রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় ধৃত শঙ্কর আঢ্যের দুবাইয়ের সংস্থার কথা আগেই জানা গিয়েছিল। এ বার সেই সংস্থার লেনদেনের হিসাব দিতে দুবাইয়ের ব্যাঙ্কের নথিও দেখাল ইডি। নথি তুলে ধরে তাদের দাবি, দুবাইয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছে শঙ্করের সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে। অন্য একটি ভারতীয় সংস্থার সঙ্গেই লেনদেন করা হয়েছে। ইডির আতশকাচের নীচে রয়েছে সেই সংস্থাও।
ফরেক্স বা বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার ব্যবসা রয়েছে বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্করের। তাঁর এবং তাঁর আত্মীয়-পরিজনদের নামে ৯০টির বেশি ফরেক্স সংস্থা রয়েছে। ইডি আদালতে জানিয়েছে, ওই সংস্থার মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে লেনদেন করেছেন শঙ্কর। তার মধ্যে অন্তত ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা রাজ্যের মন্ত্রী তথা রেশন মামলায় ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। এর পরেই দুবাইতে শঙ্করের একটি সংস্থার খোঁজ পায় ইডি।
শঙ্করের দুবাইয়ের সংস্থাটির লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। তা নিয়ে ইডি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় শঙ্করকে। ইডি সূত্রে খবর, জেরায় তিনি জানান, সংস্থাটি বিদেশে রফতানির প্রয়োজনে তৈরি করা হয়েছিল। তার মাধ্যমে ব্যবসা করা হয়নি। কিন্তু নথি ঘেঁটে ইডি অন্য তথ্য পেয়েছে।
ইডি সূত্রে দুবাইয়ের রাক ব্যাঙ্কের নথি তুলে ধরা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর একটি ভারতীয় সংস্থার সঙ্গে ৭৯,৫৪৮ ডলার লেনদেন হয়েছে শঙ্করের সংস্থার। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য ৬৬ লক্ষের বেশি। রেশন ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে এই টাকার সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রেশন মামলায় জ্যোতিপ্রিয়ের সূত্র ধরেই শঙ্করের নাম পেয়েছে ইডি। গত ৫ জানুয়ারি বনগাঁয় শঙ্করের বাড়িতে তারা তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল। প্রায় ১৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে ইডি জানায়, জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে শঙ্করের ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে। এমনকি, হাসপাতালে থাকাকালীন কন্যা প্রিয়দর্শিনীর সঙ্গে মন্ত্রী যে চিঠি লেনদেন করেছেন, তাতেই শঙ্করের উল্লেখ রয়েছে। টাকার লেনদেন সংক্রান্ত নির্দেশ ওই চিঠিতে দেওয়া হয়েছিল বলে ইডির দাবি। জ্যোতিপ্রিয়ের হস্তাক্ষরের সঙ্গে ওই চিঠির লেখা মিলিয়ে দেখার প্রক্রিয়া চলছে। যদিও ধৃত মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ নেই বলে বার বার দাবি করেছেন শঙ্কর।