কনেপক্ষের ফোন বন্ধ! হাড় কাঁপানো রাতে বর দাঁড়িয়েই রইলেন কাটোয়া ফেরিঘাটে! শেষমেশ গেলেন থানায়

বিয়ের রীতি মেনে সবই করেছিলেন দু’জনে। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আইবুড়ো ভাত খাওয়া থেকে শুরু করে নান্দীমুখ পর্ব। এ পর্যন্ত সবই ঠিকঠাক ছিল। তাল কাটল বিয়ের দিন। ধুতি-পাঞ্জাবি, টোপর পরে বিয়ে করতে গেলেন বর। সঙ্গে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবেরাও ছিলেন। কনেপক্ষের কথা মতো তাঁরা পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় ভাগীরথীর ফেরিঘাটের কাছে অপেক্ষা করছিলেন। বাইরে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা তখন। দীর্ঘ ক্ষণ ওই ভাবে দাঁড়িয়ে থেকে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে বরপক্ষের। ফোন করা হয় কনে এবং তাঁর পরিবারের লোকেদের। কিন্তু ফোন বন্ধ। বর বুঝলেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন! এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি।

রবিবার রাতে কাটোয়ায় বিয়ে করতে গিয়েছিলেন নয়ন ঘোষ। তিনি নদিয়ায় কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙা-ফরিদপুরের বাসিন্দা। যে তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা, তিনি নয়নকে জানিয়েছিলেন, কাটোয়ায় এক আত্মীয়বাড়িতে তাঁদের বিয়ে হবে। সেই মতো রবিবার আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধব-সহ ১৫ জনকে সঙ্গে নিয়ে কাটোয়ার গোয়ালপাড়া ঘাটে পৌঁছন নয়ন। তাঁর অভিযোগ, সেখানে পৌঁছেই কনের বাড়িতে ফোন করা হয়। যত বারই ফোন করা হয়, তত বারই তাঁরা বলেন, ‘‘লোক যাচ্ছে।’’ এই ভাবে প্রায় তিন ঘণ্টা কেটে যায়। অধৈর্য হয়ে শেষ বার যখন ফোন করা হয় মেয়ের বাড়িতে, তখন দেখা যায়, সকলের ফোন বন্ধ। এর পরেই থানায় যান নয়ন।

নয়ন রাজস্থানের জয়পুরে সোনার গয়না তৈরির কাজ করেন। তিনি জানান, মুর্শিদাবাদের শক্তিপুরের বাসিন্দা সোমনাথ ঘোষ তাঁর সহকর্মী। তাঁর মাধ্যমেই বর্ধমানের দত্তপাড়া এলাকার ওই তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয়। সেখান থেকে প্রেম। বর্ধমান স্টেশনে মাঝেমধ্যেই দেখা করতেন দু’জনে। সেই তরুণীর কথা মতোই রবিবার বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিল। কিন্তু এই ভাবে প্রতারিত হতে হবে, তা স্বপ্নেও ভাবতে পারছেন না তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘কেন এটা হল, কিছুতেই বুঝতে পারছি না। পুলিশকে জানিয়েছি। তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.