গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে দাউদ ইব্রাহিম। করাচির একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তাঁকে। পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দাউদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করছে মুম্বই পুলিশও। তাঁরা দাউদের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলেও জানা গিয়েছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলিতে দাবি, করাচির হাসপাতালে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হয়েছে দাউদকে। হাসপাতালের যে অংশে তিনি আছেন, সেখানে আর কোনও রোগীকে রাখা হয়নি। কাউকে ধারেকাছে যেতেও দেওয়া হচ্ছে না। সূত্রের খবর, গত দু’দিন ধরে হাসপাতালে রয়েছেন দাউদ।
৬৫ বছরের দাউদ হঠাৎ কেন অসুস্থ হয়ে পড়লেন, তাঁর বয়সজনিত শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে কি না, সমাজমাধ্যমে তা নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, দাউদকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে। সেই কারণেই তিনি গুরুতর অসুস্থ। যদিও এই খবর নিশ্চিত করা হয়নি কোনও তরফে। পাক সংবাদমাধ্যমেও বিষপ্রয়োগের তথ্য নিয়ে জল্পনা রয়েছে। কর্তৃপক্ষের মুখে কুলুপ।
দীর্ঘ দিন ধরেই করাচিতে থাকেন দাউদ। কিছু দিন আগে জানা গিয়েছিল, পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর শীর্ষস্থানীয় একটি সাম্মানিক পদে দাউদকে বসানো হয়েছে। ফ্রি প্রেস জার্নালের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, পাক আইএসআইয়ের সহকারী ডিরেক্টর জেনারেল (এডিজি) হিসাবে দাউদকে আনা হয়েছে। পাকিস্তানের গুপ্তচর ব্যবস্থায় দাউদের অবদানের জন্য এই পদ তাঁকে দেওয়া হয়েছে।
মুম্বইয়ের পুলিশ কনস্টেবলের পুত্র দাউদ আশির দশকে ভারত থেকে পালিয়ে দুবাই যান। সেখান থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। শোনা যায়, ১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ মুম্বইয়ে যে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণ হয়েছিল, তার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন দাউদই। পাকিস্তান থেকে এই হামলা পরিচালনা করেছিলেন তিনি।
আমেরিকা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপুঞ্জ, সবার খাতাতেই ঘোষিত বিশ্বমানের জঙ্গি দাউদ। আল কায়েদা, তালিবানের সঙ্গেও তাঁর যোগ ছিল বলে অভিযোগ। কাজ করেছেন ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে। বিশ্ব জুড়ে নিষিদ্ধ মাদক পাচার চক্র চালান দাউদ। জঙ্গি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে রমরমিয়ে চলে সেই কারবার। সেই দাউদই এ বার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জল্পনা।