কথায় আছে, যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়। ঠিক এমনই অবস্থা পুরুলিয়ার কোটশীলার সিমনি বনাঞ্চল লাগোয়া গ্রামবাসীদের । চিতাবাঘের আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে জঙ্গল ঘেঁষা সিমনি, জাবর, হরতান সহ আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের। সন্ধ্যা নামলেই গৃহবন্দি সকলেই। সূর্য ওঠার আগে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না কেউ। বন নির্ভর মানুষজন আতঙ্কে বনে যেতে পারছেন না।
গবাদি পশুদের সারাদিন বাড়িতে বেঁধে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এরই মধ্যে রাত পেরোলেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। আতঙ্কে রয়েছেন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাও। অভিভাবকদের দাবি, এলাকার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া আসার ব্যাবস্থা করতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা তথা ঝালদা ২ নম্বর ব্লকের কর্মাধ্যক্ষ পুস্পরানী মাহাতো জানান, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না হয় তার উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে কোটশিলার সিমনি গ্রামের ভেতর প্রবেশ করে চিতাবাঘ। গোয়ালঘর থেকে গবাদি পশুকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। বাড়ির মালিক এবং গ্রামবাসীরা চিৎকার করলে জঙ্গলে পালিয়ে যায় চিতা বাঘটি।
ঘটনাস্থলে বন দফতরের আধিকারিকরা পৌঁছায়। গ্রামবাসীদের হাতে সার্চলাইট তুলে দেয়। চিতাবাঘের উপর নজরদারি চালাতে তিনটি গ্রামে ৬ জন ওয়াচার মোতায়েন করে। রাতে একা বাড়ির বাইরে না বেরোনোর জন্য এবং জঙ্গলে একা না যাওয়ার জন্য গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হয়।
প্রথমে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কোটশিলার সিমনি বিটের জঙ্গলে বন দফতরের পক্ষ থেকে লাগানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়ে একটি পুরুষ চিতাবাঘের ছবি। পরে ওই বছরই জুন মাসে ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়ে একটি মাদি চিতাবাঘের ছবি।
এরপর ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ওই একই জঙ্গলে ট্র্যপ ক্যামেরায় ধরা পড়ে এক চিতাশাবকের ছবি। বন দফতরের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় সিমনি জঙ্গলে রয়েছে পুরুষ, মাদি চিতাবাঘ এবং একটি চিতাশাবক।
এপরই সিমনি জঙ্গল লাগোয়া গ্রামাঞ্চলে বন দফতরের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হয়। জঙ্গলে ট্র্যাপ ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে চিতাবাঘের গতিবিধির উপর নজর রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে বন দফতর ।