অন্ধ্রপ্রদেশে কাজে গিয়ে রহস্য মৃত্যু বাঁকুড়ার শ্রমিকের

অন্ধপ্রদেশে কাজ করতে গিয়ে রহস্য জনক ভাবে মৃত্যু হলো এক শ্রমিকের। ওই শ্রমিকের বাড়ি বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় থানার শিরশা গ্রামে। মৃত শ্রমিকের নাম কিশোর মান (২৮)। তার অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রহস্য যেমন ঘনীভূত হচ্ছে, তেমনি বাঁকুড়া
জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যও দেখা দিয়েছে।

আজ কিশোর মানের মৃতদেহ শিরশা গ্রামে পৌঁছাতেই গোটা গ্রাম কান্নায় ভেঙে পড়ে। খবর পেয়ে বাড়িতে আসেন বড়জোড়ার প্রাক্তন বাম বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী। কিশোরের বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা মা ছাড়াও এক ভাই রয়েছে। কিশোরই ছিল পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি। জেলায় বা রাজ্যে কোনো কাজ না পেয়ে বেশ বেশ কিছুদিন ধরে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন। বর্তমানে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজমুন্ডিতে একটি কারখানায় ঠিকা শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন। কিশোরের বাবা জগন্নাথ মান ছেলের শোকে পাথর হয়ে গেছেন। তিনি কথা বলার মত অবস্থায় নেই।

প্রাক্তন বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী বলেন, করোনা কালে পরিযায়ী শ্রমিকদের বিভিষীকা মনে করলে রাতের ঘুম উড়ে যায়। তবু বাধ্য হয়ে বাঁকুড়ার যুবক ছেলেদের অন্য রাজ্যে যেতে হয়। কারণ এরাজ্যে কর্ম সংস্থানের কোনো উদ্যোগ নেই। তিনি বলেন, মাস খানেক আগে বাড়ি এসে কর্মস্থলে ফিরে যান কিশোর। ৬ ডিসেম্বর রাত ৮টা নাগাদ সেখানের পালসা স্টেশনের কাছে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে রেল পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। তার কাছে রাজমুন্ডি থেকে খড়্গপুর আসার ট্রেনের টিকিট পাওয়া গেছে। কিন্তু রাজমুন্ডি থেকে ২৫০ কিমি দূরে তার মৃতদেহ কীভাবে পাওয়া গেল তা নিয়ে রহস্যের দানা বেঁধেছে।

তিনি বলেন, ওই দিন কিশোর ফোন করে জানিয়েছিল, ৫ – ৬ জন তাকে ধাওয়া করেছে। কিছুক্ষণ পর ফের ফোন করে জানিয়েছিল, তারা পা দুটো কাটা গেছে। তোমরা আমাকে নিয়ে যাও। সেই শেষ কথা। ৭ তারিখ আত্মীয়রা অন্ধ্রপ্রদেশ গিয়ে রেল পুলিশের কাছে তার ফোন চাইলে সেটি তারা দেয়নি। থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও তা নেওয়া হয়নি। অভিযোগ, মৃতদেহ আনতে যাওয়ায় পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছ অন্ধ্র প্রশাসন। তার এক আত্মীয় বলেন, কিশোর কোথায় কাজ করতো তারও কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.