‘হিন্দি বুঝতে পারছি না’! মোদী-শাহের দণ্ডসংহিতা নিয়ে আপত্তি মাদ্রাজ হাই কোর্টের বিচারপতির

সংসদের প্রায় বিরোধীশূন্য শীতকালীন অধিবেশনে কোনও আলোচনা ছাড়াই নরেন্দ্র মোদী সরকারের পাশ করানো দণ্ডসংহিতা সংক্রান্ত তিনটি বিল নিয়ে এ বার আপত্তি তুললেন মাদ্রাজ হাই কোর্টের বিচারপতি বিচারপতি এন আনন্দ ভেঙ্কটেশ। বুধবার তাঁর বেঞ্চে একটি শুনানি চলাকালীন বিচারপতি ভেঙ্কটেশের মন্তব্য, ‘‘আমি হিন্দি বুঝতে পারছি না। তাই ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি বা আইপিসি), ‘কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর’ (ফৌজদারি দণ্ডবিধি বার সিআরপিসি)-র মতো শব্দবন্ধই ব্যবহার করব।’’

মঙ্গলবার গুজরাটের গান্ধীনগরে ‘ন্যাশনাল ফরেন্সিক সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি’র অপরাধ আইন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আলোচনাচক্রে দ্রুত দেশের আইনশৃঙ্খলার খোলনলচে বদলে দেওয়ার তিনটি আইন চালুর কথা জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘এই তিন আইন কার্যকর হলে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক ফৌজদারি আইন হবে ভারতেরই। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে যাবে।’’ তার পরেই এই প্রতিক্রিয়া এল মাদ্রাজ হাই কোর্টের এক বিচারপতির তরফে।

প্রসঙ্গত, গত ১১ অগস্ট সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করে জানিয়েছিলেন, ১৮৬০ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ দিয়ে। ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ (ফৌজদারি দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ দ্বারা এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’ (ভারতীয় সাক্ষ্য আইন) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য বিল’-এ।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তিন নতুন আইনের খসড়া তৈরির পরেই তীব্র আপত্তি তুলেছিল বিরোধী দলগুলি। তাদের অভিযোগ ছিল, খোলনলচে বদলে ব্রিটিশ জমানার রাষ্ট্রদ্রোহ আইন আরও কঠোর করতে সক্রিয় হয়েছে মোদী সরকার। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাড়াহুড়ো করে বিল পাশের চেষ্টার বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু তা উপেক্ষা করেই শীতকালীন অধিবেশনে পাশ করানো হয়েছিল ওই সংক্রান্ত তিনটি বিল। বিচারপতি ভেঙ্কটেশ জানিয়েছেন, আইপিসি এবং সিআরপিসির হিন্দিতে যে নামকরণ হয়েছে, তা অ-হিন্দিভাষীদের পক্ষে বোঝা কঠিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.