শ্বাসরোধ করে এক বধূকে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। বুধবার এই ঘটনায় জোর উত্তেজনা পুরাতন মালদহের মঙ্গলবাড়ি অঞ্চলে। বধূর মৃত্যুর পর গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর স্বামীকে। তবে বাকি অভিযুক্তেরা সবাই পলাতক। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতার নাম আনজুরা খাতুন। মালদহের রতুয়ার এলাহাবাদ গ্রামে তাঁর বাড়ি। মাস ছয় আগে মঙ্গলবাড়ির সামিরুল শেখ নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের আগে থেকে চেনাজানা দু’জনের। দুই পরিবারের মতেই ভালবাসার সম্পর্ক পরিণতি পায়। কিন্তু আনজুরার বাপের বাড়ির অভিযোগ, বিয়ের সময় তাঁদের কাছে পণ দাবি করেছিলেন পাত্রপক্ষ। বিয়েতে নগদ আশি হাজার টাকা সহ-সোনার অলঙ্কার যৌতুক দেন তাঁরা। কিন্তু তার পরেও টাকা চেয়ে মেয়েকে চাপ দেওয়া হত বলে অভিযোগ বাপের বাড়ির। এমনকি, আনজুরা যখন জানান যে তিনি বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনবেন না বা বাপের বাড়ি থেকে টাকা নেবেন না, তাঁর উপর শারীরিক এবং মানসিক নিগ্রহ শুরু হয় বলে অভিযোগ।
মৃতার বাপের বাড়ির এক সদস্যের দাবি, মঙ্গলবার মাকে ফোন করেছিলেন আনজুরা। কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, তাঁকে মারধর করেছেন স্বামী। মেয়েকে সান্ত্বনা দেন মা। কিন্তু ওই ফোনের ঘণ্টাখানেক পর আবার একটি ফোন পান আনজুরার বাপের বাড়ির লোকজন। ফোনের ওপ্রান্তে ছিলেন জামাই। তিনি জানান, আনজুরা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি আনজুরার শ্বশুরবাড়ি আসেন সবাই। কিন্তু বাড়ির কোনও সদস্যকে পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। বুধবার মৌলপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক ভাবে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত করা হয়। তার পর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
ইতিমধ্যে আনজুরার বাপের বাড়ির তরফে জামাই এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে বধূর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিরা পলাতক। মৃতার এক আত্মীয় আজমল হোসেন বলেন, ‘‘আমাদের মেয়ে আত্মহত্যা করতেই পারে না। ওকে খুন করা হয়েছে। মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারও ওকে মারধর করা হয়েছিল। তার পরেই খবর দেওয়া হয় যে, ও আত্মহত্যা করেছে। আমরা জামাই এবং তাঁর বাবা-মায়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছি।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে মালদহ থানার পুলিশ জানিয়েছে, দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।