Mid-Day Meal: মিড-ডে মিলের চালে আরশোলা থেকে টিকটিকি, ইঁদুরের মলমূত্র! সেই নোংরা চালই খাচ্ছে পড়ুয়ারা…

প্রায় মাস খানেকের উপর সময় ধরে স্কুলের পড়ুয়ারা মিড ডে মিলে পোকা ধরা চাল খাচ্ছে। সেই চালে কি নেই!  পোকা , আরশোলা থেকে টিকটিকি ,  ইঁদুরের মল মূত্র সবই রয়েছে৷ সেই চালই ঝেড়ে ধুয়ে রান্না হয়ে পড়ুয়াদের খাওয়ার থালায় উঠছে। যদিওবা ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই স্কুল কর্তৃপক্ষ তথ্য সমেত জানিয়ে দেন সবটাই ফাঁসিদেওয়া বিডিও জানেন৷ বিগত মাসেই চাল পরিবর্তনের আবেদন জানিয়ে বিডিওকে চিঠি করা হয়েছে স্কুলের পক্ষ থেকে৷ অন্যদিকে বিডিও অবশ্য জানিয়ে দেয় , কাজ করার জন্য ইচ্ছে দরকার। চিঠি তারা করেছিলেন। চাল পরিবর্তনের কথাও জানিয়েছিলাম স্কুলকে ,  কিন্তু তাদের সময় হয়ে উঠেনি৷ দু পক্ষের একে অপরকে দোষারোপের বেড়াজালে পোঁকা ধরা চালই খেয়ে চলেছে পড়ুয়ারা। ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি মহাকুমা পরিষদের অন্তর্গত ফাঁসিদাওয়া উচ্চতর বিদ্যালযয়ে। জানা যায় , বেশ কিছুদিন থেকেই অভিযোগ ,  বিদ্যালয়ের মিড ডে মিলে খেতে পারছে না ছাত্ররা।খাওয়া মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন পোকামাকড় থেকে শুরু করে ইঁদুর, টিকটিকি, আরশোলার, মল মূত্র। এরপরেই মিড ডে মিলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। দ্বায়িত্বে থাকা রাধুনীদের অভিযোগ,  বিগত দুমাস ধরেই এ ধরনের মিড ডে মিল খাওয়ানো হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। 

মিড ডে মিলের দ্বায়িত্বে থাকা রাঁধুনি প্রভাতী সাহা মন্ডল জানান , “প্রায় দুমাস ধরে এই চালই রান্না করে খাওয়ানো হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক থেকে বিডিও সবাই বিষয়টি জানে। মাঝে বিডিও মিড ডে মিল পরিদর্শনে আসেন। তিনিও এই চালই দেখেছেন। বলেছিলেন পাল্টে দেবেন কিন্তু কোন পরিবর্তন হয়নি। পোঁকা ধরা চালই রান্না করছি আমরা।” স্থানীয় বাসিন্দা তথা অভিভাবক প্রবীর বিশ্বাস বলেন ,  “কয়েকদিন ধরেই স্কুলের বাচ্চারা মিড ডে মিল নিয়ে অভিযোগ করছিল। আজ একেবারে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। এই চাল কোন গবাদি পশুও খাবে না৷ এত বাজে চাল। বাচ্চারা অসুস্থ হলে তার দায় কে নেবে ? আমরা এর জবার স্কুলের কাছে চেয়েছি।”

স্কুলে অভিভাবক ও স্থানীয়দের বিক্ষোভের জেরে পাশের স্কুল থেকে দু বস্তা চাল নিয়ে এসে বাচ্চারদের ভালো চালে মিড ডে মিল রান্না করে দেওয়া হয় স্কুলের পক্ষ থেকে৷ তবে দীর্ঘদিন ধরে চাল কেন বাচ্চাদের পাতে পড়ছিল ?  প্রশ্নে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার বর্মন জানান ,  “বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত। তা সমাধানের চেষ্টাও করেছি। বিগত মাসে মিড ডে মিলের রাঁধুনিরা যখন চাল নিয়ে অভিযোগ করল সেই দিনই বিডিওকে চাল পরিবর্তনের কথা জানিয়ে চিঠি লিখি। বিডিও সরজমিনে তার তদন্ত করে গিয়েছে। চাল পাল্টে দেওয়ারও কথা বলেছে। কিন্তু কোন ফল মেলেনি। সেই চালই ধুঁয়ে পরিষ্কার করে শুকিয়ে বাচ্চাদের খাওয়ানো হচ্ছি। এটা অফিসিয়াল একটি বিষয় ,  তার বাইরে গিয়ে আমরা কাজ করতে পারি না।”

অন্যদিকে বিডিওকে এ বিষয়ে ফোন করা হলে ,  ফাঁসিদেওয়া বিডিও বিল্পব বিশ্বাস খানিকটা রেগে গিয়ে বললেন ,  “ফাঁসিদেওয়া স্কুলে এসে একবার দেখে যাবেন মাষ্টাররা স্কুলটাকে কি করেছে। পরিকাঠামোই ঠিক নেই স্কুলের। স্কুলের যে যত্ন নিতে হয় তা তারা ভুলেই গিয়েছে। ওনাকে অনেকবার চাল নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে৷ আগে থেকে চাল স্টক করে রেখেছে যার জন্য এই ঘটনা। আমি নিজেও দেখেছি। আজ চাল চেঞ্জ করে দেওয়া হয়েছে। ওরা কারও সাথে যোগাযোগই করে না। ওনাদের পরিকাঠামগত অবনয়ন ও মানসিক অবনয়ন দুটোই মারাত্মক খারাপ।” বিডিও সংযোজন “একটি চিঠিতে সবকিছু হয় না। ওনাদেরকে বলেছিলাম উন্নয়নের সমস্যা থাকলে জানান। আমার আওতায় না থাকলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। কিন্তু ওদের তরফ থেকে গাফিলতি রয়েছে। ওদেরও নূন্যতম দ্বায়িত্ব থাকে। ছোট দ্বায়িত্বও মাঝে মধ্যেই ভুলে যায় ওরা।”

ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলের ছুটে আসেন ফাঁসি দেওয়া অঞ্চলের প্রধান অনিমা বর্মন,তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখেন পাশাপাশি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান “বিষয়টি আমার জানা ছিল না।এ বিষয়ে ব্লকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের জানানো হবে। এটা উচিত কাজ হয়নি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.