‘বদলা’ নিল ওয়াশিংটন! ইরাক এবং সিরিয়ায় থাকা ইরানি সেনার উপর বিমান হামলা আমেরিকার, মৃত্যু ১৮ জনের

জর্ডনে সিরিয়া সীমান্তের কাছে রবিবার আমেরিকান বাহিনীর ওপর ড্রোন হামলায় আমেরিকার তিন সেনার মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনায় প্রথম থেকেই ইরানকে দোষারোপ করছে ওয়াশিংটন। এ বার সেই হামলার ‘বদলা’ও নিল আমেরিকা। শুক্রবার ইরাক এবং সিরিয়ায়, ইরানের বাহিনী এবং তেহরান সমর্থিত সশস্ত্র বাহিনীর উপর যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালাল আমেরিকার বায়ুসেনা। সেই হামলায় সিরিয়ায় ১৮ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে পেন্টাগন সূত্রে খবর। উল্লেখযোগ্য যে, ইরাক এবং সিরিয়ায় থাকা ইরান বাহিনীর উপর হামলা চালালেও ইরান ভূখণ্ডে কোনও হামলা চালায়নি আমেরিকা।

হামলার ঘটনার পর আমেরিকার সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ইরানের সামরিক বাহিনী ‘ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড’-এর পাশাপাশি তেহরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর উপরেও হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমেরিকা থেকে উড়ে যাওয়া দূরপাল্লার যুদ্ধবিমানগুলিকে ৮৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।’’ বিমান হামলায় ১২৫টিরও বেশি যুদ্ধোপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টকম।

আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল)-এর মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, প্রায় ৩০ মিনিট ধরে হামলা চালানো হয়। কিরবি জানিয়েছেন, আমেরিকার বি-১ যুদ্ধবিমানগুলি নির্দিষ্ট সময়ে হামলা চালিয়ে আবার ফিরে এসেছে।

ইরাক এবং সিরিয়ার উপর আমেরিকার বায়ুসেনার হামলার পর মুখ খুলেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। তিনি বলেন, ‘‘আজ থেকে আমরা আমাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু হয়েছে। আমাদের পছন্দের সময়ে এবং জায়গায় এই প্রতিক্রিয়া চলতে থাকবে।’’ বাইডেন আরও যোগ করেছেন, ‘‘আমেরিকা পশ্চিম এশিয়ার অন্য কোথাও সংঘাত চায় না। তবে যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায় তাদের সবার একটা কথা জানা উচিত— আমেরিকার এক বাসিন্দারও যদি কেউ ক্ষতি করে, তা হলে আমরা তার যোগ্য জবাব দেব।’’

শোনা যাচ্ছিল, ড্রোন হামলায় আমেরিকার ইরানের উপরে হামলা চালানোর জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপরে চাপ বাড়াচ্ছিলেন ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান সদস্যদের একাংশ। কিন্তু গত কয়েক দশকে বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ চালাতে গিয়ে আমেরিকার ব্যর্থতার কথা মাথায় রেখে নাকি এখনই সে পথে হাঁটতে নারাজ পেন্টাগন। পেন্টাগনের তরফে জানানো হয়েছে, তারা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চাইছে না এবং তাদের বিশ্বাস তেহরানও যুদ্ধ চায় না। মঙ্গলবার পেন্টাগনের এক মুখপাত্র বলেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না, কিন্তু আমরা ব্যবস্থা নেব। সেনার উপরে হামলার জবাব দেব।” তার পরেই ইরাক এবং সিরিয়ায় হামলা চালাল আমেরিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.