বিশ্বকাপে রোহিত-কোহলিদের দলে ছিলেন বাসচালক থেকে অঙ্কের মাস্টারমশাইও, তাঁরা কারা?

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য রোহিত শর্মারা ১৫জন মাঠে লড়াই করেছিলেন। তাঁদের লড়াই মসৃণ করার দায়িত্বে ছিলেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়। তবে তিনি একা নন, তাঁর সহকারী ছিলেন ১৯ জন। তাঁদের কেউ বাসচালক আবার কেউ পর্বতারোহী, কেউ অঙ্কের মাস্টারমশাই। এক জন ছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ারও। কারা তাঁরা? কী কাজ ছিল তাঁদের?

১) পরশ মাম্বরে, বোলিং কোচ: ভারতীয় ক্রিকেট মহলে পরিচিত নাম মাম্বরে। ভারতের প্রাক্তন জোরে বোলার। আগে দ্রাবিড়ের সঙ্গে অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতীয় দলের বোলিং কোচের দায়িত্বও সামলে ছিলেন। মুম্বইয়ের ৫১ বছরের প্রাক্তন ক্রিকেটারের কোচিং দক্ষতায় আস্থাশীল দ্রাবিড়। বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন দ্রাবিড়ের অন্যতম প্রধান সহকারী। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতেও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে মাম্বরের। বোলারদের ভুল-ত্রুটি শুধরে দেওয়ার পাশাপাশি জোরে বোলারদের চাপ সামলানোর দায়িত্বও ছিল তাঁর ঘাড়ে।

২) বিক্রম রাঠৌর, ব্যাটিং কোচ: রাঠৌর এক সময় ছিলেন জাতীয় দলে দ্রাবিড়ের সতীর্থ। বলা যায়, কয়েকটি ম্যাচে রাঠৌর ব্যর্থ হওয়ার পর তাঁর জায়গাতেই জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন দ্রাবিড়। মিডল অর্ডার ব্যাটার হিসাবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যথেষ্ট সফল তিনি। রবি শাস্ত্রী ভারতীয় দলের কোচ থাকার সময় থেকেই রাঠৌর জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচের পদে রয়েছেন। বিরাট কোহলি অধিনায়ক থাকার সময় ৫৪ বছরের প্রাক্তন ব্যাটার ছিলেন জাতীয় নির্বাচক। অবসর নেওয়া পর কয়েক বছর ইংল্যান্ডে থাকতেন। পরে দেশে ফিরে এসে পঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশের রঞ্জি দলকে কোচিং করিয়েছেন। ব্যাটারদের দেখভাল করা ছাড়াও রাঠৌরের অন্যতম দায়িত্ব ছিল প্রতি দিনের অনুশীলনের সূচি তৈরি করা।

৩) টি দিলীপ, ফিল্ডিং কোচ: বিশ্বকাপের সময় দিলীপের নাম শুনেছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। প্রতিটি ম্যাচের পর দলের সেরা ফিল্ডারের নাম ঘোষণা করতেন তিনি। একেক দিন একেক ভাবে ঘোষণা করা হত সেরা ফিল্ডারের নাম। দেওয়া হত বিশেষ পুরস্কার। পাড়ায় টেনিস বলে ক্রিকেট খেলার বাইরে তাঁর আর কোনও ক্রিকেটীয় অভিজ্ঞতা নেই। ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্ক তাঁর কোচিং দিয়েই। প্রথমে হায়দরাবাদের একটি ছোটদের ক্রিকেট অ্যাকাডেমির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আইপিএলে ডেকান চার্জাসের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। সে সময় অস্ট্রেলিয়ার খ্যাতনামী বেসবল কোচ মাইক ইয়ংয়ের সঙ্গে কাজ করার পর থেকে ক্রিকেট মহলে উত্থান দিলীপের। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভারতীয় দলের প্রাক্তন ফিল্ডিং কোচ আর শ্রীধরের সহকারী হিসাবে কাজ করেও অনেক কিছু শিখেছেন। সে সময় তিনি দ্রাবিড়ের চোখে পড়ে যান। তার আগে অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতীয় দলের কোচ থাকার সময় ফিল্ডিং কোচ হিসাবে দ্রাবিড়ের আস্থাভাজন ছিলেন অভয় সিংহ। দ্রাবিড়ই তাঁকে জাতীয় দলে নিয়ে এসেছিলেন। তাঁর সব থেকে বড় সাফল্যে লোকেশ রাহুলকে দক্ষ উইকেটরক্ষক করে তোলা। সব থেকে মজার তথ্য, কোচিংকে পেশা করার আগে দিলীপ ছিলেন এক জন অঙ্কের শিক্ষক।

৪) সোহম দেশাই, স্ট্রেংথ এবং কন্ডিশনিং কোচ: ক্রিকেটের সঙ্গে তেমন অতীত সম্পর্ক নেই দেশাইয়েরও। ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত গুজরাত রঞ্জি দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। চেন্নাইয়ে শঙ্কর বসুর কাছে ১৮ মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন শরীরের শক্তি বৃদ্ধির ব্যাপারে। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির সঙ্গে চার বছর যুক্ত ছিলেন স্ট্রেন্থ এবং কন্ডিশনিং কোচ হিসাবে। কোভিড অতিমারীর সময় নিক ওয়েব দায়িত্ব ছেড়ে দিলে ভারতীয় দলের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান তিনি। দেশাইয়ের নেশা পাহাড়। তিনি আদতে এক জন পর্বতারোহী।

৫) এস রজনীকান্ত, রিহ্যাব মাস্টার: ছোট বয়সে ক্রিকেট খেলতেন। নিজেকে চোট মুক্ত করতে করতে রিহ্যাব বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছেন। যশপ্রীত বুমরা, হার্দিক পাণ্ড্য, লোকেশ রাহুল, শ্রেয়স আয়ার, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে কাজ করেছিলেন। মূলত তাঁদের সুপারিশ মেনেই রজনীকান্তকে জাতীয় দলে কাজ করার সুযোগ দেন দ্রাবিড়। তিনি অবশ্য কখনও জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালস এবং গুজরাত টাইটান্সের হয়ে কাজ করেছেন। রজনীকান্তের মূল দায়িত্ব ছিল ক্রিকেটারদের ফিটনেসের মান পর্যবেক্ষণ করা।

৬) হরি প্রসাদ মোহন, ভিডিয়ো এবং ডেটা বিশ্লেষক: ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য ক্রিকেট খেলা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। খেলার থেকে পড়াশোনাতেই বেশি গুরুত্ব দিত তাঁর পরিবার। ছিলেন বাঁহাতি জোরে বোলার। খেলা ছাড়তে হলেও ক্রিকেটের থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারেননি। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর ভারতীয় দলের ভিডিয়ো এবং ডেটা বিশ্লেষক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন হরি প্রসাদ। তার আগে তামিলনাড়ুর রঞ্জি দলের সঙ্গে কাজ করেছেন কয়েক মরসুম। সাধারণত দলের সঙ্গে দেখা যায় না তাঁকে। হোটেলে নিজের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন অধিকাংশ সময়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ল্যাপটপে প্রতিপক্ষ দলের ক্রিকেটারদের খেলা বিশ্লেষণ করতে পারেন। তাঁর বিশ্লেষণের দৃষ্টিতেই প্রতিপক্ষের ক্রিকেটারদের দেখতেন দ্রাবিড়েরা। ম্যাচের সময় ল্যাপটপ নিয়ে দ্রাবিড়, রাঠৌরদের পাশে সব সময় সজাগ থাকতেন তথ্য-প্রযুক্তিতে স্নাতক হরি প্রসাদ।

৭) হৃষিকেশ উপাধ্যায়, লজিস্টিক ম্যানেজার: গত আট বছর ধরে ভারতীয় ক্রিকেট দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন হৃষিকেশ। অনুরাগ ঠাকুর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি থাকার সময় তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছিল। ক্রিকেটার এবং অন্য দলের অন্যদের সব সুবিধা-অসুবিধার দিকে খেয়াল রাখেন তিনি। হিমাচল প্রদেশের বাসিন্দাই দলের সকলের বিমানের টিকিট, ম্যাচের টিকিটের ব্যবস্থা করেন। জার্সি, সরঞ্জামের দেখভাল করাও তাঁর কাজ। অর্থাৎ, ক্রিকেটার এবং অন্যদের যখন যা প্রয়োজন সে সব হাতের কাছে নিশ্চিত করাই দায়িত্ব হৃষিকেশের। আরও একটি দায়িত্ব আছে তাঁর। হৃষিকেশকে বলা হয় ভারতীয় দলের ডিজে। সাজঘরে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের পছন্দ মতো গান বা মিউজিকও চালান তিনি।

৮) অরুণ কানাড়ে, ম্যাসিওর: মুম্বইয়ের বাসিন্দা অরুণ আট বছরের বেশি সময় ধরে ভারতীয় দলের সাজঘরে রয়েছেন। আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছেন তাঁর। রোহিত এবং কোহলির ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসাবে পরিচিত তিনি। অন্য ক্রিকেটারদের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক বেশ ভাল। সহজে সবার সঙ্গে মিশতে পারেন। তাঁর প্রধান কাজ খেলা শুরুর আগে ক্রিকেটারদের পেশি শিথিল রাখতে সাহায্য করা। বিশেষ করে জোরে বোলারদের পেশির দিকে কড়া নজর রাখতে হয় তাঁকে। ভারতীয় দলের দীর্ঘ দিনের ম্যাসিওর রমেশ মানে (ক্রিকেটারদের প্রিয় মানে কাকা) দায়িত্ব ছাড়ার পর অরুণকে নিয়ে আসা হয়েছিল।

৯) রাজীব কুমার, পেশি বিশেষজ্ঞ: দ্রাবিড়ের অন্যতম সহকারী রাজীব। দুই ইনিংসের মাঝে এবং ম্যাচ শেষ হওয়ার পর তাঁর কাজ। বিশেষ করে জোরে বোলারদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁকে। মহম্মদ শামি, মহম্মদ সিরাজদের শক্ত হয়ে যাওয়া পেশি দ্রুত আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়াই তাঁর কাজ। চোটের সম্ভাবনা এড়াতেই দ্রুত পেশি জোরে বোলারদের বিভিন্ন পেশি স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসতে হয়। শামি, সিরাজদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মেশেন ভারতীয় দলের পেশি বিশেষজ্ঞ।

১০) আনন্দ সুব্রহ্মনিয়ম, মিডিয়া দলের সদস্য: ক্রিকেট নিয়ে তেমন আগ্রহই নেই আনন্দের। সময় পেলেই টেনিস দেখেন তিনি। টেনিসের ভক্ত তিনি। অথচ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি রয়েছেন রোহিত, কোহলিদের সাজঘরে। আনন্দের কাজ সাজঘরে বা অবসর সময় ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা। অর্থাৎ, ক্রিকেটারদের সঙ্গে ক্রিকেটপ্রেমীদের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম আনন্দ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের জন্যও কাজ করেন তিনি।

১১) মৌলিন পারিখ, মিডিয়া দলের সদস্য: ক্রীড়া সাংবাদিকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন পারিখ। এখন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্দর মহলে তাঁর অবাধ যাতায়াত। ছ’বছর ধরে তিনি দলের সঙ্গে আছেন। তাঁর মূল দায়িত্ব ম্যাচের আগে বা পরে সাংবাদিক বৈঠকের ব্যবস্থা করা। সাংবাদিক বৈঠক পরিচালনাও করেন তিনি। দুই ইনিংসের মাঝে বা ম্যাচের পর দলের কে বা কারা সম্প্রচারকারী চ্যানেলে কথা বলবেন, তাও ঠিক করেন পারিখ।

১২) রিজ়ওয়ান খান, চিকিৎসক, স্পোর্টস মেডিসিন বিশেষজ্ঞ: দিল্লি ক্যাপিটালস এবং গুজরাত টাইটান্সে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছেন রিজ়ওয়ানের। মুম্বইয়ে তাঁর ব্যক্তিগত ক্লিনিক রয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে তিনি যুক্ত ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহির অলিম্পিক্স দলের সঙ্গে। লন্ডন অলিম্পিক্সে রিজ়ওয়ানই ছিলেন আমিরশাহির দলের প্রধান স্পোর্টস মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। মুম্বই এবং লন্ডনের প্রথম সারির বেসরকারি হাসপাতালেও কাজ করেছেন এই চিকিৎসক।

১৩) অমিত সিদ্ধেশ্বর, স‌ংযোগ আধিকারিক: ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে ১৫ বছর ধরে যুক্ত অমিত। দল কোথায় কখন অনুশীলন করবে, কোন হোটেলে কেমন ঘরে থাকবে, ক্রিকেটারেরা কখন কী খাবেন— এই সব দেখভাল করেন অমিত। বলা যায়, দ্রাবিড় অনেকটাই নির্ভরশীল তাঁর উপর। তিনি আদতে ছিলেন এক জন বাদ্যযন্ত্রী। আইপিএলের সময় বিভিন্ন শহরে ফ্যান পার্কে বাজনা বাজাতেন।

১৪) কমলেশ জৈন, ফিজিয়ো: এখন যে খেলাতেই ফিজিয়োর ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা নতুন করে বলার দরকার নেই। ভারতীয় ক্রিকেট দলে কমলেশের গুরুত্বও ঠিক ততটাই। দ্রাবিড়ের অন্যতম সহকারী। ১০ বছর কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে যোদ দিয়েছেন ভারতীয় দলে।

১৫) যোগেশ পারমার, ওয়ার্কলোড বিশেষজ্ঞ: ভারতীয় দলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন যোগেশ। ক্রিকেটারদের কতটা পরিশ্রম হচ্ছে, তাঁদের উপর কতটা চাপ পড়ছে এই সব নখদর্পনে রাখতে হয় তাঁকে। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি, অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতীয় দলে কাজ করার পর রোহিত, কোহলিদের শিবিরে যোগ দিয়েছেন। ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্লাব এসেক্স এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সঙ্গেও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। বিশেষ করে দলের বোলারদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁকে। দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারের পরিশ্রম সংক্রান্ত সব তথ্য মজুত থাকে যোগেশের ট্যাবে।

১৬) বিপুল যাদব, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ: ভারতীয় সাজঘর, হোটেল নিরাপদ রাখার দায়িত্ব তাঁর। কোনও অবাঞ্ছিত ব্যক্তি বা জুয়াড়িরা যাতে দলের ধারে কাছে ঘেঁষতে না পারেন, তা নিশ্চিত করাই কাজ বিপুলের। সন্দেহজনক কিছু মনে হলেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এবং ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলকে খবর দেওয়ার দায়িত্বও বিপুলের। ভারতের দলে সিসি ক্যামেরার কাজ করেন তিনি।

১৭) দীনেশ চহাল, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ: দীনেশ হলেন বিপুলের সঙ্গী। দলের সকলকে সুরক্ষিত রাখতে সর্বদা সজাগ তিনি। কেউ হোটেলের বাইরে ব্যক্তিগত ভাবে যেতে চাইলে, দীনেশকে আগাম জানাতে হয়। কত ক্ষণ বাইরে থাকবেন তাও জানাতে হয় তাঁকে। দীনেশ হাসি মুখে অনুমতি দিয়ে দেন যদি না দ্রাবিড়ের বারন থাকে।

১৮) রাঘবীন্দ্র ডিভিজি, থ্রো ডাউন বিশেষজ্ঞ: কোহলির পছন্দের অনুশীলন সহকারী রাঘবীন্দ্র। দলের তিন জন অনুশীলন সহকারীর মধ্যে সব থেকে সিনিয়র তিনি। ২০১১ সালের অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে ভারতীয় দলের সঙ্গে রয়েছেন রাঘবীন্দ্র। দ্রাবিড়, সচিন তেন্ডুলকরদের সময়ও জাতীয় দলের থ্রো ডাউন বিশেষজ্ঞ হিসাবে কাজ করেছেন তিনি। ক্রিকেটে তাঁর হাতেখড়ি মুম্বইয়ে রমাকান্ত আচারেকরের অ্যাকাডেমিতে। সেই অর্থে তিনি সচিনের গুরুভাই।

১৯) নুয়ান সেনেভিরত্নে, অনুশীলন সহযোগী: কোচ দ্রাবিড়ের সংসারে একমাত্র বিদেশি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে শ্রীলঙ্কার এই নাগরিকের। ভারতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে শ্রীলঙ্কার জাতীয় দলের সঙ্গেও কাজ করেছেন প্রাক্তন বাঁহাতি জোরে বোলার। ক্রিকেটজীবন তেমন সাফল্যের না হলেও ডানহাতি ব্যাটারদের কাছে তাঁর বল পৌঁছায় এক কঠিন কোণ তৈরি করে। বাঁহাতি বোলারের বিরুদ্ধে রোহিত, কোহলিদের দুর্বলতা কাটাতে দ্রাবিড় তাঁকে খুঁজে নিয়ে এসেছেন। ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর কয়েক বছর কলম্বোর একটি স্কুলের বাস চালাতেন তিনি।

২০) দয়ানন্দ গরানি, থ্রো ডাউন বিশেষজ্ঞ: দ্রাবিড়ের সংসারে এক মাত্র বাঙালি। পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা দয়ানন্দ যোগ দিয়েছিলেন থ্রো ডাউন বিশেষজ্ঞ এবং ম্যাসিওর হিসাবে। তবে এখন তিনি কাজ করেন শুধু থ্রো ডাউন বিশেষজ্ঞ হিসাবে। ভারতীয় সাজঘরে অত্যন্ত জনপ্রিয় দয়ানন্দ। ২০২০-২১ মরসুমে অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে ভারতীয় দলের সঙ্গে আছেন বাংলার কৃষক পরিবারের সন্তান। তার আগে কাজ করেছেন আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি পঞ্জাব কিংসের হয়ে। কলকাতা ময়দানে ক্লাব পর্যায় ক্রিকেট খেলেছেন। ছিলেন জোরে বোলার। কলকাতা সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ করতেন এক সময়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.