লোকসভার ভিতরে গ্যাস ক্যানিস্টার খুলে রং ছড়ানো ও সংসদের বাইরে একই কায়দায় সরকার-বিরোধী স্লোগান তোলার অভিযোগে ধৃত ললিত ঝায়ের সঙ্গে আরও এক বঙ্গতনয়ের যোগ প্রকাশ্যে এল। কলকাতার বিধাননগর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র নীলাক্ষ আইচের পর নদিয়ার রানাঘাটের বাসিন্দা সৌরভ চক্রবর্তী নামে এক যুবকের সঙ্গেও ললিতের যোগাযোগের কথা জানা গেল। শনিবার সৌরভ প্রকাশ্যে জানালেন, ঘটনার দিন ললিত তাঁকেও সংসদের বাইরে বিক্ষোভের ঘটনার ভিডিয়ো পাঠিয়েছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পাঠানো সেই ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে বলেছিলেন ললিত। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেছেন সৌরভ।
সৌরভই দাবি করেছেন, ললিতের সঙ্গে তাঁর বেশ কয়েক বার দেখা হয়েছিল। কখনও কফি হাউসে, কখনও কোনও পথসভায়— ‘সাংগঠনিক’ কাজকর্মের সূত্রেই তাঁর পরিচয়। তাঁর কথায়, “আমরা কফি হাউসে দেখা করেছিলাম কয়েক বার। দুটো পথসভাতেও গিয়েছিলাম। বন্ধু বলতে যা বোঝায়, তা নয়। তবে সাংগঠনিক কথা হতে। ১৪ মে আমাদের প্রথম সাক্ষাৎ। এর পর দু’একটা পথসভায় সাক্ষাৎ, এ পর্যন্তই।”
রানাঘাটের ওই যুবক জানান, তাঁদের দু’জনের মধ্যে মতাদর্শগত কিছু মিল ছিল। তাঁর মতোই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অনুরাগী ছিলেন ললিত। তাঁর কথায়, ‘‘সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করার চেষ্টা করছিলাম আমরা।’’ কিন্তু সৌরভের বক্তব্য, ললিত যে কাজ করেছেন, তার সঙ্গে তিনি একেবারেই সহমত নন। শুধু তা-ই নয়, ললিত যে দিল্লিতে গিয়ে এমন কাণ্ড ঘটাবেন, তা-ও তিনি জানতেন বলেই দাবি করেছেন সৌরভ। তাঁর দাবি, ১৩ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা বেজে ৪১ মিনিটে হোয়াটস্অ্যাপের একটি গ্রুপে ঘটনার ভিডিয়োটি পাঠিয়েছিলেন ললিত। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবেও ভিডিয়ো পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। সৌরভের কথায়, ‘‘পাঠিয়ে বলেছিল, ‘আমি প্রতিবাদ করছি, শেয়ার কোরো।’ আমি কিছু না বুঝেই শেয়ার করেছিলাম। ভিডিয়োটাতে বোঝাও যাচ্ছিল না যে, সেটা সংসদ ভবন চত্বরে বিক্ষোভ!’’ সংসদের ঘটনা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয় বলে জানিয়ে সৌরভ বলেন, “এটায় আমি সব সময় আপত্তি জানাব। ভগৎ সিংহ যে সময়ে করেছিলেন, সেই সময় পরিবেশ আলাদা ছিল। এখনকার পরিবেশ আলাদা।”