নতুন শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন স্কুলগুলিতে পড়ুয়া ভর্তির প্রক্রিয়া চলছে। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী উচ্চ বিদ্যালয়গুলি পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ভর্তির ক্ষেত্রে ২৪০ টাকা ফি নিতে পারে। অভিযোগ, সেখানে মালবাজার এবং অন্য কিছু এলাকায় পড়ুয়াদের ভর্তির ফি ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে লিখিতভাবে কোন অভিযোগ জমা না পড়লেও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া অভিভাবক এবং পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়েছে। বিভিন্ন স্তর থেকেই সরকার নির্ধারিত মূল্যেই পড়ুয়াদের ভর্তি করার দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে।
মাল শহর এবং পার্শবর্তী এলাকাগুলিতে মূলত চা বাগান এবং গ্রামাঞ্চলের পড়ুয়ারা পড়াশোনা করে। এদের অনেকেরই আর্থিক সঙ্গতি ভালো নয়। বর্তমানে বিভিন্ন শ্রেণীতেই ভর্তির প্রক্রিয়া চলছে। মাল শহরের বিভিন্ন স্কুলের ক্ষেত্রে ৪০০,৫০০, ৭০০ , ১২০০ এবং ১৩০০ টাকার মতো ফি নেওয়া হচ্ছে। মূলত বিদ্যালয়গুলির বিদ্যুৎ বিল প্রদান, সরস্বতী পুজোর চাঁদা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যয়ের জন্যই এই অতিরিক্ত ফি নেওয়া হচ্ছে বলে বিদ্যালয়গুলির সাফাই।
পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জলপাইগুড়ির জেলার অন্যতম শীর্ষ নেতা অঞ্জন দাস বলেন, ‘আমরা এখনও অতিরিক্ত ফি নেওয়ার বিষয়ে লিখিতভাবে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই খতিয়ে দেখে দেখা হবে।’ ছাত্র এবং সামাজিক সংগঠনগুলিও অতিরিক্ত ফির নেওয়ার প্রতিবাদ করেছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মাল শহর কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এলাকার বিদ্যালয় গুলিতে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়ারাই পড়াশোনা করে। আমরা বিদ্যালয়গুলিতে দাবি জানাব যাতে কোনভাবেই অতিরিক্ত ফি না নেওয়া হয়।’
বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআই নেতা শুভম নন্দী বলেন, আমরা পড়ুয়াদের থেকে অতিরিক্ত ফি নেওয়ার প্রতিবাদ জানাব। মাল শহরের দুটি হিন্দি মাধ্যমে স্কুলের বিএল উচ্চ বিদ্যালয় এবং পুষ্পিকা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য জানা যায়নি। তবে বিদ্যালয় দুটি সূত্রে জানা গেছে ,বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ এবং অন্যান্য ক্ষেত্র পরিচালনার জন্য কিছু অতিরিক্ত ফি সিদ্ধান্ত মোতাবেক নেওয়া হয়।
মাল শহরের সুভাষিনী উচ্চতর বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার ড: সন্মিতা দাস বলেন, ‘আমরা সরকার নির্দেশিত ২৪০ টাকায় ডেভেলপমেন্ট ফি হিসেবে নিচ্ছি। ছাত্রীরা সরস্বতী পূজো আয়োজন করে। এছাড়া টাই,বেল্ট, আইডেন্টি কার্ড ইত্যাদির জন্য কিছু অর্থ নেওয়া হচ্ছে। দুস্থ পড়ুয়াদের আর্থিক বিষয় খতিয়ে দেখে শুধুমাত্র ডেভেলপমেন্ট ফি ২৪০ টাকাই নেওয়া হচ্ছে। মাল আদর্শ বিদ্যাভবনের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক উৎপল পাল বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে কোন সুইপার নেই। অতিথি শিক্ষকের মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কিছু ক্লাস পরিচালনা করতে হচ্ছে। অতিরিক্ত বিদ্যুতের বিলও আসছে। ফলে স্বরসতী পুজো, সুইপারের খরচ, ডিজিটাল আইডেন্টি কার্ড ইত্যাদি ক্ষেত্রে কিছু অর্থ নেওয়া হচ্ছে।