টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হতে বাকি ঠিক ১৪২ দিন। ১ জুন থেকে এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হবে। কিন্তু তার আগে ভারতীয় দল টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পাবে মাত্র তিনটি ম্যাচে। তা-ও আবার আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি কি তাতে হয়ে যাবে? দল গঠনে অসুবিধা হবে না তো? একাধিক প্রশ্নের মুখে ভারতীয় দল। কিন্তু উত্তর পাওয়া যাবে কবে?
ওপেনার কারা?
২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ভারতের ২০ ওভারের দলে ফেরানো হয়েছে রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলিকে। তাঁরা দলে ফেরায় অবশ্যই দলের ব্যাটিং শক্তিশালী হবে। কোচ রাহুল দ্রাবিড় জানিয়ে দিয়েছেন যে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ওপেন করবেন রোহিত এবং যশস্বী জয়সওয়াল। তাঁরাই ওপেনার হিসাবে দলের প্রথম পছন্দ? শুভমন গিল কি তাহলে জায়গা পাবেন না? যশস্বী এবং রোহিত ওপেন করলে বাঁহাতি এবং ডানহাতি জুটি ওপেন করবে ভারতের হয়ে। কোচ দ্রাবিড় বলেন, “এখানে রোহিত এবং যশস্বী ওপেন করবেন। তবে বিশ্বকাপে তাঁরাই ওপেন করবেন কি না এখনই বলা যাবে না। সুযোগ রয়েছে দেখে নেওয়ার। দলের জন্য যে জুটি ভাল হবে সেটাই খেলবে। তবে যশস্বী ভাল খেলছে। আর ও খেললে বাঁহাতি-ডানহাতি জুটি তৈরি করা যায়।”
কী হবে শুভমনের?
যশস্বী সুযোগ পেলে বসতে হবে শুভমনকে। শুক্রবার বিরাট খেলবেন না বলে তিন নম্বরে হয়তো দেখা যাবে তাঁকে। কিন্তু বিরাট ফিরলে আবার হয়তো তাঁকে বসতে হবে। দ্রাবিড় আবার রোহিত-বিরাট ওপেনিং জুটি নিয়ে সম্ভাবনা তৈরি করে রাখলেন। তিনি বলেন, “এখনও ঠিক হয়নি রোহিত-বিরাট জুটি করবে কি করবে না। আমরা জানি বিশ্বের যে কোনও বোলারের বিরুদ্ধে এই দুই ব্যাটার খেলতে পারে। সেই ক্ষমতা ওদের আছে। শুধু বাঁহাতি-ডানহাতি জুটি হলেই তো হবে না, বিভিন্ন পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষমতাও প্রয়োজন। সেটা রোহিত-বিরাটের আছে।”
কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে শুভমন পিছনের সারিতে চলে গেলেন। বিশ্বকাপে ভাল খেলেছিলেন। কিন্তু সেটা ছিল এক দিনের বিশ্বকাপ। টি-টোয়েন্টিতে ভারতীয় দল রোহিতের সঙ্গী হিসাবে যশস্বীর উপরেই ভরসা রাখছেন। এর পিছনে অবশ্যই কারণ আইপিএল। আর এ বারের বিশ্বকাপে এই আইপিএল-ই হতে চলেছে বিশ্বকাপের দল নির্বাচনের অন্যতম মাধ্যম। দ্রাবিড় বলেন, “গত বছর আমাদের কাছে প্রাধান্য ছিল এক দিনের বিশ্বকাপের। সেই ধরনের ক্রিকেটই আমরা বেশি খেলেছি। কিন্তু এ বারে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে আমরা খুব বেশি ম্যাচ পাব না। তৈরি হওয়ার জন্য খুব বেশি সময় পাব না। আমাদের তাই আইপিএলের উপর ভরসা করতে হবে। আমরা একসঙ্গে দল হিসাবে হয়তো খেলতে পারব না। কিন্তু পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে।”
আইপিএল দেখে দল নির্বাচন?
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে চোটের কারণে দলে নেই হার্দিক পাণ্ড্য এবং সূর্যকুমার যাদব। দলে রাখা হয়নি যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ, রবীন্দ্র জাডেজা, লোকেশ রাহুলের মতো ক্রিকেটারদের। ফলে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলা দল দেখে বিশ্বকাপের দল বাছাই করা মুশকিল। আইপিএল দেখেই দল নির্বাচন করা হবে। দ্রাবিড় বলেন, “সব সময় সব ক্রিকেটারকে একসঙ্গে পাওয়া মুশকিল। বিশেষ করে যে ক্রিকেটারেরা তিনটে ফরম্যাটেই ভারতের হয়ে খেলে। এই সিরিজ়ে যেমন বুমরা, সিরাজ, জাডেজা নেই। কারণ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ় রয়েছে। গত দু’বছর ধরে তাই ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দিয়ে খেলানো হচ্ছে।”
কী হবে ঈশানের?
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ঈশান কিশন পর্ব। মনে করা হচ্ছে তাঁর ব্যবহারে খুশি নন নির্বাচকেরা। দ্রাবিড় যদিও তা মানতে চাননি। তিনি জানিয়েছেন ঈশান বিশ্রাম চেয়েছিলেন। সেই কারণে দলে রাখা হয়নি তাঁকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কি সুযোগ পাবেন ঈশান? দ্রাবিড় বলেন, “এই সিরিজ়ে খেলার জন্য তৈরি নয় ঈশান। দক্ষিণ আফ্রিকায় ছুটি চেয়েছিল ও। তার পর আর কিছু জানায়নি। আমি বিশ্বাস করি ঈশান ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে আবার নির্বাচকদের নজর কেড়ে নেবে।” যদিও ঝাড়খণ্ডের হয়ে ঈশান খেলবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ে সুযোগ না পেলে ঈশান হয়তো সোজাসুজি আইপিএল খেলবেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল বাছতে হলে তাই এখনও অনেকগুলি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে নির্বাচকদের। দল তৈরি হলেও একসঙ্গে ম্যাচ খেলা হবে না সেই দলের।