বুধবার তাঁর সশরীরে ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। সময় পেরিয়ে গেলেও তাঁর দেখা মেলেনি। এমনকি, ইডির নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের কোনও প্রতিনিধিকেও দেখা যায়নি ইডি দফতরে। দুপুরের দিকে শাহজাহানের আইনজীবী ইডি দফতরে গেলেন। তাঁর সঙ্গে ছিল শাহজাহানের চিঠিও। সূত্রের খবর, ইডি সেই চিঠি জমা নেয়নি। আইনজীবীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার শাহজাহানের চিঠি নিয়ে ইডি দফতরে গিয়েছিলেন এক জুনিয়র আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সিনিয়র যা নির্দেশ দিয়েছেন, তা পালন করতে এসেছি। চিঠি জমা দিতে এসেছিলাম। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না।’’
শাহজাহান কোথায় আছেন? এই প্রশ্নেরও কোনও উত্তর দেননি ওই আইনজীবী। চিঠিতে কী বার্তা রয়েছে, তা-ও তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন। শাহজাহান কি সময় চেয়েছেন ইডির কাছে? জবাবে আইনজীবী বলেন, ‘‘হয়তো তাই।’’
ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে আইনজীবী বলেন, ‘‘চিঠি গ্রহণ করা হয়নি। আমরা চিঠি নিয়ে ইডি দফতরের সংশ্লিষ্ট বিভাগে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বলা হয়, চিঠি গ্রহণ করা যাবে না। কেন চিঠি গ্রহণ করা হল না, আমরা বুঝতে পারছি না। চিঠি নিয়ে ফিরে যাচ্ছি।’’
আইনজীবী আরও বলেন, ‘‘চিঠিটা ওঁরা খুলে পড়েছেন। কিন্তু আমাদের কাছ থেকে ‘পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি’ চাওয়া হয়। তার পর জানানো হয়, চিঠি গ্রহণ করা যাবে না।’’
এর আগে আরও এক বার শাহজাহানকে তলব করেছিল ইডি। ২৯ জানুয়ারি তাঁকে সল্টলেকের ইডি দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। সেই মতো নোটিস শাহজাহানের বাড়ির দরজায় সেঁটে দিয়ে এসেছিলেন ইডির আধিকারিকেরা। কিন্তু সে দিন শাহজাহান ইডি দফতরে যাননি। কোনও প্রতিনিধিকেও পাঠাননি। এর পর দ্বিতীয় বার তাঁকে ডাকা হয় ৭ ফেব্রুয়ারি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শাহজাহান বা তাঁর আইনজীবীর দেখা না মেলায় অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, সন্দেশখালির নেতা হয়তো দ্বিতীয় হাজিরাও এড়ালেন। কিন্তু বুধবার দেরি করে হলেও সল্টলেকে যান শাহজাহানের আইনজীবী।
রেশন মামলার তদন্তে নেমে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের থেকে পাওয়া নামের সূত্র ধরে শাহজাহানের বাড়িতে পৌঁছেছিল ইডি। কিন্তু প্রথমেই সেখানে তারা বাধা পায়। ইডির অভিযোগ, গত ৫ জানুয়ারি যে দিন সন্দেশখালিতে ইডি মার খায়, সে দিন শাহজাহান বাড়ির ভিতরেই ছিলেন। তিনিই ফোন করে বাইরে অনুগামীদের জড়ো করেছিলেন বলে দাবি করে ইডি। শাহজাহান সে দিন পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন বলেও জানান ইডি কর্তারা। আদালতে ইডি সন্দেহ প্রকাশ করেছে, শাহজাহান হয়তো বাংলাদেশে গা ঢাকা দিয়ে আছেন। সে দিন থেকেই শাহজাহান ‘নিখোঁজ’। যদিও আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন একাধিক বার। কিন্তু পুলিশ বা ইডি তাঁর টিকিও ছুঁতে পারেনি এখনও।
শাহজাহানের বাড়িতে আরও এক বার তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। তালা ভেঙে তাঁর বাড়ির বিভিন্ন ঘর, আলমারি, ড্রয়ার ঘেঁটে দেখা হয়। ইডি সূত্রে খবর, উল্লেখযোগ্য কিছুই পাওয়া যায়নি সেখান থেকে।