মেয়ের ফেসবুক সূত্রে আলাপ। সেখান থেকে বন্ধুত্ব, বন্ধুত্ব গড়িয়ে ‘প্রেম’। এ বার স্ত্রীর মর্যাদা পেতে তরুণ ‘প্রেমিকের’ বাড়ির সামনেই ধর্নায় বসলেন বছর বিয়াল্লিশের এক বধূ। মুর্শিদাবাদের ডোমকলের ঘটনা। ওই মহিলার অভিযোগ, ওই ১৮ বছরের তরুণ তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও সম্প্রতি অন্য এক জনকে বিয়ে করেছেন। তাই নিজের ‘অধিকার’ বুঝে নিতে তিনি ওই তরুণের বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছেন। যদিও ওই বধূর সঙ্গে প্রেমের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন তরুণ। তাঁর দাবি, ফেসবুকে বন্ধুত্ব ছাড়া ওই মহিলার সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক তাঁর ছিল না। মহিলার ধর্না তুলতে ওই তরুণের পরিবারের লোকজন তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন বলেও অভিযোগ। ওই বধূর এক কন্যা এবং এক পুত্রসন্তান রয়েছে। ধর্নায় বসেছেন শুনে মায়ের পাশে এসে দাঁড়াননি তারাও।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের ডোমকল থানা এলাকার জোড়গাছার ওই বিবাহবিচ্ছিন্না বধূর মেয়ের সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব হয় বাবলাবনার বাসিন্দা তরুণের। মাঝে মধ্যেই মেয়ের ফেসবুকে মেসেজ আসত ওই তরুণের। মেয়ের অনুপস্থিতিতে সেই সব মেসেজ দেখতেন ওই বধূ। এ ভাবেই মেয়ের পাশাপাশি মায়ের সঙ্গেও বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে তরুণের। বধূর মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলেও তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব থেকে যায় ওই তরুণের। সেখান থেকে তাঁদের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্কও গড়ে ওঠে। কিন্তু সম্প্রতি তাঁদের সম্পর্কের কথা জানতে পেরে যান তরুণের পরিবারের সদস্যরা। তড়িঘড়ি ছেলের বিয়ে দিয়ে দেন তাঁরা। এর পর থেকেই তরুণ ‘প্রেমিকের’ বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগে সরব হয়েছেন ওই বধূ। তাঁর দাবি, ওই তরুণ তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি রাখেননি। শনিবার থেকে তরুণের বাড়ির সামনে ধর্নাতেও বসেছেন ওই বধূ। তাঁকেও স্ত্রীর মর্যাদা দিতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন তিনি। ওই বধূ বলেন, ‘‘ফেসবুক থেকে পরিচয় হয়। তার পর প্রেম। আমি বয়স না দেখেই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। আমাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এখন অন্য জায়গায় বিয়ে করেছে। আমাকেও বিয়ে করতে হবে।’’
অন্য দিকে, ছেলের সঙ্গে ওই মহিলার সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেও বয়সের কারণে বিয়ে এড়িয়েছেন বলে দাবি তরুণের পরিবারের। তরুণের মায়ের দাবি, ‘‘ওই মহিলা আমার ছেলেকে ফাঁসাতে চেয়েছিল। সম্পর্ক ছিল, এ কথা জানতে পেরেই তড়িঘড়ির ছেলের বিয়ে দিয়েছি। আমার ছেলে ওর মেয়ের বয়সি। কী করে ও আমার ছেলের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের দাবি করে?’’ এই প্রসঙ্গে ওই তরুণ বলেন, ‘‘ওই বধূর সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল। তার বেশি কিছু নয়! বিয়ের প্রশ্নই উঠে না।’’
মায়ের ধর্নায় বসার সিদ্ধান্তে তাঁর পাশে এসে দাঁড়াননি পুত্র এবং কন্যা। মহিলার মেয়ের কথায়, ‘‘মায়ের জন্য লজ্জায় এলাকায় মুখ দেখাতে পারছি না। মা যা খুশি করুক। আমাদের কিছু করার নেই।’’ তবে স্থানীয়দের অনুরোধ এবং পরিবারের তরফে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া সত্ত্বেও ওই তরুণকে বিয়ের দাবিতে অনড় বধূ। সেই ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।