কাকিমার একাধিক বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ভাসুরের মেয়ে জেনে যাওয়ায় জেরেই খুন হতে হয় সিমরন সহ একই পরিবারের তিনজনকে। গ্রেফতার অভিযুক্ত কাকিমা।
গত ১০ নভেম্বর পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসা থানার পানাগড়ের রেল পাড়ের সারদা পল্লীতে রহস্যজনকভাবে খুন হয় একই পরিবারের তিনজন। খুনের প্রায় দুই মাস পর পুলিস মূল অভিযুক্ত কাকিমা রিঙ্কি বিশ্বকর্মাকে গ্রেফতার করে।
পানাগড়ের রেলপাড়ে ধনঞ্জয় বিশ্বকর্মার অনুপস্থিতিতে তাঁর মেয়ে সিমরন, শাশুড়ি সীতা দেবী ও শ্যালক সনু বিশ্বকর্মার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকা জুড়ে।
সেই সময়ে ধনঞ্জয়বাবু তার স্ত্রীকে নিয়ে অসমে মেয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। ছোট মেয়ে সিমরন বাড়িতেই ছিলেন। সিমরনের দিদিমা সীতাদেবী ও মামা সোনু তাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সিমরনের কাকিমা রিঙ্কি বিশ্বকর্মা ও কাকু রাজা বিশ্বকর্মার বাড়িও দাদার বাড়ির পাশেই। একই পাঁচিলের মাঝে দুই ভাইয়ের বাড়ি। বাড়িতে একটি পোষ্যও ছিল। কিন্তু খুনের ঘটনার সময়ে কোনও চিৎকার করেনি সেই পোষ্যও। এখানেই সন্দেহ হয় পুলিসের।
পরিচিত কেউ এই খুনের সঙ্গে যুক্ত মনে করে তদন্ত শুরু করে পুলিস। সিমরনের দুটি মোবাইল ফোন খুনি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় সন্দেহ আরও তীব্র হয় পুলিসের। সেই মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন করা ও একাধিকজনকে ধারাবাহিক জেরা করে পুলিস। এমনকি ঝাড়খণ্ডেও এই খুনের হদিস পেতে হানা দেয় পুলিস। তারপর তারা নিশ্চিত হয় এই খুনের সঙ্গে কাকিমার যোগ রয়েছে।
তারপরেই কাকিমা রিঙ্কি বিশ্বকর্মাকে জেরা করে এই খুনের কারণ জানতে পারে পুলিস। খুনের প্রায় ছয় মাস আগে সিমরন কাকিমার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের একাধিক নগ্ন ছবি ও ভিডিয়ো ফাঁস করে দেন পরিবারের মধ্যে। বিভিন্ন পুরুষ ঢুকছে কাকিমার ঘরে তার প্রতিবাদও করেছিলো সিমরন। এছাড়াও কাকিমার উপর নজরদারি করতে কাকিমার মোবাইলে একটি বিশেষ সফটওয়্যার ঢুকিয়ে দিয়েছিল সিমরন।
পরে তা জেনেও যায় অভিযুক্ত রিঙ্কি বিশ্বকর্মা। এরপরই সিমরনের উপর তীব্র রোষ তৈরি হয় রিঙ্কির। পরিচিত কাউকে দিয়ে সিমরনকে খুনের ছক কষে রিঙ্কি। যাদের সঙ্গে রিঙ্কির বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল তাদের দিয়েই খুন করানো হয়েছে বলে পুলিসের অনুমান। মঙ্গলবার রাতে পুলিস রিঙ্কি বিশ্বকর্মাকে গ্রেফতার করে।
বুধবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে আদালত অভিযুক্তের ১০ দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। রিঙ্কি বিশ্বকর্মাকে পুলিসি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই ঘটনায় আসল খুনিকে গ্রেফতার করে।