বহু চেষ্টা সত্ত্বেও কলকাতায় নগদেই চলছে বেশির ভাগ পার্কিং ফি আদায়, কী বলছে পুরসভা?

কলকাতা শহরের বিভিন্ন পার্কিং লটে আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বছরখানেক আগে অনলাইনে টাকা জমা করার ব্যবস্থা চালু করেছিল কলকাতা পুরসভা। কিন্তু অভিযোগ, এক বছর পরেও বেশির ভাগ পার্কিং সংস্থার কর্মীরা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নগদে পার্কিং ফি আদায় করছেন। পুরসভার পার্কিং বিভাগ দাবি, অনলাইন ব্যবস্থা পুরোপুরি সফল হতে আরও সময় লাগবে।

শহরের বিভিন্ন পার্কিং লটে ইচ্ছেমতো টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এক এক এলাকায় গাড়ি রাখার খরচও এক এক রকম। আবার পুরসভার অনুমোদন ছাড়াও পার্কিং ব্যবসা চালানোর অভিযোগ রয়েছে বহু জায়গায়। পার্কিং ফি আদায়ে স্বচ্ছতা আনতে পুরসভার তরফে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করা হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। সব কিছু খতিয়ে দেখার পরে গোটা ব্যবস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে অনলাইনে পার্কিং ফি আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই লক্ষ্যে গত বছরের জানুয়ারিতে বরাতপ্রাপ্ত সমস্ত পার্কিং সংস্থার হাতে ই-পস যন্ত্র তুলে দিয়েছিল পার্কিং বিভাগ। বর্তমানে প্রায় ৩০টি পার্কিং সংস্থার হাতে পুরসভার দেওয়া শ’পাঁচেক ই-পস যন্ত্র রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও অভিযোগ উঠেছে, বেশির ভাগ পার্কিং সংস্থার কর্মীরা মোট পার্কিং ফির মাত্র ৪০ শতাংশ অনলাইনে আদায় করছেন। বাকি ৬০ শতাংশ আদায় নগদেই চলছে। অনলাইনে পার্কিং ফি আদায় না হওয়া নিয়ে পুরসভার পার্কিং দফতরে গত এক বছরে বার বার অভিযোগ এসেছে। সমস্যার সমাধানে পার্কিং সংস্থাগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করেছেন পুর পার্কিং দফতরের কর্তারা। অভিযোগ, এত কিছুর পরেও কার্যত সব চেষ্টাই নিষ্ফলা! পার্কিং সংস্থাগুলির কর্ণধারেরা দাবি করছেন, রোজ শহরে কলকাতার বাইরে থেকেও প্রচুর গাড়ি আসে। গ্রামাঞ্চল থেকে আসা সাধারণ মানুষদের বেশির ভাগই অনলাইনে টাকা দেওয়ায় অভ্যস্ত নন। ফলে, বাধ্য হয়েই তাঁদের জন্য নগদে পার্কিং ফি আদায় করতে হচ্ছে।

প্রশ্ন উঠেছে, এ ভাবে নগদে আদায় চলতে থাকলে দুর্নীতিপূর্ণ পুরনো ব্যবস্থা পাল্টাবে কী ভাবে? দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে শহরের একটি পার্কিং সংস্থার কর্ণধার জগদীশ চৌধুরী বললেন, ‘‘ই-পস মেশিনে নগদে পার্কিং ফি আদায়ের কোনও ব্যবস্থা নেই। সেই ব্যবস্থা চালু করা দরকার। কারণ, সকলে অনলাইন পরিষেবায় স্বচ্ছন্দ নন।’’ যদিও কলকাতা পুরসভার পার্কিং বিভাগের এক আধিকারিক বললেন, ‘‘পার্কিং ফি আদায়ে অনলাইন
ব্যবস্থাই চালু থাকবে। ই-পস যন্ত্রে কোনও ভাবেই নগদে আদায়ের সুবিধা রাখা যাবে না। তা হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পার্কিং ফি আদায় নগদেই চলবে। সেখানে অনলাইনে টাকা নেওয়ার ব্যবস্থা রাখার কোনও অর্থই থাকবে না।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.