উদ্বোধনের ৪ দিন আগেই অযোধ্যার রামমন্দিরের ডাকটিকিট প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রামমন্দিরের উদ্বোধন। রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তার আগে এদিন রামমন্দিরের ডাকটিকিট প্রকাশ করলেন মোদী। একইসঙ্গে সারা বিশ্বে ভগবাম রামকে নিয়ে যত ডাকটিকিট রয়েছে, সেই সম্বলিত একটি বইও প্রকাশ করলেন মোদী।
নয়া এই ডাকটিকিটের নকশায় রয়েছে রামমন্দির, চৌপাই মঙ্গল ভবন অমঙ্গল হরি, সূর্য, সরযূ নদী ও মন্দিরের ভিতর ও বাইরের মূর্তি। রাম মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে মোট ৬টি ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেবদেবীকে নিয়ে সেই ডাকটিকিট। রামমন্দির, ভগবান গণেশ, বীর হনুমান, জটায়ু, কেভাত্রাজ ও মা শবরীকে নিয়ে রয়েছে ডাকটিকিটগুলি। সূর্যের রশ্মি এবং চৌপাইয়ের সোনার পাতা ডাকটিকিটকে অন্যমাত্রা যোগ করেছে। পাঁচটি ভৌত উপাদান যেমন আকাশ, বায়ু, আগুন, পৃথিবী এবং জল- যা ‘পঞ্চভূত’ নামে পরিচিত, বিভিন্ন নকশা উপাদানের মাধ্যমে তা প্রতিফলিত হয়েছে। ডাকটিকিটের মধ্যে পঞ্চভূতের নিখুঁত সামঞ্জস্য রয়েছে।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাকটিকিট সম্বলিত বইটি ভগবান রামের আন্তর্জাতিক স্তরে যে আবেদন, তা প্রদর্শনের একটি প্রয়াস। ৪৮ পৃষ্ঠার এই বইতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, কানাডা, কম্বোডিয়া এবং জাতিসংঘের মতো সংস্থা সহ ২০টিরও বেশি দেশের ডাকটিকিট রয়েছে। অযোধ্যার মন্দিরে রামকথা কুঞ্জ জুড়ে থাকবে বাঙালি শিল্পীর শিল্পকলাও। রাজা দশরথের পুত্রাভিষেক যজ্ঞ থেকে রামচন্দ্রের রাজ্যাভিষেক পর্যন্ত মোট ১০০টি খণ্ডে ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের জীবনী তুলে ধরা হবে অযোধ্যার রাম মন্দিরের সম্মুখে। প্রতিটি খন্ডচিত্র তুলে ধরা হবে মূর্তির মাধ্যমে।
জন্ম অসমের কাছারে হলেও বর্তমানে নদীয়ার বাসিন্দা রঞ্জিত মন্ডল অযোধ্যায় পড়ে রয়েছেন কয়েক বছর ধরে। থাকবেন আরও কয়েক বছর। রামায়ণের ১০০টি খন্ডচিত্রের মধ্যে ৫৪টি তৈরি করে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই। তৈরি করতে হবে আরও ৪৬টি খন্ড। বেশ কয়েক বছর আগে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তৎকালীন সভাপতি অশোক সিঙ্ঘলের চোখে পড়ে যান রঞ্জিত। তারপর রঞ্জিতের ডাক পড়ে অযোধ্যায়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যরা জানাচ্ছেন, নির্মীয়মান রাম মন্দিরের সামনে তৈরি হবে রামকথা কুঞ্জ। সেই কুঞ্জের মূল আকর্ষণ হবে রামায়ণের এই ১০০টি খন্ড।
২০১৩ সাল থেকে রামায়ণের এই খন্ডচিত্রের জন্য মূর্তি করছেন রঞ্জিত মন্ডল। সিমেন্ট, বালি, রড, কিছু রাসায়নিক এবং রং ব্যবহার করে মূর্তি করছেন রঞ্জিত। এখানে উল্লেখযোগ্য, ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যায় রামমন্দির গড়ার পক্ষে রায় দিয়েছে। কিন্তু বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তৎকালীন সভাপতি অশোক সিংহল রঞ্জিতকে এই মূর্তি গড়ার জন্য এনেছেন ১১ বছর আগে ২০১৩ সালেই।