১৭ ঘণ্টা টানা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইডির হাতে গ্রেফতার বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর, রাতেই সিজিও-তে

তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছিল সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ। প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ রেশন দুর্নীতি মামলায় উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করল ইডি। সন্দেহজনক লেনদেন এবং বক্তব্যে অসঙ্গতির কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। শুক্রবার রাতেই বনগাঁ থেকে শঙ্করকে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন ইডির আধিকারিকেরা। গন্তব্য সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স। যেখানে ইডির দফতর রয়েছে। শনিবার শঙ্করকে আদালতে হাজির করিয়ে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাতে পারে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এমনটাই ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। গ্রেফতারের পর শঙ্কর বলেন, ‘‘আমি কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে সহযোগিতা করব।’’

শঙ্করকে গ্রেফতার করে তাঁর বনগাঁর বাড়ি থেকে তাঁকে নিয়ে বেরনোর সময় বিক্ষোভের মুখোমুখি হতে হয় ইডিকে। যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁদের সামনের সারিতেই ছিলেন মহিলারা। ইট ছোড়া হয় ইডির সঙ্গে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়িতেও। ইডি ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর উদ্দেশে চলে লাগাতার গালিগালাজ। কেন্দ্রীয় বাহিনী লাঠিচার্জ করে বলেও অভিযোগ। ইডি সূত্রে খবর, শঙ্করের শ্বশুরবাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। ইডির দাবি, নথিপত্র ঘেঁটে লেনদেন সংক্রান্ত যে সকল তথ্য পাওয়া গিয়েছে তা সন্দেহজনক।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ বনগাঁর শিমুলতলায় শঙ্করের শ্বশুরবাড়িতে হানা দেয় ইডি। প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে তল্লাশি চলে। পরে শঙ্করের বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সাত জন আধিকারিক। এর পর ফের তাঁর শ্বশুরবাড়িতে যায় ইডির একটি দল। সেখানে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তল্লাশি চলে। ইডি সূত্রের দাবি, শঙ্করের শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এর পরেই ফের শঙ্করের বাড়িতে আসনে ইডির গোয়েন্দারা। সেখান থেকেই রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ গ্রেফতার করা হয় শঙ্করকে।

অন্য দিকে, শঙ্করের স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্য তাঁর স্বামীর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বলেন, “সকাল সাড়ে সাতটা থেকে তল্লাশি চলছে। ব্যবসার কাগজপত্রই দেখেছেন ওঁরা সারা দিন ধরে। আমরা সবরকম সহযোগিতা করেছি। হঠাৎ রাত ১২টা নাগাদ এক অফিসার এলেন। একটা কাগজ দেখিয়ে বললেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিঠি এটা। তার ভিত্তিতেই ওঁকে (শঙ্কর) গ্রেফতার করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হল ওঁকে।”

জেলার রাজনীতিতে শঙ্কর একটা সময়ে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। জ্যোতিপ্রিয় এখন রেশনকাণ্ডে গ্রেফতার হয়ে ইডির হাতেই বন্দি। জ্যোৎস্না বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দলের জেলা সভাপতি ছিলেন। সেই সূত্রে তিনিও আসতেন। আমরাও যেতাম। তার জন্য গ্রেফতার করতে হবে!’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.