প্রজাতন্ত্র দিবসের কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার ভারতে এলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। নয়াদিল্লির ‘কর্তব্যপথে’ কুচকাওয়াজে হাজির থাকার পাশাপাশি নয়াদিল্লি-প্যারিস দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রথমে রাজস্থানের জয়পুরে অবতরণ করেছেন মাকরঁ। সেখান থেকে তিনি যাবেন ‘গোলাপি শহরের’ অন্যতম দ্রষ্টব্য অম্বর দুর্গ দেখতে। হেঁটেই দুর্গে উঠবেন তিনি। এর পর ফরাসি প্রেসিডেন্টের গন্তব্য ‘বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্র’ যন্তর মন্তর। সেখানেই মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে তাঁর। হবে ‘রোড শো’। প্রসঙ্গত, বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন মানমন্দির যন্তর মন্তরের প্রতিষ্ঠাতা জয়পুরের রাজা সওয়াই জয় সিংহ। ১৭৩৪ সালে তাঁর আমন্ত্রণে সেখানে গিয়েছিলেন হুগলির চন্দননগরের দু’জন ফরাসি জেসুইটস পাদ্রি।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরে সন্ধ্যা সওয়া ৫টা নাগাদ যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন মোদী এবং মাকরঁ। প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্বে কোনও গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে এটিই মোদীর শেষ বৈঠক। গত জুলাই মাসে ফ্রান্সে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ফ্রান্সের জাতীয় দিবস অর্থাৎ বাস্তিল দিবসের উদ্যাপন অনুষ্ঠানের বিদেশি অতিথি হিসাবে ছিলেন তিনি। এ বার মাকরঁ এলেন ভারতের ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি হয়ে।
মাকরঁকে ধরলে মোট পাঁচ জন ফরাসি রাষ্ট্রনেতা ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি হয়েছেন— ভ্যালেরি গিসকার্ড ডি’ইস্টাইং (১৯৮০), জাক শিরাক (১৯৯৮), নিকোলাস সারকোজি (২০০৮) এবং ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ (২০১৬)। এ ছাড়া ১৯৭৬ সালে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি ছিলেন শিরাক।
কূটনৈতিক মহলের মতে কাশ্মীর সমস্যা, পরমাণু পরীক্ষা বিতর্ক বা চিনের সঙ্গে সংঘাতের মতো অনেক পরিস্থিতিতে বহু দশক ধরেই ফ্রান্সকে পাশে পেয়েছে ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের সমর্থনে ফ্রান্সই প্রথম এগিয়ে এসেছিল। তা ছাড়া ১৯৭৪ এবং ১৯৯৮— এই দু’বছরে ভারতের পরমাণু শক্তি পরীক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ পশ্চিমি দেশগুলি যখন নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তাতে যোগ দেয়নি ফ্রান্স। শুধু তা-ই নয়, ২০২০ সালে চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদের সময় ফ্রান্সই প্রথম ভারতকে সামরিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিল। মাকরেঁর দু’দিনের ভারত সফরে আরও দৃঢ় হবে সেই মৈত্রীর বন্ধন।