নীরবেই ফুটবলকে আলবিদা বললেন দেশের সর্বকালের অন্য়তম সেরা গোলকিপার সুব্রত পাল (Subrata Paul)। একসময়ে এশীয় ফুটবল তাঁকে ‘স্পাইডারম্য়ান’ নামেই চিনত তে-কাঠির নীচে অসাধারণ ক্ষীপ্রতার জন্য়। বঙ্গ ফুটবলে তাঁর পরিচয় যদিও সোদপুরের মিষ্টু নামেই। শুক্রবার সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন (AIFF) ও ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (ISL), সমাজমাধ্য়মের পাতায় সুব্রতর ছবি পোস্ট করে জানিয়ে দেয় যে, গ্লাভস জোড়া তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৩৬ বছরের ৬ ফুট ১ ইঞ্চির গোলকিপার। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত সুব্রত তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় কেরিয়ার সংক্রান্ত কোনও আপডেটই দেননি।
টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমির স্নাতক সুব্রত। তিনি কেরিয়ার শুরু করেন গঙ্গাপাড়ের শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব মোহনবাগানের জার্সিতেই। ২০০৪-০৭ পর্যন্ত সবুজ-মেরুনে খেলে, চলে আসেন লেসলি ক্লডিয়াস সরণিতে। গায়ে চাপান ইস্টবেঙ্গলের জার্সি। ২০০৭-০৯ পর্যন্ত সুব্রত পরনে ছিল লাল-হলুদ। এরপর তিনি পুণে, প্রয়াগ ইউনাইটেড হয়ে রাংদাজিয়েদ ইউনাইটেড ঘুরে ২০১৪ সালে চলে যান ডেনমার্কে। খেলেন ড্য়ানিশ ক্লাব এফসিভি ভাইকিংসের হয়ে। এরপর ঢুকে পড়েন আইএসএলের বৃত্তে, মুম্বই সিটি এফসি-তে সই করেন। ফের চলে আসেন আই-লিগে। খেলেন সালগাওকারে। সেখান থেকে ফের আইএসএল। ডিএসকে শিবাজিয়ান্স ও জামশেদপুরে খেলেন সুব্রত। তারপর হায়দরাবাদ ঘুরে ইস্ট-মোহন হয়েই শেষ করেন কেরিয়ার।
জাতীয় দলেও সুব্রত ছিলেন নিয়মিত খেলোয়াড়। অর্জুন পুরস্কার জয়ী গোলকিপার দেশের জার্সিতে এএফসি চ্য়ালেঞ্জ কাপ, সাফ চ্য়াম্পিয়নশিপ জেতেন। নেহেরু কাপ জিতেছেন তিনবার। ২০১৭ সালে শেষবার জিতেছেন ত্রিদেশীয় সিরিজ। সুব্রতর মুকুটে একাধিক পালক জুড়লেও, একটি বিতর্কই তাঁকে তাড়া করেছে আজীবন। সুব্রতর নাম জড়িয়ে গিয়েছে প্রয়াত ব্রাজিলীয় ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো জুনিয়রের মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে। ২০০৫ সালের ঘটনা আজও ভুলতে পারেননি ফুটবল সমর্থকরা। গোয়ার মারগাঁওতে ফেডারেশন কাপের ফাইনাল চলছিল, মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান-ডেম্পোর। ম্য়াচের ৭৮ মিনিটের ঘটনা। গোলের জন্য় আগুয়ান ডেম্পোর ফরোয়ার্ড জুনিয়রের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় সুব্রতর। তারপরেই মৃত্য়ুর কোলে ঢোলে পড়েন জুনিয়র। কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছিল সুব্রতকে। ওই অন্ধকার কাটিয়ে আলোয় ফেরেন সুব্রত। আপাতত তাঁর পাখির চোখ কোচিংয়ে।