গত সপ্তাহে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (Mumbai Indians) বিরাট ঘোষণা চমকে দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট অনুরাগীদের! আইপিএলের অন্য়তম সফল ফ্র্যাঞ্চাইজি জানিয়েছিল যে, নীল সাম্রাজ্য়ে এবার রোহিত (Rohit Sharma) যুগের অবসান! মুম্বইয়ের মসনদে এখন থেকে হার্দিক পাণ্ডিয়া (Hardik Pandya)। চব্বিশের আইপিএলে (IPL 2024) হার্দিকের নেতৃত্বেই খেলবে পাঁচবারের চ্য়াম্পিয়ন টিম। রোহিতকে সরিয়ে দেওয়ার পরেই সমাজমাধ্য়মে আগুন জ্বলে যায়। লক্ষ লক্ষ সমর্থক এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। তবে শনিবার অর্থাৎ আজ যে খবর চলে এল, তা ফের একবার চমকে দেওয়ার মতোই। জানা যাচ্ছে যে, গোড়ালির চোটের জন্য় নাকি হার্দিক আসন্ন আইপিএল খেলতে পারবেন না। তাহলে কি ফের ক্য়াপ্টেনের হটসিটে রোহিতই!
বিশ্বকাপ খেলা চলাকালীনই হার্দিকের চোট লেগেছিল। সেই চোটের জন্য় তিনি পুরো বিশ্বকাপই খেলতে পারেননি। তাঁর পরিবর্তে দলে নেওয়া হয়েছিল প্রসিধ কৃষ্ণাকে। এমনকী বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরেও হার্দিক ফিট হতে পারেননি। তাঁর পক্ষে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টি-২০ সিরিজ খেলা সম্ভব হয়নি। এমনকী দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে চলতি তিন ফরম্য়াটের লড়াইতেও তিনি নেই। হার্দিকের ফিটনেসের প্রসঙ্গে বিসিসিআই-এর এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই রিপোর্ট করেছে। ‘হার্দিকের ফিটনেস এখন ঠিক কোন জায়গায়, সেই ব্য়াপারে আমাদের কাছে কোনও আপডেট নেই। তবে আইপিএলে ওর খেলা নিয়ে বড় রকমের প্রশ্নচিহ্ণ রয়েছে।’
গত ১৯ অক্টোবর ভারত খেলেছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। পুণের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে শেষবার হার্দিককে দেশের জার্সিতে দেখা গিয়েছিল। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বল করার সময়ে হার্দিক চোট পেয়েছিলেন হাঁটুতে। লিটন দাস ড্রাইভ করেছিলেন হার্দিকের বলে। ডান পা বাড়িয়ে বল রুখতে গিয়েছিলেন হার্দিক। এরপরই তিনি চোট পান। ছুটে আসেন ফিজিয়ো। খেলা বন্ধ থাকে প্রায় পাঁচ মিনিট। ফিজিয়ো এসে হার্দিকের হাঁটুতে স্ট্র্যাপ বেঁধে দিয়েছিলেন। এরপর হার্দিককে পুণে থেকে বেঙ্গালুরুর জাতীয় অ্যাকাডেমিতে উড়িয়ে আনা হয়। ওখানে ইংল্যান্ডের বিশিষ্ট ডাক্তারও তাঁকে দেখেন। দেওয়া হয়েছিল ইঞ্জেকশনও। তবুও হার্দিককে আর বিশ্বকাপে মাঠে নামানো যায়নি। রোহিতরা লিগ পর্যায়ের শেষ দুই ম্য়াচ খেলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা (ইডেন গার্ডেন্স, ৫ নভেম্বর) ও নেদারল্যান্ডসের (বেঙ্গালুরু, ১২ নভেম্বর) বিরুদ্ধে। ইডেনে ভারত নামার আগেই জানা গিয়েছিল যে, আর পাওয়া যাবে না রোহিতকে।
মুম্বইয়ের হেড কোচ মাহেলা জয়বর্ধনে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘উত্তরাধিকার তৈরি করে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের দর্শন মেনেই, ভবিষ্যতের রাস্তা তৈরি করা হল। মুম্বই বরাবর অসাধারণ সব নেতাদের পেয়েছে। সচিন তেন্ডুলকর থেকে হরভজন সিং হয়ে রিকি পন্টিং ও রোহিত শর্মা। ভবিষ্যতের জন্য দলকে শক্তিশালী করার দিকে মুম্বই সবসময় নজর রেখেছে। এই দর্শন মেনেই এবার হার্দিক পান্ডিয়া আইপিএল চব্বিশে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক হচ্ছেন।’ রিকি পন্টিং থেকে রোহিতের হাতে উঠেছিল অধিনায়কত্বের ব্যাটন। রোহিতের নেতৃত্বে মুম্বই পাঁচবার আইপিএল সেরা হয়। এমএস ধোনির সঙ্গে যুগ্মভাবে রোহিত ক্রোড়পতি লিগের সফলতম অধিনায়ক। নেতা হিসেবে রোহিতের সঙ্গে মুম্বইয়ের ১০ বছরের সম্পর্ক শেষ হয়ে গিয়েছিল।