চার রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলে বিজেপির ভরাডুবি হবে বলে রাজনৈতিক মহলে যে-অনুমানটা ঘুরে বেড়াচ্ছিল, আজ, রবিবার ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে দেখা যাচ্ছে, সেটা হয়তো কিছুটা অমূলকই ছিল। কিন্তু বিজেপির ফলাফল যা-ই হোক, অন্য একটা কথা শোনা যাচ্ছিল যে, আজ, রবিবার সন্ধেবেলা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেতে পারেন দিল্লির বিজেপি অফিসে। কিন্তু, বিজেপি পরাজিত হবে, আর সেই আবহে কি প্রধানমন্ত্রী দিল্লি অফিসে যাবেন? নিশ্চয়ই নিজের জন্য তেমন একটা চিত্রনাট্য-পরিস্থিতি মোদী ভাবেননি। আর সেজন্যই আরও বেশি করে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, এই চার রাজ্যের ফল বিজেপির অনুকূলেই থাকবে।
এখন থেকে ছ’মাস পরে লোকসভা নির্বাচন হবে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই যে ভোটে কংগ্রেস ক্ষমতা থেকে তার ১০ বছরের দীর্ঘ নির্বাসনের অবসান ঘটাতে চাইবে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় এবং তেলঙ্গানার গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এই রাজ্যগুলিতেও বিজেপিকে ছাড়িয়ে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির চেষ্টা করবে। অন্য দিকে, বিজেপি একটি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে বলে মনে করা যাচিছিল, যেখানে তারা উত্তর ভারতের জনসাধারণের স্বাভাবিক পছন্দ হিসেবেই নিজেদের ধরে রাখার চেষ্টাটা চালিয়ে যাবে।
তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের মধ্যে রয়েছে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তীসগঢ়। যার দুটি কংগ্রেস একটি বিজেপিশাসিত। বিজেপি শুধু মধ্যপ্রদেশে সরকার টিকিয়ে রাখার লড়াই নয় পাশাপাশি ছত্তীসগঢ় না হলেও অন্তত রাজস্থানে জয়ী হওয়ার জন্য একটি কঠিন লড়াই চালাবে, যে-লড়াই কঠিন চ্যালেঞ্জেরও মুখোমুখি।
রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তীসগঢ়ে মোট ৬৫টি লোকসভা আসন রয়েছে। বিজেপি তার মধ্যে ৬২টিতেই জিতেছিল। যদি বিজেপি এই তিনটি রাজ্যে ফের জয়লাভ করে, তবে তা প্রধানমন্ত্রী মোদীর ২০২৪ সালের নির্বাচনের জন্য একটি বুস্টার শট হবেই। আবার ফল যদি উল্টে হয়। মানে, যদি কংগ্রেসের জয় হয় তখন তা তাদের মনোবলই শুধু বাড়িয়ে দেবে না, পাশাপাশি তাদের দীর্ঘদিনের এই দাবিকেও ন্যায্যতা দেবে যে, মানুষ বিজেপির প্রতি বিরক্ত।
গতকালের আগে পর্যন্ত প্রকাশিত এগজিট পোলগুলি ইতিমধ্যে তেলঙ্গানায় কংগ্রেসের জন্য একটি ঐতিহাসিক ম্যান্ডেটের পূর্বাভাস দিয়েছে। যদি তা ঘটে তবে এটি কর্ণাটকের পরে দক্ষিণের দ্বিতীয় রাজ্য হবে, যেখানে তাঁরা একক দক্ষতায় ক্ষমতায় আসবে। কংগ্রেস তামিলনাড়ুতে ক্ষমতাসীন ডিএমকে-র সঙ্গে জোটে আছে।
রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানা ও ছত্তীসগঢ়ের ভোটগণনা আজ, রবিবার সকাল ৮টায় শুরু হয়েছে। সন্ধের মধ্যে ছবিটা পুরোপুরি পরিষ্কার হয়ে যাবে। আর সেই ফলে যদি বিজেপির জন্য যথেষ্ট অক্সিজেন থাকে, তবে সন্ধেবেলা রাজধানীর পার্টি অফিসে তাঁর পৌঁছনোটি নিঃসন্দেহে তাঁর দলের পক্ষে নতুন করে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।