ে অনেক সময়ই ইঙ্গিত পূর্ণ পোস্ট করেছেন। বোর্ডকে খোঁচা দিয়েছেন। তবে ডাক পেয়ে তিনি খুশি। সরফরাজ় বলেছিলেন, “ভারতীয় দলে ডাক পাওয়ার জন্য যে পরিমাণ অপেক্ষা করেছি, তা ভাবলে কান্না পায়। বাবা আমাকে বলতো, পরিশ্রম করে যেতে। এক দিন ঠিক সুযোগ আসবে। আমি বাবার জন্য খুশি। এটা ভেবেই ভাল লাগছে যে আমি জাতীয় দলের অংশ। এত বড় দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছি আমি।”