২০২২ সালের প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীদের মূল প্যানেলের পাশাপাশি আরও একটি প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এই নিয়ে বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের করতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন সুমন্ত কোলে-সহ ১২ জন। তাঁদের মামলা দায়েরের অনুমতি দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। সেই মামলার শুনানিতে শুক্রবার বিচারপতি মান্থা জানালেন, ১২ জন চাকরিপ্রার্থীর জন্য আলাদা প্যানেল প্রকাশ করতে হবে।
২০২২ সালে প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে ১২ জন চাকরিপ্রার্থী ডিএলএড, বিএড দু’রকম প্রশিক্ষণই নিয়েছিলেন। তাঁদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানিয়েছেন, বিএড প্রশিক্ষণের কথা উল্লেখ করেই প্রাথমিক নিয়োগের জন্য আবেদন করেছিলেন তাঁরা। পরে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, প্রাথমিক স্কুলে পড়াতে পারবেন শুধু মাত্র ডিএলএড প্রশিক্ষিতেরাই। ফলে বিএড প্রশিক্ষিতেরা বাদ চলে যান।
কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২০২২ সালের প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। সেই স্থগিতাদেশ তুলে নেয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রায় ১২ হাজার প্রার্থীর মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেয়। সেই মতো ১১ হাজার ৭৫৮টি শূন্যপদের মধ্যে ৯ হাজার ৫৩৩ পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বুধবার প্রার্থীদের প্যানেল প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তার পরেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ১২ জন প্রার্থী। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট বলে, ওই ১২ জন প্রার্থীর ডিএলএড প্রশিক্ষণ শংসাপত্র যাচাই করতে হবে। পাশ করেছে কি না যাচাই করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ৯ হাজার ৫৩৩ জনের যে প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে, তা স্পর্শ করা যাবে না। ওই মেধাতালিকায় যাঁরা চাকরি পাবেন, তাঁদের সঙ্গে আলাদা এই মেধাতালিকার তুলনা করতে হবে। যদি দেখা যায়, এই ১২ জন ওই প্যানেলের অন্তর্ভুক্ত প্রার্থীদের থেকে বেশি নম্বর পেয়েছেন, তা হলে এঁদের জন্য আলাদা প্যানেল করতে হবে। এই ১২ জনের বিএড প্রশিক্ষণ থাকায় তাঁদের নম্বর ডিএলএড প্রশিক্ষিতদের থেকে এমনিতেই বেশি। ৯ হাজার ৫৩৩ জনের প্যানেলের সঙ্গে এই ১২ জনের প্যানেলের শুধু তুলনা করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি মান্থা।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিকের ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ ক্ষেত্রে বহাল রেখেছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে রাজ্য। প্যানেল প্রকাশেও বাধা তুলে নেয় বিচারপতি হিমা কোহলি, বিচারপতি আসানুদ্দিন আমানুল্লাহ্র বেঞ্চ। শীর্ষ আদালত জানায়, প্রাথমিকে ১১ হাজার ৭৫৮ শূন্যপদে নিয়োগ করা যাবে। পর্ষদ ৯ হাজার ৫৩৩ পদে শিক্ষক নিয়োগ করার জন্য প্রার্থীতালিকার খসড়া পাঠায়। সেই তালিকাও প্রকাশ করে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের করতে চেয়েছিলেন ১২ জন। সেই আবেদনে সম্মতি দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। সেই মামলার শুনানিতেই বিচারপতি জানালেন, ১২ জনের জন্য আলাদা মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে। তবে মূল তালিকাকে স্পর্শ করা যাবে না।