কংগ্রেস নেতার বাড়ি এবং অফিস থেকে পাওয়া টাকার পরিমাণ বেড়ে ৩৫১ কোটি! উঁচু হচ্ছে টাকার পাহাড়

ক্রমেই বেড়ে চলেছে ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডে আয়কর হানায় উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ। আরও উঁচু হচ্ছে টাকার পাহাড়! দু’রাজ্যে আয়কর হানায় রবিবার পর্যন্ত মোট ৩৫১ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে আয়কর দফতর সূত্রে খবর। মনে করা হচ্ছে, দেশে এর আগে কোনও আয়কর হানায় এক সঙ্গে এত কালো টাকা উদ্ধার হয়নি।

প্রসঙ্গত, উদ্ধার হওয়া ওই কোটি কোটি টাকার সঙ্গে নাম জড়িয়েছে কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ ধীরজ সাহুর। ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডে গত বুধবার থেকে আয়কর হানা শুরু হয়েছে। ওড়িশার একটি বড় মদ কারখানা থেকে প্রথমে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা উদ্ধার করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। সেই অর্থের উৎস সন্ধান করার সময় তদন্তকারীদের হাতে ধীরজের নাম উঠে আসে। তার পরই তাঁর বাড়িতে তল্লাশিতে যান আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। শনিবার রাঁচীতে তাঁর বাড়ি-সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় আয়কর দফতর। কংগ্রেস সাংসদের বাড়ি থেকে তিন ব্যাগ ভর্তি টাকা উদ্ধার হয়েছে। এ ছাড়াও মদ কারখানার এক শীর্ষ কর্তা বান্টি সাহুর বাড়ি থেকে টাকাভর্তি প্রায় ১৯টি ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে বলে আয়কর দফতর সূত্রে খবর।

আয়কর সূত্রে জানা গিয়েছে, বান্টির বাড়ি থেকে ২০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। তার মধ্যেই আবার প্রকাশ্যে আসে যে, ওড়িশার বৌধ জেলার যে মদ কারখানায় আয়কর হানা চলছে, তার কাছেই একটি জায়গা থেকে বিপুল পরিমাণ ছেঁড়া ৫০০ টাকার নোট উদ্ধার হয়েছে। স্থানীয়রাই সেই টাকা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। সব মিলিয়ে আয়কর আধিকারিকরা ১৭৬টি ব্যাগ উদ্ধার করেছেন। যার মধ্যে বেশির ভাগই বৌধ জেলার ওই মদ কারখানা থেকে উদ্ধার হয়েছে। আয়কর দফতর সূত্রে খবর, ধীরজের পরিবারের বেশ কিছু সদস্য মদ উত্পাদন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ওড়়িশায় তাঁর পরিবারে সদস্যদের এই ধরনের বেশ কয়েকটি কারখানা রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে আয়কর দফতর সূত্রে।

বোলাঙ্গিরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক ম্যানেজার ভগত বেহেরা সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন যে, উদ্ধার হওয়া ১৭৬টি ব্যাগের মধ্যে ১৪০টি ব্যাগের টাকা গোনার কাজ শেষ হয়েছে। সঠিক সময়ে গণনার কাজ শেষ করতে অতিরিক্ত মেশিন এবং ব্যাঙ্ক কর্মীদের কাজে লাগানো হয়েছে। ৫০ জন ব্যাঙ্ক কর্মী মোট ৪০টি মেশিন নিয়ে টাকা গোনার কাজ করছেন। টাকা গোনার সময় মেশিনগুলিতে যাতে কোনও প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা না দেয়, তাই আগেভাগেই ইঞ্জিনিয়ারদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত রাখা হয়েছে।

রবিবার এই সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ভিডিয়োগুলিতে দেখা গিয়েছে, আয়কর বিভাগের কর্মীরা কংগ্রেস সাংসদের বাড়ি এবং অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া নগদের বান্ডিলগুলি গুনে দেখছেন। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।

উল্লেখযোগ্য যে, দলের সাংসদের বাড়ি এবং অফিস থেকে টাকা উদ্ধার হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘‘কংগ্রেস কোন ভাবেই সাংসদ সাহুর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। শুধুমাত্র তিনিই ব্যাখ্যা দিতে পারেন যে, কী ভাবে এত টাকা তাঁর বাড়ি এবং অফিস থেকে উদ্ধার করা হল। তাঁর উচিত সেই ব্যাখ্যা দেওয়া।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.