বোলপুরের বাইপাস এলাকায়, প্রায় ৪০ বিঘা সম্পত্তি দখল করার অভিযোগ উঠল অনুব্রত মণ্ডলের ভাগ্নে রাজা এবং তার আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। আসল কাগজ নিয়ে প্রশাসনের দরবারে ঘুরেও লাভ হচ্ছেন না, আসল জমির মালিকের।
শান্তিনিকেতনের কোপাই নদীতে সরকারি খাস, পাট্টা জমি দখল করে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিছুদিন আগেই একটি কংক্রিটের নির্মাণ বন্ধ করেছে জেলা প্রশাসন। এবার বাইপাস মৌজায় বিঘার পর বিঘা জমি ভুয়ো আরএস বের করে মিউটেশন করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শাসকদলের নেতা মন্ত্রীদের একাংশের মদতেই অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে জাল মিউটেশন এমনটাই অভিযোগ করা হয়েছে। এরফলে চাষযোগ্য অথবা ডাঙা জমির মালিকরা পথে বসছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। রাতের অন্ধকারে নকল স্ট্যাম্প ব্যবহার করে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের যোগসাজসে প্রযুক্তির সহায়তায় জমি হারাচ্ছেন আসল মালিকরা।
এই ঘটনায় মিলছে খোদ শাসক দলের হেভিওয়েটদের যুক্ত থাকার তত্ত্ব। বোলপুরের বাইপাস রোডের ধারেই পরিকল্পনা মাফিক বিঘা বিঘা জমির জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করা হচ্ছে। জমি হস্তান্তর ও শ্রেণী পরিবর্তন হওয়ায় সমস্যায় পড়ছেন আসল জমির মালিকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিকের দাবি, ‘শাসকদলের হেভিওয়েটরা এই ধরনের প্রস্তাব নিয়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর ও রেজিস্ট্রি অফিসে আসেন কাগজ ভুল না জাল দেখার পর্যন্ত সাহস দেখানোর সুযোগ থাকে না। এখানে তো অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠরাই এই ধরনের কাজে যুক্ত’।
অন্যদিকে অভিযোগকারী অমিত দাস বলেন, ‘বংশ পরম্পরা গত ভাবে বাপ দাদুর সম্পতি। ১৯৬২ সালে এই জমি কেনা হয়। ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত খাজনা দেওয়া আছে। থাকা অবস্থায় পড়ে থাকে প্রায় ৪০ বিঘা জমি। হটাৎ দেখছি প্লট করে করে দু একটি বাড়ি হচ্ছে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে খোঁজখবর নিতেই দেখছি সেই জমি রাঘব বোয়ালদের নামে স্থানান্তরিত হয়েছে। জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতি রাজা ঘোষ তথা অনুব্রত ভাগ্নে সহ শশুর অনুপেন্দ্র রায় ওরফে বাবলা রায় সহ অন্যান্য পরিবার পরিজনেরা জমি হস্তান্তর করেছেন’।
তিন ইয়ার বলেন, ‘২০০২ সালে দলিল তৈরী করে একের পর এক প্লট স্থানান্তর করেছেন। আমরা নিরুপায় এখন কোথায় যাব কিছুই বুঝতে পারছি না। প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরলেও কোনও সুরাহা মেলেনি। বর্তমানে বিষয়টি বিচারাধীন’।
যদিও এই ঘটনার বিষয়ে রাজা ঘোষ দাবি করেছেন, ওনার এই জমির সঙ্গে কোনও লেনদেন নেই।। যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সবটাই মিথ্যা। পাশাপাশি তিনি এও দাবি করেন যদি তার নামে অভিযোগ প্রমাণ না হয় তাহলে তিনিও আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
তবে বোলপুরের এই জমি মাফিয়াদের দাপট এই প্রথম নয়। বার বার অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পরে এই রাজা ঘোষ বা তার পরিবারের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ উঠেছে। আর এবার একেবারে ৪০ বিঘা সম্পত্তি কার্যত দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনা সামনে আসতেই বোলপুর জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।