বিবাদের বিষয়বস্তু
(i) অযোধ্যা বিরোধটি কোনও সাধারণ মন্দির-মসজিদ বিরোধ নয় কারণ শ্রী রামের জন্মের মন্দিরটি কখনোই সাধারণ আর পাঁচটি মন্দিরের মতো নয়!
(ii) এটি হলো ভগবান রামের জন্মভূমিকে পুনরুদ্ধার করার সংগ্রাম এবং এই অঞ্চলটি নিজেই একটি দৈবীস্বত্বায় পরিণত হয়েছে যার কোনো বিভাজন সম্ভব নয়। তাঁর জমিতে রামলালা বিরাজমান আছে – যার একটি আইনী সত্তা ‚ আইনের অধীনে স্বতন্ত্র পরিচয় এবং আইনী অধিকার এবং বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ভগবানর সম্পত্তির উপর অন্য কারও মালিকানার অধিকার থাকতে পারে না।
(iii) জন্মভূমিটি অ-বিনিময়যোগ্য। এটিকে অদলবদল করা, বিনিময় করা, বিক্রি করা বা দান করা যায় না!
(iv) মূল বিতর্কটি প্রায় ১৪৬০ বর্গক্ষেত্র (১২০৯.০২৬ বর্গ মিটার) জমি নিয়ে – যার দৈর্ঘ্য-প্রস্থ সর্বাধিক ১৪০ * ১০০ ফুট। ভারত সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণ করা ৭০ একর জমিটি এর থেকে আলাদা এবং সেটি ভারত সরকারের কাছে রয়েছে ‚ যার উপর আদালতে কোনও মামলা বিচারাধীন নয়।
(v) আদালতে বিবেচনাধীন পুরো অঞ্চলটিতেই রামালালা (শিশু রাম) বিরাজমান। এটি তার জন্মস্থান , আমোদ প্রোমোদের স্থান ‚ খেলার জায়গা এবং বিনোদনমূলক অঞ্চল। এই জায়গার তাৎপর্য বর্ণনা করে কয়েক হাজার বছর পূর্বে রচিত স্কন্দ পুরাণ বলেছে যে শ্রী রামের জন্মভূমির দর্শন (অনুভব করা / দেখা ) মুক্তি প্রদান করে।
(vi) যে কোনও সম্প্রদায়ের আরাধ্য দেবতার মন্দিরগুলি দেশের নানা জায়গায় নির্মিত হতেই পারে, অনেক জায়গায় মহান পুরুষদের মূর্তি স্থাপন করা যেতে পারে, তবে তাদের প্রকাশিত হওয়ার বা জন্ম নেওয়ার স্থানটি সবসময়ই এক জায়গায় থাকবে এবং এটি কখনও স্থানচ্যুত হতে বা অন্যস্থানে সরানো যেতে পারেনা। জন্মস্থানটি অপরিবর্তনীয়, স্থায়ী, অনড় ,ধ্রুব ‚ স্থির ,অপূরনীয় , অবিচ্ছিন্ন,সুনিশ্চিত ‚সন্দেহাতীত ‚ অনস্বীকার্য এবং কখনোই বাজেয়াপ্ত করা যায় না!
(vii) মুসলমানদের কাছে মক্কার মতোই হিন্দু দের কাছে অযোধ্যার গুরুত্ব! অযোধ্যায় নতুন কোনও মসজিদ বা স্মৃতিসৌধ কিংবা ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরি করা যাবে না, যা মানুষকে ১৫২৮ খ্রিস্টাব্দের রাজনীতিবিদ-জিহাদি কাজকর্ম এবং অপমানের কথাগুলি স্মরণ করিয়ে দেবে।
দ্বন্দ্ব ও আন্দোলনের ইতিহাস
(i) জন্মস্থান ফিরে পাওয়ার লড়াইটি ১৫২৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে চলছে (যেহেতু এই দিনেই হানাদার বাবর মন্দিরটি ভেঙে ফেলা এবং তার উপরে তিনটি গম্বুজযুক্ত জিহাদি কাঠামো তৈরীর নির্দেশ দেন )।
(ii) পুরো হিন্দু সমাজ অবিচ্ছিন্নভাবে এই লড়াই চালিয়ে আসছে। এই লড়াইয়ে অযোধ্যার সাধু সন্ততিরা এবং আশেপাশের অঞ্চলের রাজ-রাজরাদের বিশেষ অবদান ছিল।
(iii) ইতিহাসের পাতায় এই নিয়ে ৭৬ টি যুদ্ধের বিবরণ লিপিবদ্ধ করা আছে।
(iv) যুদ্ধের ইতিহাস গুলি এটাই প্রমাণ করে যে হিন্দুরা কখনওই এই জায়গার উপরে তাদের দাবী ছেড়ে দেয়নি।
(v) এই যুদ্ধ এবং সংগ্রামগুলি দেখায় যে মুসলিম হানাদার এবং তার বংশধরদের দ্বারা এই জায়গাটি দখল করার ইতিহাস কখনওই শান্তিপূর্ণ, ধারাবাহিক এবং নিরবচ্ছিন্ন ছিল না।
(vi) ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে নির্মোহী আখড়ার পক্ষ থেকে তৎকালীন সরকারের কাছে রাম জন্মভূমির বাইরের আঙ্গিনায় অবস্থিত রামচবুত্র (উত্থিত-প্ল্যাটফর্ম) এর উপরে কংক্রিটের দ্বারা খড়ের ছাউনিটি প্রতিস্থাপনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। ব্রিটিশ বিচারক কর্নেল এফআইএ চামিয়ার (ফৈজাবাদ জেলা জজ) এই আবেদন প্রত্যাখ্যান করলেও , তার রায়টিতে স্বীকার করেছেন যে “… এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে হিন্দুদের দ্বারা পবিত্র স্থানটিতে একটি মসজিদ তৈরি করা হয়েছে ………!
(vii)১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরে অনুষ্ঠিত হিন্দু সম্মেলনে‚ প্রাক্তন কংগ্রেস মন্ত্রী এবং বিধায়ক প্রয়াত দৌ দয়াল খান্না এই আহ্বান জানিয়েছিলেন রাম ভক্তরা যেন “অযোধ্যা, মথুরা এবং কাশীর স্থানগুলিকে মুক্ত করে হিন্দুস্তানের হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনে।”
(viii) 1984 সালের ৭ই এবং ৮ই এপ্রিল , নতুন দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সাধুদের একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল (প্রথম ধর্ম সংসদ )। এখানে শ্রীরাম জন্মভূমিকে মুক্ত করার সংকল্প নেওয়া হয়েছিল । এইভাবে , সন্ত ভ্রাতৃত্বের আদেশের ফলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ পাঁচ শতাব্দীর পুরানো সংগ্রামটির ৭৭ তম অধ্যায় টি শুরু করেছিলো।
(ix) প্রথমে ‚ জন্মস্থান ‚ সীতামারির রাম-জানকী রথ এর তালা খোলার ব্যাপারে জনসচেতনতা শিবির করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ১৯৮৪ এর ৭ই অক্টোবরে , রামজানকী রথটি অযোধ্যাতে পবিত্র সরয়ূ নদীর তীরে এসে পৌঁছায়। হাজার হাজার রাম ভক্ত সরয়ূর পবিত্র জল হাতে নিয়ে শ্রী রামভূমিকে মুক্ত করার শপথ নিয়েছিলেন।
(x) ১৯৮৫ সালের অক্টোবর থেকে ৬ টি রথের সাহায্যে উত্তর প্রদেশে পুনরায় জনসচেতনতা প্রচার শুরু হয়েছিল। ফলে, ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে শ্রী রামের জন্মস্থলে লাগানো তালাটি ১৯৮৬ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি আদালতের আদেশে খুলে দেওয়া হয়েছিল। রামলালার কাছে সর্বসাধারণের পূজা অর্চনা থামানোর জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হয়েছিল , তবে আদালত তা গ্রহণ করেনি।
(xi) এর পরে, ধারাবাহিক জনসচেতনতা প্রচারের কর্মসূচী নেওয়া হয়েছিল! শিলাপুজান (কাদামাটি, পাথর বা মার্বেলের ইটগুলিকে উৎসর্গ করা) কর্মসূচিগুলি প্রায় দেশজুড়ে প্রায় ৩০০‚০০০ টি গ্রামে আয়োজিত করা হয়েছিল । দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উৎসর্গ করা ইটগুলি এসে পৌঁছায় অযোধ্যাত । শ্রদ্ধেয় সাধু ও ঋষিদের উপস্থিতিতে একজন তফশিলী কর্মকর্তা শ্রী কামেশ্বর চৌপালের দ্বারা প্রথম ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। এই ঘটনাটি রাম ভক্তদের ঐক্যবদ্ধ শক্তির পাশাপাশি সামাজিক সম্প্রীতির জন্যও একটি চমৎকার উদাহরণ ছিলো।
(xii) সারা দেশে রাম জ্যোতি, রামচরণ পাদুকা পুজন, বিজয় মন্ত্রের মতো অনেক কর্মসূচিগুলি গণ জাগরণের দিকে দেশকে পরিচালিত করে।
xiii) ১৯৯০ সালের ২৪ শে জুন ‚ দেবোত্থান একাদশীর দিন হরিদ্বারে, কেন্দ্রীয় মার্গদর্শকের একটি সভায় ১৯৯০ এর ৩০ শে অক্টোবর অযোধ্যায় গিয়ে করসেবা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী পরিকল্পনাটি বানচাল করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে অযোধ্যার চারপাশে সমস্ত প্রবেশ পথে বেষ্টনী বসিয়ে ভক্তদের অযোধ্যায় আগত ভক্তদের আটকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি দর্পভরে ঘোষণা করেছিলেন যে ‘এমনকি কোনও পাখিও এখানে উড়তে সাহস করতে পারে না’। হিন্দু সমাজ এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে এবং হাজার হাজার মানুষ সমস্ত ধরণের দমনপীড়ন সত্ত্বেও অযোধ্যাতে পৌঁছায়। করসেবকরা নির্দিষ্ট সময়েই গম্বুজগুলিতে গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করে দেয়। তখন সেখানে পুলিশের গুলিবর্ষণ করলে করসেবকদের আত্মত্যাগের ঘটনা ঘটে । ২ রা নভেম্বর ‚১৯৯০ সালে সেই গুলিবর্ষণের ঘটনাটি অত্যন্ত সুপরিচিত । অবশেষে, সরকার হার মেনে নিয়ে সমস্ত করসেবকদের দর্শনের অনুমতি দেয় , আর একমাত্র তখনই করসেবকরা বাড়ি ফিরে যায়।
(xiv) দশদিন ধরে সত্যাগ্রহ চলেছিল। সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ অংশ নেওয়ার জন্যে আসতো। শহীদ কারসেবকদের দেহাবশেষ সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয় ও লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
স্বাধীন ভারতে শ্রী রাম জন্ম ভূমি সম্পর্কিত মামলার ইতিহাস
(i) ১৯২৯ সালের ২২-২৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে শ্রীরাম জন্মভূমিতে প্রভুর প্রকাশ ঘটে । আইন শৃঙ্খলার নামে প্রশাসন কাঠামোর দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলো। সাধারণ মানুষ যখন এই নিয়ে আপত্তি জানায়, আদালত তখন প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় তালা খুলে পুজো করার আদেশ দেয়। তারপর থেকে অনুষ্ঠানগুলি প্রতিদিন চলে আসছিলো । এমনকি আজও রামলালা একই জায়গায় বসে আছে এবং ধারাবাহিকভাবে পূজা হচ্ছে।
(ii) ১৯৫০ সালের জানুয়ারিতে গোন্ডার বাসিন্দা গোপাল সিংহ বিশারদ আদালতে মামলা করেন এই বলে যে: “আমি প্রভুর একজন ভক্ত! আমি প্রতিদিন দর্শনের জন্য আসি, তাই কোনও ব্যক্তি বা প্রশাসনের আমার দর্শন-পূজনে কোনও বাধা সৃষ্টি করা উচিত নয়। প্রশাসন জায়গাটি পরিচালনা করার জন্য একজন রিসিভার নিয়োগ করে।
(iii) ১৯৫৯ সালে, নির্মোহী আখড়স ফয়জাবাদের আদালতে মামলা দায়ের করে প্রার্থনা করেন যে সরকার কর্তৃক নিয়োযিত রিসিভারকে সরাতে হবে এবং এর পরিচালন ব্যবস্থা হস্তান্তরিত করতে হবে।
(iv) ১৯৬১ সালের ১৮ই ডিসেম্বর উত্তর প্রদেশের সুন্নি মুসলিম ওয়াকফ বোর্ড তাদের মামলা দায়ের করে তিন-গম্বুজযুক্ত কাঠামোটিকে একটি সরকারী মসজিদ হিসাবে ঘোষণা করার এবং এই কাঠামোটির ভিতরে উপাসনা বন্ধ করার দাবি জানায়।
(v) ১৯৮৯ সালের জুলাইয়ে রামালালার পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয় যেখানে নেটিভ ল্যান্ড জন্মভুমি তাদের সঙ্গ দেয়। এটি ছিলো এই স্থান টি নিয়ে করা চতুর্থ মামলা।
(vi) ১৯৮৯ সালে উপরোক্ত চারটি মামলা সম্মিলিত শুনানির জন্য নিম্ন আদালত থেকে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনৌ বেঞ্চএ স্থানান্তরিত করা হয় ।
(vii) জনসাধারণের ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা গুলি উপলব্ধি করতে সরকারের অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। ফলস্বরূপ, সমাজের সম্মিলিত অনুভূতিগুলি বিষ্ফোরিত হয় ৬ই ডিসেম্বর, ১৯৯২ এ ‚ যার ফলাফল তো সবাই কমবেশি জানে।
(viii) কাঠামোটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর তথাকথিত বিতর্কিত জমিটি, এবং এর চারপাশে ছড়িয়ে থাকা ৬৭ একর হিন্দুদের জমি ‚ ৭ই জানুয়ারী ১৯৯৩ তে (অ্যাক্ট ৩৩/১৯৯৩ ) ভারত সরকার অধিগ্রহণ করে । এর এক ইঞ্চি জমিও কোনও মুসলমানের সম্পত্তি ছিলো না।
(ix) উক্ত অধিগ্রহনের বিরুদ্ধে ইসমাইল ফারুকী নামে একজন মুসলিম ভদ্রলোক ১৯৯৩ সালে সুপ্রিম কোর্টে মসজিদের সাইটটি অধিগ্রহণ করা যাবে না বলে আবেদন জানান । ৭ই জানুয়ারী‚ ১৯৯৩ সালে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের কাছে একটি প্রশ্ন পাঠান সংবিধানের ১৪৩ অনুচ্ছেদের অধীনে বিবেচনা ও মতামতের জন্য।
প্রশ্নটি ছিল: “যেখানে রাম জন্মভূমি -বাবরি মাসজিদ (স্থাপনাটির ভেতরের এবং বাইরের অঞ্চল জুড়ে) নির্মাণের পূর্ব থেকেই একটি হিন্দু মন্দির বা অন্য যেকোনো হিন্দু ধর্মীয় স্থাপন রয়েছে ‚ স্থাপনাটি তাহলে কোথায় ছিলো? (ভাইড ১৯৯৪ (৬) এসসিসি পৃষ্ঠা পৃষ্ঠা ৩৬০ ইসমাইল ফারুকী বনাম ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া)
(x) অধিগ্রহনের বিরুদ্ধে আবেদন ও রাষ্ট্রপতির প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সুপ্রিম কোর্টে পাঁচ বিচারকের একটি সংবিধান বেঞ্চ গঠন করা হয়েছিল প্রায় 22 মাসের শুনানির পরে, সংবিধান বেঞ্চ রাষ্ট্রপতির প্রশ্নটির কোনো উত্তর না দিয়র শ্রদ্ধার সঙ্গে ফিরিয়ে দেয় এই লিখে যে স্থানটির ১৫২৮ খ্রিস্টাব্দের আগের পরিস্থিতি নিয়ে কেবলমাত্র বিজ্ঞান এবং প্রত্নতত্ত্বের ভিত্তিতে উত্তর দেওয়া যেতে পারে।
(xi) একই সময়ে, সুপ্রিম কোর্ট, একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ রায় দিয়ে, বিতর্কিত জমির বিষয়ে
অধিগ্রহণ বাতিল করে এবং জমি বিতর্ক সংক্রান্ত সমস্ত মামলা পুনরায় চালু করার নির্দেশ দেয় । এটি আরও বলেছে যে ভারত সরকার এই বিতর্কিত জমিটির ব্যাপারে স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রাখবে এবং এটি রক্ষা করবে। বিতর্কিত জমিটি বাদে ভারত সরকারের দ্বারা অধিকৃত ৬৭ একর জমির ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট অধিগ্রহনের সম্মতি দেয়। এই মামলা মোকদ্দমাটি ডঃ এম ইসমাইল ফারুকী ইত্যাদি, মোহাম্মদ ……….. বনাম ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া এবং অন্যান্য, নামে পরিচিত যা ১৯৯৪ সালের অক্টোবরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
(xii) ১৯৯৫ সালে, এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চে, তিন বিচারকের একটি বেঞ্চ শ্রী রাম জন্মভূমি সম্পর্কিত সমস্ত মামলা শুনানির জন্যে গঠিত হয়েছিল। ১৫’ বছর ধরে ট্রায়াল কোর্টের মতো বেঞ্চটি কাজ করে যায় ।
(xiii) ১৫২৮ খ্রিস্টাব্দের পূর্বের পরিস্থিতিটি জানার জন্য, লখনউ হাইকোর্ট এর মাননীয় পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ,০১.০৮.২০০৩ তারিখে কানাডিয়ান বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে শুনানি শেষে, সু-মোটো জিও-রেডিওলজিকাল জরিপের আদেশ দেয় (গ্রাউন্ড পেনেট্রেটিং র্যাডার জরিপ) এবং পরবর্তীকালে এর সত্যতা যাচাই করার জন্য ২৩.১০.২০০২ তারিখে জিপিআরএস রিপোর্টের ভিত্তিতে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া(এএসআই অফ জিওআই) এর দ্বারা খননকাজের আদেশ পাস হয়।
(xiv) জিও-রেডিওলজিকাল সার্ভে রিপোর্ট, এএসআই খনন প্রতিবেদন এবং ২০১০ এর ৩০শে সেপ্টেম্বর এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ মুসলিমদের তিন গম্বুজযুক্ত কাঠামো থাকার দাবি খারিজ করে দেয় । আসলে এটি ছিল গাজওয়া-ই-হিন্দের কর্মসূচীর অংশ হিসাবে প্রাক-বিদ্যমান হিন্দু মন্দিরে জেহাদ আরোপ করা।
(xv) ১৯৯১ সালের ৪ ঠা এপ্রিলে এক ঐতিহাসিক বিরাট হিন্দু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল নতুন দিল্লির বোট ক্লাবে। আনুমানিক ২৫ লক্ষ রাম ভক্ত এতে সরাসরি অংশ নেয় । বৈঠকের শেষ মুহুর্তের মধ্যেই উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদব পদত্যাগ করেন। ফলে শ্রী কল্যাণ সিংহ পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হন।
(xvi) আরও ঘোষণা করা হয়েছিল যে ১৯৯২ এর ৬ই ডিসেম্বর করসেবা করা হবে। নিরাপত্তা বাহিনী অযোধ্যার চারপাশে থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহ ঘোষণা করেছিলেন যে কোনো গুলি চালানো হবে না। । পূর্বের নৃশংসতার কারণে মানুষের সহানুভূতি রাম ভক্তদের দিকেই ছিলো এবং এইদিনই বাবরি মসজিদের কাঠামো ধসে পড়ে।
১৯৮৪ সাল থেকে শুরু হওয়া এই পর্বের জন্মভূমি আন্দোলনে লক্ষ লক্ষ রাম ভক্ত অংশ নিয়েছিলেন ।প্রতিটি প্রচারকার্যের সাথে সাথে রামভক্ত দের সংকল্প আরো দৃঢ় হয়ে উঠেছিল।
(xiv) জিও-রেডিওলজিকাল সার্ভে রিপোর্ট, এএসআই খনন প্রতিবেদন এবং ২০১০ এর ৩০শে সেপ্টেম্বর এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ মুসলিমদের তিন গম্বুজযুক্ত কাঠামো থাকার দাবি খারিজ করে দেয় । আসলে এটি ছিল গাজওয়া-ই-হিন্দের কর্মসূচীর অংশ হিসাবে প্রাক-বিদ্যমান হিন্দু মন্দিরে জেহাদ আরোপ করা। (xv) হাইকোর্ট যখন নির্মোহী আখড়া ও সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এর মামলা খারিজ করে দেওয়ার সময় জানায় যে তাদের কোনও ত্রাণ দেওয়া যাবেনা ।
অপরদিকে , এটি রামলালা বিরাজমানের মামলা মেনে নিয়েছে, তবে বিতর্কিত জমিটি তিনটি দলের মধ্যে সমান ভাবে ভাগ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় যা কখনোই ন্যায়সঙ্গত ছিল না। এই বেআইনী পদক্ষেপের কারণে, সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা জরুরি হয়ে পড়ে।
(xvi) ডিসেম্বর ২০১০ এ সমস্ত আপিল দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু জুলাই ২০১৭ পর্যন্ত কোনো আপিল শুনানির পালা আসেনি । আগস্ট ২০১৭ তে সুপ্রিম কোর্ট প্রথমবারের মতো এ মামলাটির উপর নজর দেয়।দেখা যায় যে হিন্দি, সংস্কৃত, ফার্সী, উর্দু এবং ফরাসী ভাষার নথিগুলি ইংরেজীতে অনুবাদ করার প্রয়োজন পড়েছে । উত্তরপ্রদেশ সরকার ৪ মাসের মধ্যে ১৪‚০০০ পৃষ্ঠা ইংরেজী অনুবাদ করা নথি হাতে পায়।
(xvii) সুপ্রিম কোর্টে আপিলের শুনানি চলাকালীন ২৯শে অক্টোবর, ২০১৮ তারিখে আদালত মন্তব্য করে যে তাদের অগ্রাধিকারে আরও অনেক মামলা রয়েছে । ফলে , বিচারকার্য জানুয়ারী ২০১৯ পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল tএকই সাথে আদালত আদেশ দেয় যে এই মামলার শুনানি হবে পাঁচ বিচারকের বেঞ্চ এর দ্বারা।
আদালত প্রক্রিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি
(i) ফেব্রুয়ারী ২০১৯ এ, আদালত চেয়েছিল যে সমস্ত পক্ষই পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে এই বিরোধের সমাধান খুঁজে নেয়। একটি আদেশের ভিত্তিতে ‚ আদালত একটি তিন সদস্যের মধ্যস্থতা কমিটি ঘোষণা করে। মধ্যস্থতা কমিটি ১৩ই মার্চ ২০১৯ থেকে ১লা আগস্ট ২০১৯ পর্যন্ত সবার সাথে আলাদা ভাবে সাতদফা আলোচনা করে। সমস্ত আলোচনা গোপন রাখা হয় । এই মধ্যস্থতা শেষ পর্যন্ত ১ লা আগস্ট, ২০১৯ এ অনিশ্চিত এবং ব্যর্থ হিসাবে শেষ হয়!
(ii) ২০১৯ এর ২২শে আগস্ট মধ্যস্থতা কমিটির মধ্যস্থতা সমাপ্তির চিঠি সুপ্রিম কোর্টের সংবিধান বেঞ্চের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছিল। ফলস্বরূপ, সংবিধান বেঞ্চ ৬ই আগস্ট‚ ২০১৯ থেকে নিয়মিত আপিলের শুনানি করার আদেশ দেয়। তারা এই আদেশও দেয় যে সপ্তাহে সোমবার থেকে শুক্রবার ৫ দিন সকাল ১০.৩০ থেকে বিকাল ৪.০০ টা পর্যন্ত শুনানি হবে । মৌখিকভাবে এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে বলা হয় যে তারা প্রয়োজন পড়লে শনিবারেও বা বিকাল ৪.০০ পরেও অতিরিক্ত ঘন্টার জন্য শুনানি করতে পারেন।
(iii) ৬ আগস্ট, ২০১৯ থেকে ১৬ ই অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৪০ দিনের তর্কবিতর্ক শোনা গিয়েছিল। শেষ ১১ টি ব্যবসায়িক দিনে তারা অতিরিক্ত সময় ধরে শুনানি চালিয়েছিলো।
(iv) এই বিতর্ক চলাকালীনই,২০১৯ এর সেপ্টেম্বরে বিষয়টি স্বতঃস্ফূর্তভাবে আদালতের সামনে আসে যে মুসলিম এবং হিন্দু দলগুলি আলাপ – আলোচনার দ্বারা সমাধানের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। আদালত আদেশ দিয়েছিলেন যে আলোচনার বিষয়ে আগ্রহী পক্ষরা মধ্যস্থতা কমিটির সামনে হাজির হলেও আদালতের কার্যক্রম আগে যেমন চলছিলো তেমন চলবে। অবিলম্বে রামলালা বিরাজমানের পক্ষ থেকে তা অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টারকে জানানো হয় যে তারা কোনও আলোচনার অংশ নেয়নি। কয়েকদিন পর, রামলালার সিনিয়র অ্যাডভোকেট বেঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে মৌখিকভাবে এই বিষয়টি তুলে ধরে। অক্টোবরে আবারও এই বিষয়ে আদালতে আলোড়ন সৃষ্টি হয় । প্রথমে ২ রা অক্টোবর, পরে আবার ১০ই অক্টোবর প্রধান বিচারপতিকে রামালালার পক্ষে লিখিতভাবে জানানো হয় যে তারা কোনো আলাপ আলোচনায় অংশ নেয়নি।
(v) ১৬ ই অক্টোবর সন্ধ্যাবেলায় সংবিধান বেঞ্চ শুনানি সম্পূর্ণ ঘোষণা করে । একই সঙ্গে, একটি লিখিত আদেশ দেয় যে সমস্ত পক্ষকে তিনদিনের মধ্যে বিকল্প ত্রান বা তাদের চাওয়া ত্রানের সামঞ্জস্যবিধানের ব্যাপারে তাদের অবস্থান লিখিত ভাবে জানাতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটিকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছিল। সারা পৃথিবী এখন বিশ্বের বৃহত্তম ঐতিহাসিক (৪৯১ বছর) এর রায়ের জন্য অপেক্ষা করে আছে। কেস। রায়টি খুব সম্ভবত ২০১৯ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আসতে পারে।
শ্রী রাম জন্ম ভূমি নিয়ে হিন্দু-মুসলিম আলোচনার ইতিহাস
(i) দেশের অনেক বুদ্ধিজীবীর মতামত ছিল যে বিষয়টির পারস্পরিক আলোচনা বা বিচার প্রক্রিয়ার দ্বারা সমাধান করা উচিৎ। তাই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সমস্ত মিডিয়ার মাধ্যমে আলোচনার চেষ্টা চালিয়েছিলো যাতে ভারতের মুসলিম নেতারা ভারতের হিন্দু দের অনুভূতি এবং বিশ্বাসকে জানতে ‚ বুঝতে এবং সম্মান করতে পারে। তবে বাস্তবে দেখা যায় এই দীর্ঘ সংগ্রামের অবসান ঘটাতে এবং পারস্পরিক আস্থা ও সম্প্রীতির নতুন যুগের সূচনা ঘটাতে মুসলিম নেতাদের কোনো আগ্রহ ছিলোনা।
(ii) প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শ্রী রাজীব গান্ধী, শ্রী বুটা সিংজি এবং এর সময়কালে মিসেস শিলা দীক্ষিত মধ্যস্থতা করতেন। দিল্লিতেই, তারা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটির কর্মকর্তাদের সাথে আনুষ্ঠানিক ভাবে একই টেবিলে মধ্যস্থতা চালিয়েছিলেন। একবার ভেন. স্বামী সত্যমিত্রানন্দ জি মহারাজও একটি মিটিং এ উপস্থিত ছিলেন! এটি ছিল একটি শুক্রবারের দুপুর – ইসলামিক সপ্তাহের ষষ্ঠ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন – এবং এটি ছিল জুম্মার নামাজ পড়ার সময়। যখন মুসলিম পক্ষের ভদ্রলোকরা নামাজ পড়ে ফিরে এলো ‚ ভেন. স্বামী সত্যমিত্রানন্দজী মহারাজ উঠে দাঁড়িয়ে তাঁর সন্ন্যাসীর পোশাকটি ছড়িয়ে দিয়ে বললেন: ‘সালাত (প্রার্থনা / নামাজ) এর পরে আসে যাকাত (দান করা) ! আমি আপনাদের কাছে শ্রী রামের জন্মস্থানকে ভিক্ষা হিসাবে প্রার্থনা করছি ! উত্তরে নামাজিরা মুখ বন্ধ রাখলেন ‚এবং এই নীরবতা তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সবাইকে যা জানানোর জানিয়ে দিলো। ফলে মহারাজশ্রী বসে পড়েন। ভারত সরকার তার শ্বেত পত্রে (অনুচ্ছেদ নং ২.৩ ) ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত রাম জন্মাভূমি / বাবরি মসজিদ সম্পর্কিত তথ্যটি নিম্নরূপে রেকর্ড করে : “আলোচনার সময় বিতর্কটির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে একটি বিষয় সামনে এসেছিল যে বিতর্কিতদের দখলে দেওয়া সাইটটিতে কোনও হিন্দু মন্দিরের উপস্থিতি ছিল কিনা এবং মসজিদ নির্মাণের জন্য বাবরের আদেশে এটি ভেঙে ফেলা হয়েছিল কিনা । মুসলিম সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে ‚এমনকি বিশিষ্ট কয়েকজন ঐতিহাসিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে এই দুটি ব্যাপারে কোনো ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই । নির্দিষ্ট কিছু মুসলিম নেতাদের দ্বারা এটিও বলা হয়েছিল যে যদি এই দাবিগুলি সত্যি প্রমাণিত হয় , তবে মুসলমানরা স্বেচ্ছায় হিন্দুদের হাতে এই বিতর্কিত মাজারটি হস্তান্তরিত করবে। ” স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং অল ইন্ডিয়া বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি (এআইবিএমএসি) এর ভেতর আলোচনা টাই কেন্দ্রীয় ইস্যু হয়ে উঠলো। (এই শ্বেতপত্রের ২.৩ অনুচ্ছেদটি ইসমাইল ফারুকীর রায়টিতে ২.৮ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা ভুলভাবে টাইপ করার ফলে ঘটেছে )
(iii) এই ‘স্বেচ্ছায় হস্তান্তর’ এর প্রতিশ্রুতিটি বিশেষভাবে করেছিলেন এআইবিএমএসি এর একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব প্রয়াত সৈয়দ শাহাবুদ্দিন কিন্তু এই প্রতিশ্রুতি কখনও সম্মানিত হয়ে ওঠেনি।
(iv) প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখর এর আমলে ভারত সরকারের উদ্যোগে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু হয়েছিল। তৎকালীন জিওআইয়ের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, শ্রী সুবোধ কান্ত সাহাই, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং রাজস্থানের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী যথাক্রমে মিঃ মুলায়ম সিং যাদব, মিঃ শারদ পাওয়ার এবং মিঃ ভৈরন সিং শেখাওয়াতও এই সভাগুলিতে উপস্থিত থাকতেন। ১ লা ডিসেম্বর ১৯৯০ এ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রতিনিধিরা
নিখিল ভারত বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটির সদস্য দের সাথে আলোচনা করেন। ভিএইচপির পক্ষে, শ্রী বিষ্ণু হরি ডালমিয়া, শ্রী বদ্রিপ্রসাদ তোশনিওয়াল, শ্রীশ্রীচন্দ্র দীক্ষিত, শ্রী মোরোপন্ত পিংলে, শ্রী কৌশলীকিশোর, শ্রী ভানুপ্রতাপ শুক্লা, শ্রী আচার্য গিরিরাজ কিশোর এবং শ্রী সূর্যকৃষ্ণ উপস্থিত ছিলেন।
(v) শ্রী মরোপন্ত পিংলে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে পরবর্তী সভায় উভয় পক্ষ থেকে তিন বা চারজন বিশেষজ্ঞ থাকবেন যাতে তারা নিজেদের পক্ষে সঠিক প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারে। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী, ভৈরোঁ সিং শেখাওয়াত বলেছিলেন যে উভয় পক্ষের বিশেষজ্ঞদের উচিৎ তাদের নিজেদের পক্ষের তথ্যপ্রমাণ বিনিময় এবং যাচাই করা ।
মিঃ জিলানী সাহেব বলেছিলেন যে কমিটির সদস্যদের প্রথমে এগুলো নিজেদের মধ্যে যাচাই করা উচিত ‚তারপর বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা চাইতে হবে। শ্রী পিংগল জি এই বিবাদের সমাধানের জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করার পরামর্শ দেন।
তখন যে সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া হয়েছিল তা হলো
01. উভয় পক্ষের উচিত তাদের নিজ নিজ প্রমাণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ২২ শে ডিসেম্বর, ১৯৯০ এর মধ্যে জমা দিতে হবে।
02. মাননীয় মন্ত্রী ২৫ শে ডিসেম্বর ‚১৯৯০ এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট পক্ষের প্রমাণগুলির অনুলিপি তৈরী করবে।
03. এই প্রমাণগুলির যাচাইয়ের পরে, উভয় পক্ষ আবার ১০ই জানুয়ারী, ১৯৯১ এ সকাল ১০.০০ টায় মিলিত হবে।
vi) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার একটি আনুষ্ঠানিক দলিল প্রস্তুত করা হয়েছিল ।
(vii) একে অপরের প্রমাণের উপর প্রশ্নোত্তর চালানো হয় জানুয়ারী ০৬‚ ১৯৯১ তে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটির দাবি খারিজ করে দেয় । যদিও ভিএইচপির প্রমাণগুলির বিপরীতে কোনো সাড়া দেওয়ার পরিবর্তে বাবরি কমিটি কিছু অতিরিক্ত প্রমাণের ফটোকপি দিয়ে তাদের অবস্থান আবার প্রমাণ করে । বাবরি কমিটি থেকে কোনও জবাব না আসায় ‚ সরকারের পক্ষে চুক্তির মূল বিষয় এবং মতভেদ গুলি খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। ১৯৯১ সালের ১০ই জানুয়ারি গুজরাত ভবনে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য প্রতিনিধিদের থেকে আলাদা ভাবে প্রফেসর বি.আর. গ্রোভার, অধ্যাপক দেবেন্দ্র স্বরূপ আগরওয়াল এবং ড.এস.পি.গুপ্ত বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষে বিশেষজ্ঞ হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন। এটা নির্ধারিত ছিল যে নথিগুলি উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলি ঐতিহাসিক, প্রত্নতাত্ত্বিক, রাজস্ব এবং আইন সম্বন্দে। এও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে উভয় পক্ষই তাদের বিশেষজ্ঞদের নাম বলবে যারা প্রাসঙ্গিক নথিগুলি অধ্যয়ন করবেন এবং তারপরে ১৯৯১ এর ২৪ ও ২৫ শে জানুয়ারি তারিখে মিলিত হবেন এবং ৫ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৯১ এর মধ্যে তাদের মতামত জানাবেন। তারপর উভয় পক্ষই এই বিশেষজ্ঞদের রিপোর্টগুলিতে পুনর্বিবেচনা করবে। বাবরি মসজিদ কমিটি হঠাৎ চালাকি করা শুরু করে। কমিটি তার বিশেষজ্ঞদের নাম দেয়নি। তারা বিশেষজ্ঞদের তাদের তালিকা ক্রমাগত পরিবর্তন করতে থাকে । ২৪ শে জানুয়ারী আসা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ১৯৯১ সালে চারজন বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটির নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন এবং ড.আর.এস. শর্মা, ডাঃ ডি এন এন ঝা, ডাঃ সুরজভান এবং ডাঃ এম.আথার আলী বিশেষজ্ঞ ছিলেন। ভিএইচপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি ® গুমান মালের লোধার মতো বিশিষ্ট আইনী ব্যক্তি ‚বিচারপতি ® দেবকী নন্দন আগরওয়াল, বিচারপতি ® রাম ধর্মবীর সেহগল এবং প্রবীণ অ্যাডভোকেট শ্রী বীরেন্দ্র কুমার সিং চৌধুরী, এছাড়াও ঐতিহাসিক হিসাবে উপস্থিত এবং রাজস্ব বিশেষজ্ঞরা হলেন ডঃ হর্ষনারায়ণ, প্রফেসর বি.আর. গ্রোভার, অধ্যাপক কে.এস. লাল, প্রফেসর বি.পি.সিনহা, প্রফেসর দেবেন্দ্র স্বরূপ আগরওয়াল এবং প্রত্নতত্ত্ববিদ ডাঃ এসপি গুপ্ত। একেবারে সভা শুরুর দিকে বাবরি কমিটির বিশেষজ্ঞরা বলেন যে তারা না অযোধ্যা পরিদর্শন করেছেনি না প্রমাণ গুলি অধ্যয়ন করেছেন। এবং তাদের এইজন্য কমপক্ষে ৬ সপ্তাহ প্রয়োজন! এটি ঘটেছিল ২৪ শে জানুয়ারী, ১৯৯১ এ।
(viii) বাবরি কমিটির বিশেষজ্ঞরা ২৫ শে জানুয়ারীর নির্ধারিত সভায় অনুপস্থিত থাকেন। ভিএইচপির প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞরা টানা দুই ঘন্টা তাদের জন্য অপেক্ষা করে। পরবর্তী সভাগুলিতেও একই ঘটনা ঘটতে থাকে । ফলে একসময় আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়।
(ix) 1992 সালের অক্টোবর- নভেম্বরেও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটির মধ্যে চিঠি আদানপ্রদান হয়। কিন্তু ফলাফল দাড়ায় শূন্য ।
(x) সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগে ২০১৯ এর মার্চে একটি তিন সদস্যের মধ্যস্থতা কমিটি গঠিত হয় ‚ যাদের মধ্যে ছিলেন
(১)সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ইব্রাহিম কলিফুল্লা (চেন্নাই)
(২) মাদ্রাজ হাইকোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট, শ্রীরাম পাঁচু
(3) আর্ট অফ লিভিং এর প্রতিষ্ঠাতা শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর্।
এক্ষেত্রে মোট সাত দফায় আলোচনা হয়েছিল আলোচনাগুলি গোপন রাখা হয়েছিল। মধ্যস্থতাকারীরা ১ লা আগস্ট ২০১৯ এ সবাইকে ধন্যবাদ জানান 2019, এবং ২রা আগস্ট, তারা তাদের মধ্যস্থতা সমাপ্তির চিঠিটি সুপ্রিম কোর্টের কাছে উপস্থাপন করে‚যদিও এই আলোচনার প্রচেষ্টাটি ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে!